জনতার আলো, এম এ সাজেদুল ইসলাম (সাগর), নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ (রংপুরের পিরগঞ্জ) উপজেলার করতোয়া নদীসহ প্রতি বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে দেশের ছোটখাট নদীনালা গুলো শুকিয়ে চৌচির ও খাঁ খাঁ করে। শুক নদীর ধুধু প্রান্তরে ছড়িয়ে ছিঁটিড়ে থাকে মাছ ধরা এবং পারা পারের কাজে ব্যবহৃত ছোট বড় অসংখ্যা নৌকা।
খেয়া পারা পারকারী মাঝি মালল্লারা আগাম বর্ষার আশংকা করে পুরনো নৌকা মেরামতের কাজে হাত দিয়েছেন। চলতি বছর জেলা পরিষদের অধিনে নিলামের মাধ্যমে উপজেলার করতোয় নদীর জাতের ঘাট নিজেদের দখলে নেওয়ার পর ওই সব ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঝিরা (ঘাটিয়াল) নদীর ঘাটে নৌকা তৈরি এবং পুরনো নৌকা মেরামতের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আসন্ন ভরা বর্ষায় নৌকার মাধ্যমে নদীর দুই পারের মানুষের সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সেতুবন্ধনকে সুদৃঢ় করার প্রত্যায়ে রাত দিন চলছে মাঝিদের নৌকা মেরামতের কাজ। প্রকাশ থাকে, নবাবগঞ্জ উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট বড় বেশ কয়েকটি নদী।
তার মধ্যে উপজেলার পূর্ব দিকে ৭নং দাউদপুর ইউনিয়নের দক্ষিন বোয়াল মারী( জাতেরপাড়া) এবং পিরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমে টুকুরিয়া ইউনিয়নের ঘোনা বিছনা গ্রামের পার্শ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী আর বর্ষাকালে ওই নদী অ লের লোকজনকে নৌকার মাধ্যমে নদী পার হয়ে উপজেলার বিভিন্ন অ লে এসে প্রয়োজন সারতে হয়।
ইতিপুর্বে উপজেলার করতোয়ার ঘাট এলাকায় কাঁচদহতে ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতু নির্মাণ করার ফলে ওই অ লের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। এছাড়াও করতোয়া নদীর উপর জাতের ঘাটের ব্রিজের অভাবে বর্ষাকালে এখনো ওই অ লে নৌকার রাজত্ব বহাল থাকে।
নৌকায় করে লোকজন নদী পারাপার করতে পারলেও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য যানবাহনে করে দুর দুরানন্তর শহর বন্দরে বিক্রি করতে না পেরে ন্যায্য মূল্য থেকে বি ত থাকে।
এ বিষয়ে গতকাল সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জাতের ঘাটের ইজারাদার মোঃ হাসেন আলি নৈকা মেরামতের পর আলকাতরা লাগাতে দেখা যায়। তিনি জান আগামী বর্ষা মৌসুমে মানুষের পারাপারের জন্য নতুন করে নৌকা মেরামত করতেছি।
এব্যপারে জাতের ঘাটের মাঝি (ঘাটিয়াল) মোঃ ইউসুফ আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, সাধারনত জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় মাসে নৌকা মেরামতের কাজ করা হয়। কিন্তু এবছর চৈত্র মাসের শুরুতেই বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে আগাম বর্ষার আভাস লক্ষ্য করে নদী পারাপরের সুবিধাত্বে নৌকা মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। একটি নতুন নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
প্রতি বছর নতুন নৌকা তৈরি করার প্রয়োজন না হলেও বছর শেষে ১৪-১৫হাজার টাকায় পুরাতন নৌকা মেরামত করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার যে হারে উন্নতি হচ্ছে তাতে করে আগামী দিনে নবাবগঞ্জের প্রতিটি নদীর ঘাটে একটি করে ব্রীজ নির্মান করা হবে। ব্রীজ নির্মাণ করা হলে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হওয়ার সাথে সাথে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা কমে গিয়ে নদীর ঘাট থেকে মাঝি মালল্লাদের স্মৃতি মুছে যাবে।
জনতার আলো/বুধবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.