জনতার আলো, মাহবুবুজ্জামান সেতু, জেলা ব্যুরো চীফ, নওগাঁ : নওগাঁর মান্দায় কবরের ভিতর মৃত মানুষ জীবিত হওয়ার গুজবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার আর কৌতুহলের যেনো শেষ নেই। অলৌকিক হলেও বাস্তব। ঘটনাটি ঘটেছে মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউ’পির উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সামির শাহ্ এর স্ত্রী খোদেজার মৃত্যুকে নিয়ে।
জানাগেছে, মৃত সামিরের স্ত্রী খোদেজা বিবি (৮০) শারিরিক অসুস্ততায় এবং বার্ধক্যজনিত কারনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার রাজশাহীতে মৃত্যবরন করেন। তার মৃত্যুর পর তাকে ওই দিনই সন্ধ্যার পরে পার্শ্ববর্তী গনেশপুর গ্রামে ডাঙ্গার মধ্যে স্বামীর কবেরর পাশে কবরস্থ করে তার সন্তান, নিকটতম আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশিরা।
কিন্তুু আবুলের আমবাগানের কাছে সোমবারে মরহুমার জানাজা শেষে কবরস্থ করার পর পরিবারে সন্তানদের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে তারা সকলে মিলে মৃত মায়ের সৎকাজ, মিলাদ, দোয়া-মাহফিল, কুলখানি অনুষ্ঠান করে কিছু মানুষকে খাইয়ে মায়ের জন্য দোয়া করে নিবে।
সেমর্মে, পূর্বপ্রস্তুতি স্বরুপ খাবার রান্না-বান্না করার জন্য পরদিন সোমবার কাজের লোক লাগিয়ে কবরের পাশে থাকা আম গাছের কাঁচা ডাল কেটে খড়ির ব্যাবস্থা করতে গিয়ে কাজের লোকেরা বুঝতে পারে যে কবরের ভিতর কিসের জানি একটি শব্দ হচ্ছে।
তারা সেখান থেকে ফিরে প্রথমে মরহুমার পরিবারে তার সন্তানদেরকে বিষয়টি জানায়। তাৎক্ষণাৎ বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এভাবে যে, কাজের লোকদের কথা অনুযায়ী তাদের মৃত মা কবরের ভিতর জীবিত আছে।তাছাড়া এভাবে বিকট শব্দ হবে কেনো?
অত্র এলাকায় এমন খবর মুহুর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়লে কবর দেখার জন্য হাজার হাজার কৌতুহলী উৎসুক জনতার ভীড় জমতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে লোকজন জেনে না জেনে একের পর এক নানান আজে বাজে মন্তব্য করতে থাকে।
অনেকের ধারনা যে মৃত মানুষটি মনে হয় এখনো জীবিত আছে। তা না হলে কবরের ভীতর শব্দ করবে কে? আবার কারো মন্তব্য যে মৃত মহিলাটির অনেক বয়স জীবিত অবস্থায় তার মুখের দাঁত পরে যাওয়ায় কৃতিমভাবে লাগানো দাঁতের হয়তোবা এমন শব্দ হয়ে থাকতে পারে।মৃত মানুষটিকে নিয়ে যেনো হেয়ালিপনার শেষ নেই।
সোমবারে খোদেজা বিবি মারা যাওয়ার পর কবরস্থ করার পর মঙ্গলবার থেকে আজ অবধি মানুষের যেনো কৌতুহলের শেষ নেই। মানুষের মনমানষিকতা কতটা খারাপ হলে একজন মৃত মানুষকে নিয়ে এমনটি কুচিন্তা করতে পারে তা কি একবার ভেবে দেখেছেন? এ যেনো মরার উপরে খারার ঘাঁ।
মানুষের কৌতুহলে হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ায় বাধ্য হয়ে মরহুমার সন্তানেরা মৌলভীদের ফতুয়া উপেক্ষা করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের কবরের খারাল তুলে ফেলে মাটি সরিয়ে দেখে যে, তাদের মৃত মায়ের কবরের ভিতর কয়েকটি ইদুর মাটি এবং ধান ফেলতিছে।
আর ওই ধান ও মাটি পরার শব্দটাকে মানুষ একেকজন একেকভাবে মিথ্যাচার করেছে। যা খুবই দু:খজনক বলে দাবি করেন নিহতের ছেলে মুকুল।
মকুল জানায়, আমার মায়ের কবরের পাশে বাবার কবর। আর বাবার কবরের ভিতরে থাকা ইদুরগুলোই মায়ের কবরের ভিতর মাটি ফেলতিছে। কিন্তু কোনো উপায় নেই। আমরাতো আর ইদুর মারার জন্য বাবার কবর খুঁরতে পারি না। যারা আমার মৃত মায়ের মৃত্যকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে।
যারা আমার মার নামে মিথ্যা চার করেছে তাদের বাড়িতে খোঁজ নিলে হয়তোবা জানা যাবে যে তারায় তাদের মা ও বাবা কে ভাত কাপড় বা ঔষুধপত্রই ঠিক মতো দেয় না। আর সে জন্যই হয়তোবা এমন মিথ্যাচার।
নিহত মা তো আমাদেরই আর তাই আমরা মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই মাকে দাফন কাফন শেষে কবরস্থ করছি। মাকে আল্লাহ জান্নাত নসিব করুন।আমিন।
জনতার আলো/শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.