জনতার আলো, মাহবুবুজ্জামান সেতু, জেলা ব্যুরো চীফ, নওগাঁ : ৪৯ নওগাঁ-৪ (মান্দ) আসনের সতন্ত্র এমপি প্রার্থী এসএম ব্রহানী সুলতান মামুদ গামা’র নির্বাচনী প্রচারনার গাড়িতে কি সেদিন কি পাওয়া গেছিলো? এনিয়ে গত কয়েকদিন ধরে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত বুধবার বিকেলে উপজেলার ৫ নং গণেশপুর ইউনিয়নের সতীহাটে নির্বাচনী প্রচারনার পাশাপাশি ট্রাক মার্কার পোষ্টার লাগাতে আসেন এসএম ব্রহানী সুলতান মামুদ গামা’র ছেলে এবং তার অনুসারীরা। এসময় দলীয় নেতা-কর্মীরা তাদের গাড়িতে দেশীয় অস্ত্র আছে মর্মে থানা পুলিশকে জানায়। দলীয় নেতা-কর্মীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতের জন্য সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মান্দা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমান,ওসি তদন্ত আব্দুল গণিসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় উৎসুক জনতা নির্বাচনী গাড়ির আশেপাশে অবস্থান নেয়। অপরদিকে দলীয় নেতা-কর্মীরা বিচার চাই,বিচার চাই বলে শ্লোগান দিতে থাকেন। এসময় গণেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হানিফ উদ্দিন মন্ডল, সাধরণ সম্পাদক আলহাজ্ব হারুন-অর রশিদ সোহেল ,ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম এবং যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেনসহ একাধিক দলীয় নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এমতাবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে আসেন মান্দা উপজলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির মুন্সি। তিনি এসে পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মী এবং উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে ওই নির্বাচনী গাড়িটির ভেতরে সার্স করা হয়। এসময় গাড়ির ভেতর বেশকিছু ট্রাক মার্কার পোষ্টার এবং সারের খালি বস্তায় ইউক্যালিপটাস গাছের কয়েকটি ডাল পাওয়া যায়। এছাড়াও গাড়ির বাহিরে প্রচারনাকারীদের সামাউন (১৫) নামে এক কিশোরের হাতে ব্যাডমিন্টনের কভারের ভেতর একটি দা পাওয়া যায়। এজন্য তাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়। পরবর্তীতে জানা যায় তার বাড়ি নওগাঁ সদরের দয়ালের মোড় এলাকায় এবং সে ওই দয়ালের মোড় চকএনায়েত উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। সে কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয়। সে কাঞ্চন গ্রামে তার নানার বাড়িতে আসার পর সতীহাট গরুহাটি এলাকায় আসে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় তাকে কোন এক সুদর্শন লম্বা ছেলে বলে যে, এ ব্যাগটি রাখো তো; আমি একটু পরে নিচ্ছি বলে সে উধাও হয়ে যায়। এরই এক পর্যায়ে ওই কিশোরের কাছে থাকা কভার তল্লাশি করে একটি দেশীয় অস্ত্র পাওয়া। তবে ওই কিশোরকে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও সে বার বার জানিয়েছে যে,সে কারো সাথে আসেনি। সে কাউকে চিনে না। আকস্মিকভাবে এসে বেকায়দায় পড়ে গেছে। পরে গামার পক্ষের হয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় আসা ছেলেদের সেখান থেকে দ্রুত চলে যেতে বলা হয়। আর ওই কিশোরটিকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। পুলিশ আসার আগে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন। এতে প্রতিপক্ষের লোকজন গামা গ্রুপের একাধিকজকে মারপিট করায় তারা আহত হন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সতন্ত্র এমপি পদপ্রার্থী এস এম ব্রহানী সুলতান মামুদ গামা বলেন, তার নির্বাচনী প্রচারনা বিতর্কিত এবং বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য প্রতিপক্ষের কতিপয় দুষ্কৃতিকারী লোকজন মনগড়া তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার সৃষ্টি করে আসছেন।এরই ধারাবাহিকতায় এমনটি করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মান্দা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, আটককৃত কিশোরের বয়স কম হওয়াই তার অভিভাবক বাবা-মাকে জানানোর পর মুসলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে নির্বাচনী প্রচারনার ক্ষেত্রে সকল প্রার্থীদের সতর্কতার সহিত তাদের প্রচারনা কার্যক্রম পরিচালনা করার আহব্বান জানান তিনি ।
এ ব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন,খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রগণ করা হবে।
জনতার আলো/শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩/শোভন
আপনার মতামত লিখুন :