জনতার আলো, মোঃ আবু সালেহ্ মুসা, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় কয়েকটি দোকানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি’র) সদস্য পরিচয় দিয়ে অভিনব কায়দায় প্রায় ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে।
গত মঙ্গলবার ও বুধবার (১২/১৩ জুন) শহরের ঠাকুরগাঁও ইলেকট্রনিক্স, মেসার্স মুকিদ হার্ডওয়ার, মেসার্স আরিফ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স নিউ ষ্টীল এন্ড নিউ ফার্নিচারের দোকানে বিজিবি’র সদস্য পরিচয় দিয়ে মালামাল লুট করে একটি প্রতারক চক্র।
অভিযোগকারী দোকান মালিক সূত্রে জানা যায়, ১২ জুন মঙ্গলবার বিজিবি’র পোশাক পরিহিত একজন ব্যাক্তি সব দোকান ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও অন্য মালামালের দাম লিখে নিচ্ছিল। বিজিবি’র নিয়ম মতে তারা একদিন আগে এসে বিভিন্ন দোকান থেকে মালের দাম দেখে গিয়ে তার পরের দিন মাল নিয়ে যায়।
ঠিক তেমনি বিজিবি’র সেই সদস্য সব দোকান থেকে মালের মূল্য দেখে গিয়ে তার পরের দিন ঠাকুরগাঁও ইলেকট্রনিক্স থেকে ৯৪ হাজার ৬শত, মুকিদ হার্ডওয়্যার থেকে ৪৩ হাজার ৭৬০ টাকার করে কয়েকটি দোকান থেকে মাল নিয়ে সন্ধ্যায় ৫০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে ব্যাবসায়িদের টাকা নিতে যাওয়ার জন্য বলে মালামাল নিয়ে চলে যায়। এসময় বিজিবি’র সদস্য তার পরিচয় পত্র ও ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি দোকানে জমা দিয়ে যায়।
পরে সন্ধ্যায় ব্যবসায়ীরা ৫০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে গেলে সেখানে এমন কোন মালামাল নেওয়া হয় নাই ও এই নামে কোন সদস্য নাই বলে ব্যবসায়িদের জানানো হয়। ব্যাবাসায়িরা প্রতারণার স্বীকার হয়েছে বুঝতে পেরে ঠাকুরগাঁও থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ঠাকুরগাঁও ইলেকট্রনিক্স দোকানের প্রোপাইটর রেজাউল হাফিজ রাহী জানান, বিজিবি’র সদস্য প্রথম যেদিন দোকানে এসে মালামাল দেখেন তখন কোন ভাবেই তাকে ভুয়া বিজিবি মনে হয় নাই। তার পরনের ড্রেস থেকে হাতের ডায়েরি, আইডি কার্ড সব কিছুই বিজিবির ছিল।
আর ঈদে দোকানে ক্রেতার ভিরের কারণে প্রশাসনিক লোক মনে করে বিষয়টি নিয়ে বেশি কথা না বাড়িয়ে মালামালগুলো দেওয়া হয়।
আর বিজিবি’র সদস্যরা এর আগেও এভাবেই মালামাল নিয়ে যেত তাই আমরা বেশি সন্দেহ হয় নাই। পরে যখন জানতে পারি যে ভুয়া বিজিবি আমাদের সকলের মাথায় হাত।
প্রশাসন একটু সহযোগিতা করলে এই প্রতারক চক্রকে ধরা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। আমরা প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি।
ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুল লতিফ মিঞার কাছে প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারককে খোজার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শহরের সিসি ফুটেজ এর সূত্র ধরে ও একটি স্পেশাল টিম দিয়ে এই প্রতারক চক্রকে ধরার চেষ্টা করছি।
আশা করছি খুব দ্রুত প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব। ঠাকুরগাঁও ৫০ বর্ডার গার্ড ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে: কর্ণেল মোহাম্মদ হোসেন বলেন, এই ব্যাক্তিটি আমাদের সদস্য না।
তবে এই ক্ষেত্রে ব্যাবসায়িদের একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন ছিল। আরো কোন বিষয়ে তথ্য প্রয়োজন হলে ঠাকুরগাঁও বিজিবি সেক্টরের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
জনতার আলো/সোমবার, ২৫ জুন ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.