জনতার আলো, নোয়াখালী রিপোর্টার: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও গণধর্ষণের ঘটনায় হাসান আলী ভুলু নামে আরেক হোতাকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হলো।
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ইলিয়াছ শরীফ জানান, শুক্রবার দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাসান আলী বুলুকে চরজব্বার থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। এসপি আরো জানান, এই বুলুই ১০ হাজার টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটায় বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে। এর আগে ভোটের দিন বুলুর সাথে ভুক্তভোগী নারীর কথা কটাকাটি হলে বুলু তাকে হুমকি দেয় বলেও জানান তিনি। বুলু সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের ব্যক্তিগত সহকারী।
এর আগে শুক্রবার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রামের নাজিরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার আরেক আসামী জসিম উদ্দিনকে (৩০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জসিম সুবর্ণচরের চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মোতাহের হোসেনের ছেলে। জসিম পেশায় কলা বিক্রেতা। ঘটনার পর সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। মামলার তদন্তে ঘটনার সাথে জসিমের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে রাতেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে অভিযানে নামে চরজব্বার থানা পুলিশের একটি টিম।
এনিয়ে এই মামলায় মোট সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। তাদের মধ্যে একজন সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। চারজন ইটভাটা শ্রমিক, একজন ইটভাটার মাঝি। মামলার অপর আসামিদেরকে ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। এই মামলায় দ্রুত চার্জশীট দাখিল করা হবে বলে জানান এসপি।
এদিকে ভুক্তভোগীকে দেখতে শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে যান বাংলাদেশের কমিনিস্ট পার্টির( সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের সবাইকে গ্রেপ্তার ও দ্রুত আইনে মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান। এ ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে না দেখে অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। নির্বাচনের নামে ক্ষমতা দখলের যে মহোৎসব হয়েছে তা কারো জন্য শুভ নয়। প্রতিনিধি দলের সাথে ছিলেন বজলুর রশিদ, আকবর খান, আবদুস সাত্তার ও মাইন উদ্দিন চৌধুরী লিটন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবার রাতে চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের সোহেল, হানিফ, স্বপন, চৌধুরী, বেচু, বাসু, আবুল, মোশারেফ ও ছালাউদ্দিন ৪০ বছর বয়সী এক নারীর বসতঘর ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে তারা ওই নারীর স্বামী ও মেয়েকে বেঁধে রেখে তাকে ঘরের বাইরে নিয়ে গণধর্ষণ করে ও পিটিয়ে আহত করে। পরদিন ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী ৯ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করেন।
জনতার আলো/শুক্রবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.