জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: সিটি কর্পোরেশনের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো মৃতব্যক্তির কবরস্থানে দাফন খরচ এক হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সেই খরচ স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হয় সর্বনিম্ন আড়াই হাজার টাকা। এরপরও যার কাছ থেকে যেমন নেয়া যায়।
এছাড়া কবরে বাঁশের বেড়া, নামফলক লাগানো, বেড়া সংরক্ষণের নামেও আদায় করা হয় টাকা। এখানেই শেষ নয়, মৃতব্যক্তির পরিবারকে মাসে অন্তত আরও ৫০০ টাকা গুণতে হয় কবর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। সব মিলিয়ে নানা অব্যবস্থাপনার মধ্যে চলে রাজধানীর কবরস্থানগুলো।
মৃতব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের এমন বিড়ম্বনা দূর করতে এবার ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এর মাধ্যমে মৃতব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা কবরস্থান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যম।
এমন সেবার বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আইসিটি সেলের সিস্টেম এনালিস্ট আবু তৈয়ব রোকন জানান, প্রাথমিকভাবে আজিমপুর কবরস্থানে একটা পাইলট প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছি। এটা ফলপ্রসূ হলে অন্যান্য কবরস্থানেও এ সেবা চালু হবে।
‘ইতোমধ্যে কয়েক বছরের একটা ডাটাবেজ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেবাটি চালু হলে মৃতব্যক্তির স্বজনদের কবরস্থান কেন্দিক নানা ভোগান্তি লাঘব হবে। ওই ডাটাবেজে মৃতব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশিত করা হচ্ছে। মারা যাওয়ার তারিখ, দাফনের সময়, মৃত্যুর কারণ এবং ওয়ারিশদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইনে অর্থাৎ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ডেথ সার্টিফিকেটের নির্ধারিত ফি পরিশোধ করা যাবে। এছাড়া মৃতব্যক্তির ডেথ সার্টিফিকেট প্রস্তুত করে তা রেজিস্ট্রেশনকারীর প্রোফাইলে পাঠানো হবে। স্বজনরা কবরস্থান কেন্দ্রিক নির্দিষ্ট বিভিন্ন চার্জ অনলাইনের মাধ্যেমে প্রদান করতে পারবেন।’
আবু তৈয়ব রোকন বলেন, ‘মৃতব্যক্তির অনেক স্বজন বিদেশে থাকেন বা ব্যস্ততার কারণে কবরস্থানে যেতে পারেন না। তাদের কথা মাথায় রেখে এ সেবা চালু হতে যাচ্ছে। যেখানে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে কবরের নামফলকসহ কাছের আত্মীয়-স্বজনের সর্বশেষ অবস্থান ও ছবি দেখা যাবে।’
‘কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করাতে পারবেন নির্দিষ্ট চার্জ পরিশোধের মাধ্যমে। এটা বাস্তবায়ন হলে পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে স্বজনের কবরের নামফলকসহ অবস্থান দেখা যাবে। এমনকী সে ক্ষেত্রে মৃত্যুবার্ষিকীর সাতদিন আগে মৃতব্যক্তির পরিবারের কাছে বার্তা পাঠানো যাবে। দাফনের সময় দেয়া সিরিয়াল নম্বর দিয়ে সার্চ করলে সহজেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির সব তথ্য চলে আসবে অনলাইনে।’
রাতুল আহমেদ রাজধানীর একটি কবরস্থানে স্বজনকে দাফন করেছেন। কবরস্থানের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘কবর খোঁড়া, দাফন-কাফন, কবরের বেড়া দেয়া, পরবর্তীতে কবরের দেখভাল নিয়ে নানা অব্যবস্থাপনা শিকার হতে হয়। পদে পদে টাকা দিতে হয়। কবর রক্ষণাবেক্ষণের নামেও মাসে মাসে টাকা গুণতে হয়। যদি অনলাইনে চার্জ পরিশোধসহ এমন সেবা পাওয়া যায়, তাহলে মৃতব্যক্তির স্বজনদের ভোগান্তি কমবে।
জনতার আলো/সোমবার, ০৭ মে ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.