জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১। বাঙালি জাতির কাছে এক বিস্ময়ের নাম। বিশ্ব রাজনীতির এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস। এর প্রতিটি ক্ষণ যেন ধ্বংস আর সৃষ্টির একেকটি পাণ্ডুলিপি। ১৯৭১ সালে আগুনের লেলিহান শিখায় যখন গোটা পূর্ব পাকিস্তান পুড়ে ছাই হচ্ছিল, ঠিক তখনই নতুনের কেতন উড়িয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি ভূখণ্ড জন্ম নেয়। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রতি মুহূর্ত যেন ‘বাংলাদেশ’ সৃষ্টির কথা বলে। ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার সাক্ষর বিজয়ের মাসের প্রথম দিন আজ।
মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনগুলো প্রতিবছর দিনটিকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসাবে পালন করে থাকে। এবারও তারা দিনটি পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক রাজনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে।
বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।
বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হবার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিঁধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর। এ মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর আল শামসদের সহযোগিতায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোন নজীর বিশ্বে নেই।
বিজয়ের মাসের প্রথমদিনে বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিজয়ের মাসকে স্বাগত জানিয়ে সমাবেশ, মানববন্ধন, বিজয় র্যালি, মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে এদিনের কর্মসূচি পালন করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধা দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি আজ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে মিরপুর কবরস্থানে পুস্পমাল্য অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
সকাল ১০টা ৪৫মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারী অপারেজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত হবেন। সেখান থেকে বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিজয়র্যালি বের হবে। এটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে শেষ হবে।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির হাতে দিয়েছে। এর অংশ হিসাবে সংগঠনের সদস্যরা আজ সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
জনতার আলো/শনিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.