জনতার আলো, স্টাফ রিপোর্টার: ইসরাফিল আলম মৃধা(মংলা)। পিতা মৃত আব্দুর রহমান। ৫ ভাই। বাড়ী নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঝিনা গ্রামে। আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা।
গহেলাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে পাশ করেন। এরপর নওগাঁ কলেজে ভর্তি হন। বাবার সামর্থ না থাকায় অন্যের বাড়িতে জাগির থেকে পড়াশুনা করত। কলেজ হোস্টেলেও থাকত। মাঝে মাঝে টিউশনিও করাতো। সম্ভব(১৯৮৪) সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে গ্রামের বাড়ীতে যায়।
প্রতিবেশির একটা ছাগল চুরির ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে এলাকায় ছাগল চোর নামে পরিচিত। এখনো অনেকেই ছাগল চোর বলেন। গ্রাম্য শালিসের রায় থেকে রেহায় পেতে ঢাকায় চলে যান। সেখানে এলাকার বড় ভাই মোজাফ্ফর হোসেনের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। সেই সুবাদে তিতাস গ্যাসে মিটার রিডিংএ চাকুরি হয়।
চাকুরিরত অবস্থায় তিতাস গ্যাসের এক শ্রমীককে (সম্ভবত বিল্লাল হোসেন) ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করে ইসরাফিল আলম। জানা যায়, ঢাকার আদালতে তাঁর যাবজ্জীবন রায় হয়। আপিলে মুক্ত হয়। তবে গ্রামের বাড়ীতে তার আসা হয়না।
এরপর ঢাকায় নওগাঁ-৬ (আত্রাই ও রাণীনগর) উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমানের সাথে ধীরে ধীরে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। ঢাকাতে ওহিদুর রহমানের সাথে থাকত ইসরাফিল আলম। এভাবে এক সময় ওহিদুর রহমানের ভাগিনা হিসেবে পরিচিত পায় ইসরাফিল আলম। তারপর থেকে গ্রামের বাড়ীতে বিশেষ করে ঈদের সময় আসতো। এলাকায় তাকে তেমন কেউ চিনতো না।
আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলায় ওহিদুর রহমানের বিভিন্ন সমাবেশে তাঁর ছেলে ওমর ফারুক সুমনের সাথে সে অংশগ্রহণ করতে থাকে। সে সুবাদে এলাকায় তার পরিচিতি পেতে থাকে। মোফাজ্জল হোসেন মায়া এবং আমুর হোসেন এর ছত্রছায়ায় তিতাস গ্যাসের মহানগর শ্রমীক লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদ পায়। পদ পাওয়ার পর থেকে সে সাবেক বার্ণিজ্যমন্ত্রী মরহুম আব্দুল জলিলের বিপরীত হিসেবে কার্যক্রম শুরু করেন বলে জানা যায়। তারপর থেকে এলাকায় বিভিন্ন ভাবে প্রচারনা শুরু করে।
১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে ওহিদুর রহমান পরাজিত হন আলমগীর কবীরের কাছে। এরপর তিনি হার্ড এ্যাটাক করেন। ২০০১ সালে নওগাঁ-৬ (আত্রাই ও রাণীনগর) আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর ধানের শীষে বিপরীতে নৌকা মার্কা নিয়ে ইসরাফিল আলম সংসদ সদস্য নির্বাচন করেন। সেবার তিনি পরাজিত হন।
এরপর ২০০৬ সালে আবারও আলমগীর কবীরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করেন ইসরাফিল আলম। সে নির্বাচন বাতিল হয়ে যায়। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালে নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন বুলুকে পরাজিত করে বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম।
এরপর ২০১৪ সালে সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়লাভ করেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জাতীয় পার্টি থেকে মননোয়ন উত্তোলন করেছিলেন এ্যাড. আবু বেলাল জুয়েল। তবে পরবর্তীতে এ্যাড. আবু বেলাল জুয়েল মননোয়ন উর্ধ্ব করে নিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়লাভ করেন ইসরাফিল আলম।
২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইসরাফিল আলম তার দুই উপজেলায় চসে বেড়ানো শুরু করেন। তার ছত্রছায়ায় জেএমবি ও সর্বহারা দল আশ্রয় গ্রহন করে। শান্তির আড়ালে মূল রহস্য। শুরু করেন খাস ভূমি দখল, জমিদখল, চাকুরি বার্ণিজ্য, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজীসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
চাকুরি বাণিজ্য: একটি নিয়োগে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। সর্বচ্চো যে টাকা দিতে পারে তার জন্য চাকুরি হয়। রাণীনগর উপজেলার কালিকগ্রাম ইউনিয়নের সিংগাড়পাড়া গ্রামের আবুল হোসেন তার জামাই ইদ্রিস আলীকে চাকুরির দেওয়ার নাম করে এমপির দালাল আসাদুজ্জামান পিন্টু গত ৭ বছর আগে ৩লাখ টাকা নিয়েছে। চাকুরি না হওয়ায় বারবার আসাদুজ্জামান পিন্টুকে বলা হলেও কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
আবুল হোসেন বলেন, অবশেষে আমাকে আসাদুজ্জামান পিন্টু ঢাকায় ইসরাফিল আলম এমপির সাথে দেখা করিয়ে বলে চাকুরির জন্য টাকাটা এমপিকে দিয়েছি। টাকা দেওয়ার সময় গিয়াস উদ্দিন নামে এক শিক্ষক ছিলেন। এ নিয়ে এমপি আমাকে বকাঝকা করেছে এবং টাকা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন টাকা দেয়নি। বরং টাকা চাওয়ায় আমাকে উপজেলা কৃষি বিষয়ক সম্পাদক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে গত দু’বছর আগে।
আত্রাই উপজেলার পয়সা গ্রামের রমজান আলী চাকুরি জন্য ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। চাকুরি না হলেও সামান্য কিছু টাকা ফেরত পেয়েছেন। এছাড়া দুই উপজেলার অনেকের কাছ থেকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে দালালরা এমপির নাম করে টাকা নিয়েছেন। টাকা চাওয়া নিয়ে অনেকে ভয়ে আছেন যদি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয় এজন্য।
ভূমি দখল: রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামে জমিদার বাড়ী এবং তৎসংলগ্ন ২০১৫ সালে প্রায় ২৫/৩০জনের কাছ থেকে একই স্থানে প্রায় ৪৫ বিঘার মতো জমি দখল করে আরসিসি পিলারের উপর টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। আরো দখল করার জন্য এলাকাবাসীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতেন এমপি সহ তার লোকজন।
অনেকের কাছ থেকে জোর পূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে টিপসই ও সই করে নেয়া হয়েছে। দাম দিয়ে জমি নেওয়া হবে বলে অনেকের কাছ থেকে জমি লিখে নিয়েছে এমপি নিজে। কিন্তু তাদের জমির দাম দেয়া হয়নি। এলাকাবাসীরা ভয়ে এমপির বিরুদ্ধে কথা বলার ও বাড়ী থেকে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেনা। কেউ কিছু বললে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও জেল হাজত খাটানো হয়।
কাশিমপুর গ্রামের মৃত কায়েব আলীর সরদারের ছেলে বয়জ্যেষ্ঠ খোদাবক্স সরদার ও ইয়াদ আলী সরদার। খোদাবক্স সরদারের দুই ছেলে সাইদুল ইসলাম ও সাদেকুল ইসলাম সাদেক। সাদেকুল ইসলাম সাদেক গত ২০০৪-১২ সালে সৌদিতে ছিলেন। দেশে এসে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
২০১৫ সালে ইসরাফিল আলম এমপি’র বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় হয়রানি স্বীকার হয়ে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। আপোষে জমি না দেয়ায় তাকে ইয়াবার মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। জেল হাজত খেটে জামিনে বের হয়ে এসেছেন। হাজত থেকে বের হওয়ারপর মাহাদত, গফুর, ইয়াছিন, ওসমান আফসার সহ অনেকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে থাকে এমপির লোকজন।
এরপর গ্রাম থেকে পালিয়ে থাকেন তিনি। বিভিন্ন দুশ্চিন্তায় তার মা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঠিকমতো মায়ের চিকিৎসা করাতে না পারায় গত ১০ অক্টোবর মারা যান। এখন তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অন্যায় ভাবে এলাকাবাসীর জমি দখল করায় গ্রামে প্রায় ১৫০/২০০ নারী-পুরুষ মিছিল বের করে।
তৎসময়ের ওসি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধূরী ছিল ইসরাফিল আলম এমপি’র দালাল। ওসি মিছিলে বাধা দেয় এবং তাদের আশ্বস্থ করে থানায় নিয়ে এসে সাদা কাগজে সই নেয় কোন ধরনের মিছিল করতে পারবে না বলে। এক সময়ের সর্বহারা এখন এলাকায় ত্রাস করে বেড়ায় মাহাদত।
সে এখন এমপির সাথে ঘুরে। বিভিন্ন স্থানে জমি দখলে এমপিকে সহযোগীতা করে জানা গেছে। এমপির জবরদখলকৃত টিনের প্রাচির দিয়ে ঘেরার পাশে গ্রামের শহিদুল ইসলাম ডব্লিউর প্রায় ৪৪ শতাংশ জমি আছে। বেশির ভাগ অংশ দখল করে বেড়া দিয়েছেন এমপি। বাকী জমিও দখল করার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
গ্রামের ছোট যমুনা নদীর পাশে তৎকালিন রাজার প্রায় সাড়ে ৩বিঘা জমি রয়েছে। ওই জমিতে গত ৩০ বছর থেকে গ্রামের লোকজন ভূমি অফিস থেকে একই সাথে ২৭ ভাগে চেক কেটে চাষাবাদ করে আসছেন। ওই জমি একসময় এমপি দখল করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে তার দখলকৃত টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া স্থানে মানুষ সমান উচুঁ করে রাখেন।
বালু উত্তোলন করায় সেখানে প্রায় ৩০ ফিটের মতো গভীর হয়েছে। আর সাড়ে ৩ বিঘা জমি ভেঙ্গে এখন অনেক বড় হয়েছে। স্থানীয়রা বালু উত্তোলনে নিষেধ করলেও এমপি কোন কর্ণপাত করেননি।
ভুক্তভোগী সাদেকুল ইসলাম সাদেক বলেন, গত ২০১৫ সালে ৬বিঘা জমির পাকা ধান এমপি’র লোকজন দিয়ে কেটে নিয়ে যায়। আগে দখল করে পরে পুলিশের উপস্থিতিতে সেখানে দড়ি ও বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়। সেময় দালাল ওসি বলেন দাম দিয়ে জমি নেওয়া হবে তোমরা লিখে দাও। এখানে পানির ফ্যাক্টরি হবে। যাদের জমি আছে লিখে দাও।
এসময় এমপি হুকুম দেয় তোমারা আমার জমিতে আর এসোনা। আসলে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলা হবে। এ কথা শুনে এমপি’র সামনে আমার বড় ভাই সাইদুল ইসলাম স্ট্রোক করে মারা যায় ঘটনাস্থলে।
তিনি আরো বলেন, আমি জমির ন্যায্য মূল্য না পাওয়া পর্যন্ত কোন প্রকার সই করবোনা। পরে আবার ওসি এক এসআইয়ের মাধ্যমে থানায় ডেকে পাঠায়। জমি লিখে না দেওয়ায় আমাকে থানার লকাপে আটক করে রাখে এবং ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে মিথ্যা মামলা দেয়।
ইয়াবার মিথ্যা মামলায় জেল হাজত খেটে জামিনে বের হয়েছি। এখনও মামলা চলছে। আরো জমি নেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এমপির ভয়ে এখন মামলা করতে পারছেনা। পরিবার নিয়ে শঙ্খায় আছেন।
গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, নদীর কাছে ২৭ ভাগের জমিতে চেক কেটে বাপ-দাদার আমল থেকে ৫ কাঠা জমিতে ফসল করতাম। জোর করে এমপি সেখানে দখল করে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় এখন পুকুরের মতো গভীর হয়ে গেছে। সেখানে আর কোন ফসল করা সম্ভব না।
গ্রামের ভুক্তভোগী মোরশেদ আলী বলেন, তার দলিলকৃত ২০ শতাংশ জমির উপর গত ৬ বছর থেকে পোল্ট্রি ফার্ম দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। সেই জমির উপর নজর পড়ে ভূমি খেকো এমপি ইসরাফিল আলমের। সে জমি এখন এমপি নিতে চাচ্ছেন। তার কিছু প্রশাসনের দালাল ও দলীয় দালালদের মাধ্যমে বার বার তাগাদা দিচ্ছেন।
পোল্ট্রি সেডে কোন কাজ না করার জন্য বলা হয়েছে। গত ৬মাস থেকে ব্যবসা বন্ধ হয়ে আছে। গত ১৫দিন আগে পোল্ট্রি শেডে ৫জন মিস্ত্রি দিয়ে কিছু কাজ করছিলাম। পুলিশ দিয়ে তাদেরকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অনেক অনুরোধ করে মিস্ত্রিদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। বর্তমানে হুমকির মধ্যে আছেন বলে জানান।
রাণীনগর উপজেলা সদরে উপজেলার পার্শে রাস্তার ধারে সাবেক ইউনিয়ন সদস্য শাহ আজিজার রহমানের ১৩ শতাংশ জমি দখল করে সেখানে মাদার কেয়ার স্কুল এন্ড কলেজ তৈরী করেছেন ইসরাফিল আলম এমপি।
জমির প্রকৃত মালিক শাহ আজিজার রহমান বলেন, ১৯৭৮ সালে জমিটি কিনেছেন। সেখানে মানুষ সমান গর্ত ছিল। পরে সেখানে মাটি কেটে ভরাট করে কলার গাছ লাগানো হয়েছিল। ২০১৫ সালে হঠাৎ এমপির লোকজন এসে জমিমাপজোক করে পুলিশের উপস্থিতিতে দখল করে। পরেরদিন সেখানে এমপি আসেন।
তিনি আরো বলেন, জোর পূর্বক জমি দখল করায় সে বছরই নওগাঁ নি¤œ আদালতে ইসরাফিল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আদালতে মামলা এখনো চলমান আছে। নওগাঁ থেকে আদালতের কাজ শেষ করে বাড়ীতে আসার পথে একদিন রাতে নওগাঁর কাঁঠালতলী মোড়ে রাতে এমপির লোকজন আমাকে বিভিন্ন ভাবে মারপিট করে ও ডান ডানা ভেঙ্গে দেয়। স্থানীয়রা সেদিন আমাকে তাদের কবল থেকে রক্ষা করে। এখনো বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলায় একমাত্র আমিই এমপির বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়ন ভবানীপুর বাজার। ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান। বর্তমানে এমপির ছত্রছায়ায় এলাকায় দাপটের সাথে চলাফেরা করেন। এলাকায় মান্নান নামে একটা সংঘবদ্ধ বাহিনী গড়ে তুলেছেন। আর এ বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে লোকজনকে হয়রানি করেন। আবার টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংসা করে দেয়।
এলাকার লোকজন ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারেনা। সম্প্রতি বাজারে ২০/২৫টি দোকান উৎচ্ছেদ করে দখল করে সেখানে টিনের ছাউনি দিয়ে ইটের ঘর করা হয়েছে। দোকানদারদের বলা হয় তোমাদের আবারও এই জায়গায় নতুন করে দোকান করে দেওয়া হবে।
কিন্তু পরবর্তীতে আর তাদের দোকান দেয়া হয়নি। বরং ওইসব নতুন দোকান ২০/৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে দলীয় লোকদের দেওয়া হয়েছে। সবকিছু করা হয়েছে ইসরাফিল আলম এমপির নির্দেশে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
আর উৎচ্ছেদ হওয়া দোকানিরা অনেকেই দোকান দিতে পারেনি। ফলে জিবীকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকেই ঋৃণগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
শাহাগোলা ইউনিয়ন আনছার ভিডিপি কমান্ডার ও দোকানদার রবিবুল্লাহ বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে ভবানীপুর বাজারে আব্দুল মান্নান মেম্বারের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা এবং মতিউরের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বাজারের জায়গা কিনে সেখানে তরকারি ও মুদি দোকান দিয়ে কোন রকম ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। হঠাৎ এমপির লোকজন দোকানগুলো উৎচ্ছেদ করে দেয়।
নতুন করে দোকানঘর দেওয়ার কথা থাকলেও তারা দেয়নি। তারা এমপির দলের লোকদের দোকানঘর দিয়েছে। ভয়ে তাদেরকে কিছু বলাও যায় না। উৎচ্ছেদের পর থেকে বাজারে রাস্তার ধারে পলিথিন টাঙ্গিয়ে কোন রকম ব্যবসা করছি। অনেকে আবার জায়গা না পেয়ে দোকান করা ছেড়ে দিয়েছে।
রাণীনগর উপজেলা রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদ এমপির মনোনিত প্রার্থী আসাদুজ্জামান পিন্টু। এমপির পকেট কমিটি করে থানা আ’লীগের প্রচার সম্পাদক হয়। আগে ছিল ছাত্রদলের সভাপতি, যুবদলের সভাপতি এবং জেএমবি। আর সে কমিটি থেকে অনেকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। রাণীনগর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আমজাদ হত্যার চার্জশিট ভুক্ত আসামী। তবে বর্তমানে মামলার কোন হদিস নাই।
আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে ইসরাফিল আলম এমপি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। আসাদুজ্জামান পিন্টুকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান করার জন্য এমপির প্রাণপন চেষ্টা ছিল। সে ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন গোলাম মোস্তফা।
প ম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমপির লোকজন কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ককটেল বিষ্ফোরন, পুলিশের ৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে তিন পুলিশসহ ১০ জন আহতের ঘটনা ঘটে। ফলে তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহন স্থগিত করা হয়।
এলাকাবাসীর এখন একটাই প্রত্যাশা জুলুমবাজ এই ক্ষমতাশীন নেতার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া। হাফ ছেড়ে বাঁচতে চায়। নিঃশ্বাস নিতে চাই প্রাণ ভরে। কবে রক্ষা পাবে। কবে বিচার হবে এই জুলুম বাজের? সেই দিনের অপেক্ষায় বিচারের আশায় ছেড়ে দিয়েছেন আল্লাহর হাতে।
জনতার আলো/মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.