সামনে উপজেলা নির্বাচন,এই উপজেলা নির্বাচনকে আমরা এক কথায় বলে থাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। অনেকেই বলে থাকবেন এটা তো জাতীয় নির্বাচন নয়, দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচন হচ্ছে না তাহলে কেন আমি নির্বাচনে দাঁড়াবো না? কিন্তু আসলে কি এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়ে থাকে? প্রত্যেকটা দল তাদের নিজস্ব প্রার্থী ঘোষণা করে। প্রত্যেকটা দল তাদের নিজেদের প্রার্থীকে বিজয় করার জন্য তার কর্মী সমর্থন নিয়ে মাঠে নামে ,তাহলে আমরা কিভাবে এটাকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হিসাবে মোটা দাগে কথা বলে এই নির্বাচনকে জায়েজ করার চেষ্টা করি? এটি শুধুমাত্র কাগজে-কলমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কিন্তু বাস্তবে এটা দলীয় নির্বাচনের চাইতে কোন অংশে কম নয়।
আমরা যারা বিএনপি’র আদর্শে বিশ্বাসী, আমরা যারা বিএনপি’র নীতি আদর্শ লালন করি তারা কিভাবে দলের বাহিরে গিয়ে নির্বাচন করার মতো দুঃসাহস দেখাই ? যেখানে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম এবং সর্বোচ্চ নেতা দেশ নায়ক তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন যে এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবেন না। তাহলে আমরা কেন তার কথা অমান্য করে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি? আমাদের পরিচয় কি ? আমাদের পরিচয় ধানের শীষের কর্মী, আমাদের পরিচয় বিএনপির কর্মী।
বিএনপি’র পরিচয় ছাড়া যারা নির্বাচন অংশগ্রহণ করছেন তাদের ব্যক্তি পরিচয় কতটুকু ? কতটুকু ব্যক্তি ইমেজ বা কতটুকু আপনাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে যে দলের বাহিরে গিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করবেন ? বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে নেতা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। যারাই আজকে বড় বড় কথা বলছি তারা সকলেই দলের নাম ব্যবহার করেই কথা বলছি। দল থেকে একবার সরে যান দেখবেন আপনাদের কয়টা লোক পাশে থাকে। দল ছাড়া বর্তমান যারা রাজনীতিতে আছে তাদের কোন মূল্য নেই। দল আছে বিধায় রাজনীতিতে আপনাদের মূল্য আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহু নেতা আছে যারা বিএনপি যখন করত সে সময় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ তাদের ভালোবাসতো। পরবর্তীতে বিএনপির সাথে বেঈমানি করেছে এখন তাদের রাস্তার কুকুর ও মূল্যায়ন করে না। যার জলজ্যান্ত উদাহরণ বিএনপির সাবেক মহাসচিব বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক বিএনপি নেতা মেজর মান্নান, সাবেক বিএনপি নেতা মরহুম উকিল আব্দুস সাত্তার এদেরকে এখন বাংলাদেশের মানুষ মীরজাফর হিসেবে জানে বাংলাদেশের মানুষ এখন তাদের সবচাইতে ঘৃণা করে।
দল একটা নীতি আদর্শের উপর চলে। কারো ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য দল কাউকে সাপোর্ট করবে সেটা যদি কেউ ভেবে থাকেন তাহলে তিনি পাগল না হয় উন্মাদ। সুতরাং নিজেদের এখনই শোধরানো উচিত।নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে বোঝা উচিত। তাহলে যারা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন তাদের হয়তোবা শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আর যদি অন্ধকারে থেকে যদি ঢিল মারার চেষ্টা করেন তাহলে আপনাদের জীবনে কোনদিন সূর্যের আলো আসবে না এটাই বাস্তবতা।
অনেকের মুখে একটি কমন কথা আমি শুনি যে, কর্মীদের বাঁচাতে হলে আমাকে নির্বাচন করতে হবে। আমি তাদেরকে প্রশ্ন করতে চাই, কিসের কর্মী ? কার কর্মীকে আপনি বাঁচাবেন? ধানের শীষের কর্মীকে বাঁচানোর জন্য আপনাকে নির্বাচন করতে হবে এটা কে বলেছে? যেসব কর্মীদের কথা বলছেন তারা তো ধানের শীষের কর্মী আপনার ব্যক্তিগত কর্মী কয়জন আছে? ধানের শীষের কর্মী বাঁচানোর জন্য বিএনপি’র নীতি নির্ধারক আছে, দলের চেয়ারম্যান আছে তিনারা খুব ভালো করেই জানেন যে,কিভাবে কর্মীদের বাঁচাতে হয়।
দলের নীতি নির্ধারকদের ওভারটেক করে নিজের মতো মনগড়া একটি যুক্তি দাঁড় করাবেন আর এটা জনগণ মেনে নেবে তা তো হতে পারে না । এসব ধাপ্পাবাজি কথা বন্ধ করুন। জনগণকে মূল্যায়ন করুন। জনগণের মনের আশা আকাক্সক্ষাকে মূল্যায়ন করুন। দলের আদর্শকে মূল্যায়ন করুন. অযথা দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা এটা অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। দল ভালো করে জানে কি সিদ্ধান্ত নিলে দলের মঙ্গল।
নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অযথা একটা যুক্তি দাঁড় করাবেন আর জনগণ সে যুক্তি মেনে নিবে এটা চিন্তা-ভাবনা করাও এক প্রকার বোকামি। তাই আসুন আমরা সকলের দল ও আদর্শের নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করি। ব্যক্তির সার্থকে বিসর্জন দিয়ে দল ও দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিন। তাহলে বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবে ,আপনিও পুরস্কৃত হবেন ।
বাংলাদেশের মানুষের কাছে একজন দলের আদর্শের সৈনিক হিসেবে থাকবেন আর যদি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আপনি সেই ডাস্টবিনের ময়লা নর্দমার কীটের মত পড়ে থাকবেন, মীরজাফর হিসেবে মানুষের মনে আপনার নাম লেখা থাকবে। এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের...