জনতার আলো, মাহবুবুজ্জামান সেতু, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার খাস খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের অভিভাবকরা ওই শিক্ষককে অনত্র বদলীর দাবীতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বিষা ইউনিয়নের খাস খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনর্থক শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারপিটের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় প ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের শ্রেণী কক্ষের জানালায় থুতু ফেলা ছিল। থুতু পরিষ্কার করার জন্য প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলাম পাঁচ মিনিটের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন এবং কে থুতু ফেলেছে তা বলার জন্য বলা হয়। তবে কে থুতু ফেলেছে তা শিক্ষার্থীরা জানেনা বলে জানিয়ে দেয়।
প্রধান শিক্ষক পাঁচ মিনিট পরে এসে দেখেন থুতু পরিস্কার হয়নি। রাগের বসে তিনি বেত (লাঠি) দিয়ে পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পিঠে ও পাছার উপর বেধড়ক পিটান। এতে শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান, জিসান আলী, আরিফুল ইসলাম, রেদোয়ান হক, লামইয়া, রিতি খাতুন, ফাতেমা খাতুন, বিথি খাতুন, রুমা খাতুন, যুথি খাতুনসহ কয়েকজন আহত হয়।
স্কুল ছুটির পর তারা বাড়ীতে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের অভিভাবকদের ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর অভিভবাকরা পল্লী চিকিৎসক দিয়ে তাদের চিকিৎসা করান।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আহত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ওই শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অনত্র বদলীর দাবীতে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে।
ইতিপূর্বে ওই প্রধান শিক্ষক পঞ্চম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতহানীর ঘটনা ঘটান। সব মিলিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আহত শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের মধ্য থেকে কেউ জানালায় থুতু ফেলেনি। আর ফেললে তো আমরা আগেই স্যারকে বলে দিতাম। কিন্তু তারপরও স্যার আমাদের পিটিয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসানের বাবা আবু মন্ডল বলেন, ছেলেটাকে এভাবে নির্যাতন করা মোটেও ঠিক হয়নি। বাড়িতে যাওয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি। সেইসাথে তাকে অনত্র বদলী করা হোক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলাম বলেন, বাচ্চারা জানালায় ময়লা ফেলেছিল। বলার পরও তারা পরিস্কার করেনি। এজন্য একটু শাসন করা হয়েছে। তবে বুধবার স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান এ বিষয়টি মিমাংশা করে দেন।
আত্রাই উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে তদন্তে রিপোর্ট করার জন্য স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এটা বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে পাঠানো হবে।
জনতার আলো/বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.