জনতার আলো, ফরিদ উদ্দিন মুপ্তি, জেলা ব্যুরো চীফ, মাদারীপুর: নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, ‘কিসের জাতীয় ঐক্য ? জাতীয় ঐক্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে।
দলছুট ড. কামাল হোসেন স্বাধীনতা বিরোধী জনবিচ্ছিন্ন কিছুলোক নিয়ে ঐক্য করে নির্বাচন বানচালের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছেন। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন চক্রান্ত শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন মত পথের লোক নিয়ে কোন ঐক্য হয় না। যে ঐক্য গড়ে উঠেছে সেখানে খুনি, রাজাকার, আলবদর, কিছু মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের তথাকথিত কিছু সুশীল সমাজের নেতারা জড়িত। এ ঐক্যের স্থায়িত্ব বেশী সময়ের জন্য নয়। গোটা জাতিকে বিভ্রান্ত করতেই এই ঐক্যজোট হয়েছে। ড. কামালের জাতীয় ঐক্যের উদ্দেশ্য হলো চক্রান্ত করে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা। রাজাকার, আলবদর, স্বাধীনতা বিরোধীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্য যারা গড়বেন মনে করতে হবে তারা আসলে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে।’ শনিবার সকালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরের বেপারীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, শেখ হাসিনা আছে বলেই আজ সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। শেখ হাসিনা আছে বলেই দেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের ধারায় পরিচালিত হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। ‘৭১ এর খুনী রাজাকার, আলবদর, ধর্ষণকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে দেশ পাপ মুক্ত হতো না। শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে পাপমুক্ত করেছেন। যারা স্বাধীনতার কথা বলে স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ দিচ্ছে তারা কোনোক্রমেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না। এ ধরণের জাতীয় ঐক্য দেশ ও জনগণের অকল্যাণের জন্যই তারা করেছেন। দেশকে পাকিস্তান বানানোর এক গভীর ষড়যন্ত্রে তারা লিপ্ত হয়েছে। কোনোমতেই বাংলার মানুষ এ ধরণের ঐক্যকে মেনে নেবে না, তাদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিরোধ করবেই। তাদের এ ধরণের ঐক্য আদর্শহীন ঐক্য। তাসের ঘরের মত চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।’
শাজাহান খান আরো বলেন, ২০১৪-১৫ সালে যখন বিএনপি জামাত দেশকে অশান্ত করার জন্য জ্বালাও-পোড়াও করেছিল। অনেক নিরীহ মানুষকে খুন করে, বাড়ি-ঘর পুড়িয়েছে, বহু শিক্ষ প্রতিষ্ঠান জা¡লিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করেছে, বাসে পেট্রোল বোমা মেরে চালক, হেলপার, যাত্রী, শ্রমিক, ব্যাংকারসহ নিরীহ মানুষ হত্যা করলো তখন ড, কামাল হোসেনরা কোথায় ছিলেন ?
সন্ত্রাসীদের জন্য গণতন্ত্র হতে পারে না উলেখ করে নৌমন্ত্রী বলেন, সে সময়ে ড. কামাল হোসেন গং, খুন, জ্বালাও-পোড়াও ও আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটুও প্রতিবাদ করেননি। এখন বড় বড় কথা বলছেন, গণতন্ত্রের কথা বলছেন। সন্ত্রাসীদের গণতন্ত্রের জন্য ড. কামাল হোসেন এখন ফাঁকা মাঠে বুলি আওড়াচ্ছেন। শাজাহান খান বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সামাজিক অস্থিরতা নেই। এক সময়ের গরীব বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হচ্ছে। আজ বিশ্বব্যাংকও স্বীকার করেছে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ। সবকিছুই সম্ভব হয়েছে একমাত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার কারণে।
পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে নৌমন্ত্রী বলেন. পাকিস্তানে এখনো ষড়যন্ত্র আছে বলে সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হয়নি। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগামী ৫ বছরের মধ্যে পাকিস্তানকে সুইজারল্যান্ডের মতো বানাতে চেয়েছেন। কিন্তু সে দেশের বুদ্ধিজীবীরা, আগামী ৫ বছরে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মতো হওয়ার স্বপ্ন দেখতে বলেছেন। এতেই প্রমাণ হয় বাংলাদেশ আজ কতটা এগিয়েছে। ‘৭১ এ কুকর্মের জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে উলেখ করে শাজাহান খান বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। যে ভাবে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের উন্নয়ন রোল মডেল হিসেবে পরিণত হচ্ছে তা দেখে এক সময় অবশ্যই পাকিস্তানীদের অতীত কর্মকান্ডের জন্য বাংলার জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে নৌমন্ত্রী আরো বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি আর বিপক্ষ শক্তি। ড. কামাল হোসেনরা স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বিএনপি-জামাতের পাশে অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতার পক্ষের সকলকে এক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যেতে হবে।’ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনার আহবান জানান।
রাজৈর পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, রাজৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহানা নাসরিন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি এম.এ মোতালেব মিয়া, পৌর মেয়র শামীম নেওয়াজ প্রমুখ।
জনতার আলো/শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.