জনতার আলো, স্টাফ রিপোর্টার: হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড় থেকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসা জলরাশি স্থলভাগ অতিক্রম করার সময় নদী নামে পরিচিত হয়।নদীর উৎসমূল সাধারণত একটি সু-উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল।
বলা হয়ে থাকে হাজার নদীর দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু আমাদের বেশির ভাগ নদী আজ মৃতপ্রায়। জানা যায়, এক সময়ে বাংলাদেশে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ১১শ’ নদী ছিল। বর্তমানে আছে ৪০৫টি। নদী না বাঁচলে বাঁচবে না বাংলাদেশ।
পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতাগুলো নদীকেন্দ্রিক। আমাদের সভ্যতা, সমাজ, অর্থনীতি, জীবনব্যবস্থা প্রাচীনকাল থেকেই নদীভিত্তিক। নদীকে কেন্দ্র করেই আমাদের বৃদ্ধি ও বিকাশ। নদীই আমাদের জাতির প্রাণশক্তি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিদ্যমান সভ্যতার ধারক ও বাহক।
আজ ‘বিশ্ব নদী দিবস’। নদী সম্পর্কে সচেতনতা বাড়তে বিশ্বব্যাপী বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ রোববার দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে ২০১০ সাল থেকে।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উদ্যোগে আজ বিশ্ব নদী দিবস পালন করা হচ্ছে এবং দিবসটির সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশে এটিকে জাতীয় নদী রক্ষা দিবস হিসেবে উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশের আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে নদী সুরক্ষা খুবই জরুরি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের নদীগুলো আজ বহুমুখী সমস্যার সম্মুখীন। নদী ও নদীর তীরভূমি, ফোরশোর অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু নদী ভরাট, নাব্যতাহীনতা এবং দখল, দূষণের কারণে ইতিমধ্যে মৃত ও বিলুপ্তপ্রায়। জীববৈচিত্র্য, নদীর পানি ও পরিবেশ ক্রমান্বয়ে দূষিত ও নষ্ট হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নদীর অবৈধ দখল, দূষণ, পরিবেশ দূষণ, অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে কমিশনকে কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।’
প্রদত্ত বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নাব্যতাহীনতা এবং নদী-সম্পদের অপব্যবহারের কারণে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নদী বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এজন্য বর্তমানে আমাদের নদ-নদী ও জলাশয় রক্ষা করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে ৪০৫টি নদ-নদী ও ৫৭টি আন্তঃদেশীয় সংযোগ নদী রয়েছে। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে আমাদের নদ-নদী ও জলাশয় ক্রমশ দূষণের কবলে নিপতিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ শীর্ষক একটি শতবর্ষী ও সামগ্রিক কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। নদীর অবৈধ দখল, দূষণ, পরিবেশ দূষণ, অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নৌপরিবহণযোগ্য গড়ে তোলাসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন-২০১৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে।’
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন সময়োপযোগী ও উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের সকল নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয় ও জলাধার দখল ও দূষণ থেকে মুক্ত করে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জনতার আলো/রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.