জনতার আলো, এম এ সাজেদুল ইসলাম (সাগর), নবাবগঞ্জ(দিনাজপুর) : দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আলদাতপুর বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা কালীন প্রধান শিক্ষকের নাম প্রতারনা মূলক ভাবে কর্তন এবং পুরাতন শিক্ষক হাজিরা খাতা গায়েব করে নতুনভাবে দলিয় পরিচয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে মাননীয় প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রী বরাবর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন প্রাতারিত প্রধান শিক্ষক আফজালুজ্জামান।
এদিকে মাননীয় মন্ত্রী দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে সরেজমিনে বিষয়টি যাচাই পূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন। জানাগেছে, পার্বতীপুর উপজেলার ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের উত্তর বিষ্ণুপুর ফকির পাড়া এলাকার মোঃ সাদেকুজ্জামান এর ছেলে আফজালুজ্জামান নবাবগঞ্জ উপজেলার আলদাতপুর বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪/০৭/২০০৯ ইং স্মারক নং- ০১/০৯ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র মূলে ম্যানেজিং কমিটির ১৩/০৭/২০০৯ সভার সিদ্ধান্ত মতে ২০/০৭/২০০৯ প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করে নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যালয় গৃহ নির্মান, পাকা করন সহ যাবতীয় কাজ অগ্রগামী হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মিরপুর এর স্মারক নং- প্রাশিঅ/০৬/০২বিদ্যা-নীমালা/২০১২/১৪৩, তাং- ০৭ আগষ্ট ২০১৪ এর পলিসি ও অপারেশন বিভাগের পরিচালক জনাব মোঃ ইমরান কর্তৃক স্বাক্ষরিত “ বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণের লক্ষ্যে প্রাপ্ত বিদ্যালয়ের তালিকা যাহা মাননীয় সচিব প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ে প্রেরনকৃত ২৭ নং ক্রমিক এ সুস্পষ্ট ভাবে মোঃ আফজালুজ্জামানকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করা আছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস হতে চুড়ান্ত শিক্ষক তালিকা/প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বে হঠাৎ করে বিদ্যালয়ের সভাপতি আরো ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। অন্যথায় শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে নিষেধ করে।
এই বিষয়ে প্রতারিত প্রধান শিক্ষক আফজালুজ্জামান বলেন, আমি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরন করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মাষ্টার্স ডিগ্রী যোগ্যতা নিয়ে বিদ্যালয়টিতে যোগদান করি।
সভাপতি সাহেব আমার নিকট হতে ৩ লক্ষাধিক টাকা লিখিত ডকুমেন্ট মূলে হাতিয়ে নিয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষক তালিকায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমার নাম রয়েছে, বৈধ নিয়োগ পত্র, যোগদান পত্রের মূল কপি হাতে রয়েছে।
অথচ কর্মস্থল নবাবগঞ্জ উপজেলায় এবং আমি পার্বতীপুর উপজেলার বাসিন্দা এই খোড়া অজুহাত দেখিয়ে সভাপতি আমাকে নানা ভাবে হয়রানি করছে।
বিষয়টি নিয়ে আমি দিনাজপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের স্বপ্নপূরীর বাসায় আমার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম সোহাগকে নিয়ে বসেছি। সংসদ সদস্য প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমার নাম বাদ যাবেনা মর্মে আস্বস্থ করলেও গত ৩০/০৫/২০১৬ তারিখে ৩৬৫ নং স্মারকে বিধি লঙ্ঘন করে এইচ এস সি পাশ রায়হান নামক দলিয় ছেলেকে তৃতীয় পর্যায়ে বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করনের নিমিত্বে তথ্য পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক আফজালুজ্জামানের অবদান অনেক সত্য তবে শিক্ষক পরিবর্তনের ঘটনায় আমি পরিস্থিতির শিকার।
ডিগ্রী পাশ যোগ্যতা ছাড়া প্রধান শিক্ষক পদে কি ভাবে এইচ এস সি পাশ রায়হান কে নিয়োগ দিয়েছেন এবং পূর্ববর্তী প্রধান শিক্ষকের ইস্তফা পত্র ছাড়া এই নিয়োগ কতটুকু বৈধ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, নতুন প্রধান শিক্ষকের চাকুরী বৈধ হোক বা না হোক এতে আমার যায় আসে না।
ওই বিদ্যালয়ে আমার স্ত্রী ঝর্না পারভীন এবং ভাগ্নি তাশরাত উন্নাহার শিক্ষক হিসেবে রয়েছে আমি চাই ওদের চাকুরী হোক। ইতি পূর্বেও আমি দু’ দু’ বার বিদ্যালয়ের ঘর নির্মান করেও বিদ্যালয় করতে পারিনি।
নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত ভুয়া প্রধান শিক্ষক রায়হান বলেন, আমি ছাত্র লীগের ওয়ার্ড সভাপতি আমার এরিয়ায় পার্বতীপুরের শিক্ষক চাকুরী করবে তা হয় না, তাই আমার বড় ভাইয়ের নির্দেশে আমি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসেছি।
জনতার আলো/শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.