জনতার আলো, এম. আরিফুর সাদনান, বিশেষ প্রতিনিধি : আজ পবিত্র শবে বরাত। মহিমান্বিত রজনী। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এই রাত অতিবাহিত করবেন। মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমানরা বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করবেন।
সৌভাগ্যের এ রজনীতে রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মুসলমানরা নামাজ ছাড়াও নফল রোজা রাখেন। বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে মসজিদে সারা রাত চলে ইবাদত-বন্দেগি।
মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায় বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া খায়ের করবেন।
শব-ই-বরাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামে অভিহিত করা হয়। ‘লাইলাতু’ একটি আরবি শব্দ, আর ‘শব’ শব্দটি ফারসি। দুইটি শব্দের অর্থই হলো রাত। অপর পক্ষে’ ’বারাআত’ শব্দের অর্থ হলো- নাজাত, নিষ্কৃতি বা মুক্তি। এ রাতে বান্দারা মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে মার্জনা লাভ করে থাকেন। এ কারণে এ রাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা শব-ই-বরাত বলা হয়। শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে পবিত্র শব-ই-বরাত পালিত হয়।
হাদীস শরীফে এটাকে লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান বা মধ্য শাবানের রাত্রি নামে অভিহিত করা হয়েছে। এর পক্ষকাল পরেই আসবে রহমত বরকত নাজাতের মাহে রমজান। এ কারণে এটাকে বলা হয় রমজানের মুয়াজ্জিন।
লাইলাতুল বারাআত মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের পূর্বপ্রস্তুতিস্বরূপ। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী বিশ্বকোষ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, “ইরান ও ভারতীয় উপমহাদেশে এ মাসের একটি রজনীকে ‘শব-ই-বরাত’ বলা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোন কোন দেশের কোন কোন এলাকায় শব-ই বরাত ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। আরববাসীরা এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’বলেন।
সৌভাগ্যের এ রজনীতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মুসলমানরা কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ ও বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। এ উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষেরা নফল রোজাও পালন করেন।
বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে মসজিদে রাতভর চলবে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল ও অন্যান্য এবাদত-বন্দেগি।
মুসলমানদের বিশ্বাস, মহিমান্বিত এই রাতে মহান আল্লাহতায়ালা মানুষের ভাগ্য অর্থাৎ তার নতুন বছরের ‘রিজিক’ নির্ধারণ করে থাকেন।
রাতব্যাপী এবাদত, বন্দেগি, জিকির ছাড়াও এই পবিত্র রাতে মুসলমানরা মৃত পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনসহ প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করে থাকেন। তাই এ রাতে কবরস্থানগুলোতেও মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাবে।
মহিমান্বিত এ রজনী ভাবগম্ভীর পরিবেশের মধ্য দিয়ে পালনের লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, হামদ, নাত, নফল ও তাহাজ্জুদের নামাজ এবং আখেরি মোনাজাত।
সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে ‘শবে বরাতের ফযিলত’নিয়ে আলোচনা করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দীন কাসেম। এরপর বয়ান করবেন মাওলানা হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী। শবে বরাত ও রমযানের তাৎপর্য নিয়ে ওয়াজ করবেন ঢাকার মিরপুরে জামিয়া আরাবিয়ার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুয্যামান।
ফজরের নামাযের পর আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মোনাজাত পরিচালনা করবেন।
পবিত্র শবে বরাত সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে ঢাকা নগরীতে আতশবাজি, পটকা ফাটানো এবং যে কোনো ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
জনতার আলো/মঙ্গলবার, ০১ মে ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.