জনতার আলো, বিনোদন ডেস্ক: তিনি সাহসী, বুদ্ধিমান এবং অধ্যবসায়ী। সত্যের সন্ধানে নিজেকে উজার করে দিতে পিছপা হন না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদঘাটন করে চলেন একের পর এক লুকায়িত সত্য। ধনাঢ্য বাবার সন্তান হয়েও সত্যের হয় প্রতিষ্ঠিত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি নাম লিখিয়েছেন উকালতি পেশায়। ক্যারিয়ারে কোনো কেসে তিনি হারেননি, নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। সমগ্র ভারতবর্ষে তার পরিচিতি এক নামে; তিনি কে ডি পাঠক। কেউ কেউ তাকে কে ডি শেখাওয়াত হিসেবেও চেনেন।
একদম ঠিক তাই। ভারতের জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘আদালত’র মূল চরিত্র উকিল কেডি পাঠকের কথাই বলা হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রচার হওয়া সকল সিরিয়ালগুলোর চরিত্রদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে এই নাম। হিন্দি ও বাংলা ভাষায় প্রচার হওয়া এই সিরিয়াল শুধু ভারতেই নয়, দারুণ জনপ্রিয় বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হিন্দি ও বাংলা ভাষার দর্শকদের কাছে।
দর্শক চাহিদার কারণেই দীর্ঘ দশ বছর ধরে সনি টিভি প্রচার করে চলেছে ‘আদালত’। যেখানে দেখা যায় নির্দোষ ব্যক্তিদের পক্ষে মামলা লড়েন কে ডি পাঠক। কে ডি কেবলমাত্র তার মক্কেলের জন্য লড়েননা বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেন।
এই চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয় হওয়া মানুষটি সম্পর্কে আগ্রহের শেষ নেই ‘আদালত’ বা কে ডি পাঠকের ভক্তদের। কে এই কে ডি পাঠক? কী তার সত্যিকারের নাম? সিরিয়ালে দেখা যায় কে ডি তার নামের পূর্ণাঙ্গ অংশ কখনোই বলেন না। এখন পর্যন্ত ‘আদালত’র দর্শকদের কাছে ‘কে ডি পাঠক’ নামটির পূর্ণাঙ্গ রুপ প্রকাশ করা হয়নি।
তবে এই চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতার নামটি হয়তো অনেকেরই অজানা নয়। তিনি রনিত রায়। একজন বলিউড অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে বলিউডে নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। তিনি হিন্দি ছাড়াও তামিল ও বাংলা ভাষার সিনেমাতে কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের নায়ক মান্নার সঙ্গেও একটি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। শাহ আলম কিরণ পরিচালিত ছবিটির নাম ‘শেষ বংশধর’।
রোনিত রায় ১১ অক্টোবর ১৯৬৫ সালে ভারতের নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ব্যবসায়ী বাবার প্রথম সন্তান। তার ছোটভাই রোহিত রায়ও একজন টিভি অভিনেতা। তার বাল্যকাল আহমেদাবাদ ও গুজরাটে কাটে। ব্যক্তিগত জীবনে ২৫ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে অভিনেত্রী ও মডেল নিলাম সিংয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের তিনটি সন্তান (২ মেয়ে ১ ছেলে) আছে।
১৯৮৪ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তবে ১৯৯২ সালে মূল ভূমিকায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন রোনিত। জান তেরে নাম, সৈনিক, বম্ব ব্লাস্ট, হালচাল, মেঘা, আর্মি, দানবীর, অগ্নি স্বাক্ষী, গ্ল্যামার গার্ল, হাম দিওয়ানা পেয়ার কা, খাতরন কী খিলারি, শেষ বংশধর, নিশান, দ্যাট গার্ল ইন ইয়েলো বুটস, মিডনাইট’স চিলড্রেন, স্টুডেন্ট অব দ্যা ইয়ার, শুট আউট এট ওয়াডালা, বস, আগলি, গুড্ডু, টু স্টেইটস, সাত কদম, কাবিল, সরকার ৩, মেশিন ইত্যাদি ছবিগুলোতে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন রোনিত।
সিনেমা ছাড়াও রোনিত দীর্ঘ অভিনয় জীবনে অনেকগুলো ফিকশান শোতে অভিনয় করেছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বোম্বে ব্লু, বাত বান যায়ে, নাগিন, কসম ছে, কেয়ামত, কাহানি হামারি মোহাব্বত কী, বন্দিনী, আদালত, ইতনা কারো না মুঝে পেয়ার ইত্যাদি।
শুধু জনপ্রিয়তাতেই নয়, কে ডি পাঠক চরিত্রটি দিয়ে পারিশ্রমিকের দিক থেকেও রেকর্ড করে চলেছেন রোনিত রায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রনিত ‘আদালত’র জন্য প্রতিদিনের শুটিংয়ে পারিশ্রমিক নেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। কেউ কেউ দাবি করছে এই অংকটা ১ লাখ ২৫ হাজার রুপি! এর পাশাপাশি রোনিতের রয়েছে বিশাল সিকিওরিটি এজেন্সির ব্যবসায়।
জনতার আলো/শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.