জনতার আলো, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: প্রশাসন দুইবার উচ্ছেদের পর আবারো রাঙ্গামাটিতে বনভিাগের চলাচলের রাস্তায় দোকান নির্মাণ করা হয়েছে।
শহরের বনরূপার বন বিভাগের কার্যালয়ের সামনে ফরেস্ট রোডে রাস্তার অংশ দখল করে এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে দখলদাররা। কেবল শনিবার রাতেই রাস্তার অংশ দখল করে ১৫-২০দোকানের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছে তারা।
এসব অবৈধ স্থাপনার কারণে রাস্তা দিয়ে যান চলাচল ও লোকজনের হাঁটাচলা মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। পবিত্রতার বিনষ্ট ঘটছে পাশের বনরূপা কবরস্থানের। অথচ নির্বিকার স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষ, বন বিভাগ ও প্রশাসন। এসব দেখার মতো নেই কেউ।
এদিকে রোববার অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃংখলা সভায় সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
এসব অবৈধ দখল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির সরাসরি হাত রয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু এমনটার অভিযোগ ংগিকার করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
দখলদার যুবলীগের ব্যানারে সকল অপরাধ করে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগ জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষনেতারা। স্থানীয়রা জানান, এর আগেও রাস্তাটির অংশ দখল করে বহু অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল।
সেগুলো ভাড়া দিয়ে দফায় দফায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে একটি চক্র। তখন স্থানীয় কিছু সচেতন মহলের দাবির মুখে একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান চালায় প্রশাসন। সর্বশেষ চলতি বছরের শুরুর দিকে রাস্তাটির মেরামত কাজ করায় স্থাপনাগুলো গুটিয়ে দেয় রাঙ্গামাটি পৌরসভা।
কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই ফের দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে দখলদাররা। স¤প্রতি মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় ২৫-৩০ অবৈধ স্থাপনা করে দোকান বসিয়েছে তারা।
কেবল শনিবার রাতেই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ১৫-২০ দোকান বসানো হয়েছে। এসব দোকানদারের মধ্যে কৃষি অফিসের কর্মচারী রানা (৪০) আরিফ (৩৮) বাচ্চু মিয়া (৫০), মো. জামাল (৩৫), কাশেম (৪৮), নুরু (৫০) ও রমজান আলী (৩২) বলেন, জায়গার মালিক তারা নন। যারা দখলে আছেন তাদেরকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা দিয়ে দোকানগুলো ক্রয় করেছেন।
দখলদাররা শহর যুবলীগের নেতা কোন পদে আছে জানাইতে পারেনি যুবলীগের শীর্ষ নেতারা। তবে তাদের নাম বলা যাবে না। অন্যদিকে এসব দখলে স্থানীয় যুবলীগ নেতা ইকবাল, নাছির ,রানা,মিজানসহ কয়েক জনের নাম উঠে এলেও এসবে তারা কিছুই জানেন না বলে অভিযোগ অসিকার করেছেন মিজান।
যুবলীগের ৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক নাছির বলেন, আমি দখলে বাঁধা দিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ শোনেনি। উল্টো আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছে।
জেলা আইনশৃংখলা সভায় এসব অবৈধ দখল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকে। এতে বলা হয়, সরকারি রাস্তা প্রকাশ্য দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করায় জনগণের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
এ ধরনের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ জন¯^ার্থ ও আইনশৃংখলা পরিপন্থী। অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। এ বিষয়ে অতিরক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেলা আইনশৃংখলা সভায় উত্থাপিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি বন বিভাগের নয়। তাই বিষয়টি নজরে থাকলেও এ নিয়ে তাদের করার কিছুই নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, এসব অবৈধ দখলে আগে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে পুনরায় জানানো হয়েছে।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামাল উদ্দিন বলেন, রাস্তাটি পৌর এলাকার হলেও দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। এটা সম্পূর্ণ প্রশাসনের কর্তব্য।
জনতার আলো/রবিবার, ১২ আগস্ট ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.