জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: বৃষ্টিময় গ্রীষ্মের পর প্রখর রৌদ্রতাপের বর্ষা। অচেনা লাগছে প্রকৃতিকে। এর মধ্যে শ্রাবণের ‘ঘনঘোর বরিষা’ তো আসেইনি, মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে মানুষকে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। কখন নামবে বৃষ্টি, আকাশের পানে তাকিয়ে দুই চোখ। সকালে একবার কালো মেঘ এসেছিল বটে, তবে বৃষ্টি ঝরেনি।
দুপুরের পর ঝিরঝিরে যে বৃষ্টি নেমেছে, তাতে ভেজেনি মাটি, ভেজেনি মন। যদিও আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে দিচ্ছে দুঃসহ পরিস্থিতি অবসানের আভাস। দুই একদিনের মধ্যেই আসছে ‘ঝর ঝর মুখর বাদল দিন’।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে বৃষ্টি কম হচ্ছে। যার কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপদাহ রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দুই একদিনের মধ্যেই এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।’
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, সন্দ্বীপ ও সীতাকুণ্ড অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ সমুহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়া ও বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথা মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন. ‘উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকা একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা মাঝারি আকারে বিরাজমান।’
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা বন্দরসহ উপকূলী অঞ্চলসমূহকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে যেতে বলা হয়েছে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকা ছিল এ পর্যন্ত বছরের সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন। এদিন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আজ ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রংপুরে ৩৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দিনাজপুরে ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজারহাটে ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বদলগাছী ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ডিমলায় ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তেঁতুলিয়া ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, খুলনায় ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যশোরে ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বরিশালে ৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সিলেট ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অর্থাৎ আজ দেশে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত সিলেট। এই শহরে নির্বাচনী উত্তাপ ছাড়িয়ে আলোচনায় প্রকৃতির উত্তাপ।
প্রখর তাপ এবং ভ্যাপসা গরমে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাচ্ছে না কেউ। বেলা বাড়ার সঙ্গে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতিও দেখা গেছে কম।
গরমে বেড়েছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি। শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধসহ শিশুরা।
জনতার আলো/শুক্রবার, ২০ জুলাই ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.