জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঁচ মাস পরই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলে জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। তবে অক্টোবরে তফসিল হবে জানালেও কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি।
সোমবার সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম।
তফসিলের সুনির্দিষ্ট তারিখের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অক্টোবরের কত তারিখে জাতীয় নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করা হবে সেটা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ২৯ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে।
দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২৯ জানুয়ারি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোটের আয়োজন করতে হবে।
চলতি বছর ১২ জানুয়ারি সরকারের চার বছর পূর্তির দিন জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে ভোট হবে বলে জানান। তবে পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা জানান, নির্বাচন হবে ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে।
এর মধ্যে প্রথমবারের মতো তফসিলের বিষয়ে একটি দিনক্ষণের ঘোষণা এলো নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
নির্বাচনকালীর নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট এবং সমমনারা।
বিএনপির সে দাবি পূরণ হচ্ছে, এমন কোনো নমুনা এখনও হয়নি। আর বিএনপি আগামী ভোটে আসবে এমন কোনো ঘোষণাও দেয়নি। দলটির কাছে এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তাদরে কারাবন্দী নেতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি।
এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের তফসিলের ঘোষণা এলো। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভোট যখনই হোক, আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। তবে কমিশনের তফসিলের বিষয়ে এখন কোনো বক্তব্য নেই। এটা আমাদের দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া হবে।’
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। গত ৩০ জানুয়ারি সিলেট থেকে এই প্রচারযুদ্ধ উদ্বোধন করেন তিনি। গঠন হয়েছে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও। তবে এই কমিটি এখনও আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেনি।
অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত জোট বলে যাচ্ছে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে আটক খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। অবশ্য খালেদা জিয়ার মুক্তিই একমাত্র দাবি না, এটাও জানিয়ে রাখছে তারা। দলের নেতারা বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকারের নেতৃত্ব থেকে শেখ হাসিনাকে সরে দাঁড়াতে হবে।
বিএনপি তফসিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভোটে সবার অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দিয়েছে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সকলের অংশগ্রহণে ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন না হলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই তফসিল ঘোষণার চেয়েও সকল রাজনৈতিক দলের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। তারা কী চায় সেটা আমলে নিয়ে সেই অনুযায়ী কাজ করা প্রয়োজন।’
‘নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া। সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা। সেই পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কি না সেটা মূল বিষয়। না হলে তো সমস্যা। তেমনটা না হলে নির্বাচন আবারও বিতর্কিত করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম জানান, এবার ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৫টি আসনে পরিবর্তন এনেছে কমিশন। তবে ঢাকার কোন আসনের সীমানা বদল হয়নি।
জনতার আলো/সোমবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.