জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: নদীর পলিমাটি দিয়ে জন্ম হয়েছে আমাদের এই বাংলাদেশের। মায়ের মতই প্রতিদিন নদী এই দেশের ভুমি-প্রকৃতি, গাছ-পালা, তৃণ-গুল্ম, পশু-পাখী, পোকা-মাকড়, অনুজীব এক কথায় সকল কিছুকে প্রতিপালন করছে। নদী আমাদের ব্যক্তিগত, জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের সকল প্রকার ব্যবসা-বানিজ্য, উন্নয়ন, চলাচল, পরিবহন, অর্থনীতি, রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্য, গান-সংস্কৃতির মূল চালিকা শক্তি। তাই নদী যদি বিনষ্ট হয় তা হলে আমরাও ধ্বংসের দিকে ধাবিত হব। নদী বাচঁলে দেশ বাচঁবে, দেশের মানুষ বাচঁবে তাই দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় আমাদের চিন্তা-ভাবনায়, সমাজনীতি, রাজনীতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় নদীকে প্রাধান্য দিতে হবে সবার আগে। দেশব্যাপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, প্রার্থীগণ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের প্রচারণা করবেন নিজের পক্ষে ভোট টানার জন্য। নদীর পক্ষে গণ জাগরন সৃষ্টি করে প্রার্থীদের থেকে নদী রক্ষার প্রতিশ্রুতি নিতে হবে।
আজ ১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, সকাল ১০:৩০ টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে । নদী রক্ষা জোট এর উদ্যোগে “আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছে নদী রক্ষার প্রতিশ্রুতি চাই” – দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
নদী রক্ষা জোটের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ এর সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য দেন নদী রক্ষা জোটের আহবায়ক মিহির বিশ্বাস, যুগ্ন আহবায়ক আমির হাসান মাসুদ, সদস্য সচিব সুমন শামস, স্বচেতন নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি জি.এম রোস্তম খান, পশ্চিম রসুলপুর ওয়েলফেয়ার সোসাইটিরর সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম মাতিন, নোঙর এর সাধারন সম্পাদক আমিনুল হক চৌধুরী, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সাধারন সম্পাদক ফারুক হোসেন, স্বপ্নের সিড়ি সমাজকল্যান সংস্থার সভাপতি উম্মে সালমা, ইঞ্জিনিয়ার জহুরুল ইসলাম, সৃষ্টি সামাজিক সংস্থার সভাপতি নাজিম উদ্দিন, এসওপিডির চেয়ারম্যান এনামুল হক, সাংবাদিক শেখ এ সবুর, একতা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম সরকার, ষোল আনা বাঙালির চেয়ারম্যান আর আই শেখর, বাংলাদেশ জনতার সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ চন্দ্র দাস, অরুনোদয়ের তরুণ দলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবু, নোঙর এর সদস্য কে. এন ঈস্পিতা, সরকার সজিব, আলতাফ হোসেন প্রমূখ।
বক্তার বলেন, নদীকে কেন্দ্র করে এদেশের শিল্প, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, সভ্যতা, সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। অথচ নানা কারণে দেশের নদীগুলো মৃতপ্রায়। বাংলাদেশের অর্থনীতি যেহেতু নদীকেন্দ্রিক, তাই নদী মরে গেলে দেশের অর্থনীতিও মরে যাবে। দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের প্রকৃতি-পরিবেশ-নদী-অর্থনীতি ও ভবিষ্যত উন্নয়নের স্বার্থে নদীর পাড় নদীকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। এই নদী রক্ষা আন্দোলনে সফল হতে হলে আমাদের নদী বান্ধব নীতি ও কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। কারণ এটিই হচ্ছে সারা দেশের নদ-নদী জলাশয় তথা পরিবেশ ও অস্তিত্ব রক্ষার মূল রক্ষা কবজ। আমরা নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগণ, যে যেখানে আছি, প্রতিজ্ঞা করি যে, নদীকে রক্ষার জন্যে কাজ করবো, নদীকে দূষিত করবো না এবং নদীকে যারা দূষিত করছে, দেশ ও জনগণের স্বার্থে সম্মিলিতভাবে আমরা তাদের প্রতিরোধ করবো। নদী রক্ষায় শুধু প্রকল্প গ্রহণ করলেই হবে না, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। যে মানুষদের উদ্দেশ্য করে প্রকল্প নেওয়া হয় তাদের স্বার্থ আসলেই সংরক্ষণ হচ্ছে কি-না,তা যাচাই করতে হবে। নদী রক্ষায় নীতি ও আইন রয়েছে। এসব নীতি ও আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি পানি ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে। নদীকে স্বাভাবিকভাবে চলতে দিতে হবে। নদী দখল ও নদীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নদী রক্ষা আন্দোলনে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। অস্তিত্বের প্রশ্নে নদীকে রক্ষা করতে হবে। নদীতীরবর্তী দুই কোটি মানুষকে বাদ দিয়ে কোনো উন্নতি হবে না। তাই কোনো উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করতে হলে এসব মানুষের স্বার্থকে বিবেচনা করেই করতে হবে। নদী ভরাট বেড়েই যাচ্ছে, কিন্তু ড্রেজিং হচ্ছে না। প্রকৃতিকে অত্যাচার করলে একদিন প্রকৃতিও প্রতিশোধ নেবে। যেহেতু নদীই এদেশের অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যত তাই আসন্য নির্বাচনে সকল দলের ইশতেহারে নদী রক্ষার বিষয়টি যুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
জনতার আলো/শনিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.