জনতার আলো, মো.প্রান্ত পারভেজ তালুকদার : তীব্র তাপদাহে পুড়ছে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশ। এতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে মানুষের জনজীবন। এই গরমের মধ্যেই পানি সংকট দেখা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটির ৩নং ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায়। বিশুদ্ধ পানি ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই এলাকায় গত একমাস হলো পানির তীব্র সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে গোসল, খাওয়া ও রান্নাসহ নিত্যব্যবহৃত কাজ স্থবির হয়ে পড়ায় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত প্রায় দেড় মাস থেকে ওয়াসার পানি নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। পানি কখন আসবে সে আশায় বসে থাকলেও পানির দেখা পাচ্ছেন না, এমন কি দিন আর রাত মিলে এক ঘণ্টাও পানি পাচ্ছেন না তারা। তাই বাধ্য হয়ে খাওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ সারতে দোকান থেকে কিনছেন বিশুদ্ধ পানি। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি জানিয়েছেন এভিনিউ-৫ ও এভিনিউ-৪ সবুজ বাংলাবাসি। গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকায় পানি সংকটও তীব্র হয়ে উঠেছে।
পানির এমন সংকটের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বলেও অভিযোগ তাদের। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এলাকা সূত্রে জানা যায়, গরমকালের এই পানি সংকট নিরসনের জন্য গত দুই বছর আগে ৩নং ওয়ার্ড এর এভিনিউ- ৪ সবুজবাংলা আবাসিক এলাকার প্রতিটি বাড়ি থেকে মোট দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয়, তারপর থেকে দুই বছর পানির আর কোন সমস্যা ছিল না। হঠাৎ করে গত ১ মাস থেকে আবারও নতুন করে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি টাকা খরচ করার পরেও কোনো সুফল মেলেনি ভাগ্যে। বাসিন্দাদের দাবি এত টাকা ব্যয় করার পরেও কেন স্থায়ী ভাবে সমাধান হলো না??
এলাকা সূত্রে আরো জানা যায়, ৩ নং ওয়ার্ড এর এভিনিউ ৫ পাম্পের ভিতরের বেশ খানিক জায়গা দখল করে রেখেছে একটি চক্র। সেই কারণে নতুন কূপ খনন করতে না পারায় পানির সংকট যেন দিন দিন বেড়েই চলছে। এলাকাবাসীর দাবি পাম্পের জায়গা দখলকারীদের দ্রুত উচ্ছেদ করে নতুন কূপ খননের মাধ্যমে পানির সংকট থেকে মুক্তি চায় তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর- ১১, ব্লক-সি, এভিনিউ-৫, এভিনিউ-৪, সবুজ বাংলা আবাসিক এলাকা ছাড়াও, আদর্শনগর ও তালতলাবস্তিসহ পল্লবীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির এই তীব্র সংকট। কেউ কেউ বাসার লাইনে পানি না পেয়ে সরাসরি যাচ্ছেন ওয়াসার পাম্পে বা পাশের যেকোনো মসজিদে। পাম্প বা মসজিদ থেকে কলসি, বালতি ও বোতলে ভরে বাসায় পানি আনতে দেখা যায় তাদের। পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে কখনও কখনও এলাকাবাসী ও পাম্পের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও দুর্ব্যবহারও করতে দেখা গেছে।
আবার কেউ কেউ বলছে ওয়াসার অসাধু কিছু কর্মকর্তা ও এলাকার একদল পানি সিন্ডিকেটের যোগসাজশে না কি এই কৃত্রিম সংকট দেখানো হচ্ছে। পরবর্তীতে এলাকার সেই পানি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছে দ্বিগুণ দামে ওয়াসার গাড়ি দিয়ে পানি বিক্রি করছেন তারা। এর আগেও এই সিন্ডিকেটের নাম সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়েছিল। তাই এই পানি সিন্ডিকেটের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে ঢাকা ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার জনসাধারণ।
তবে এ ব্যাপারে ওয়াসার লাইনম্যান বলেছেন, ভূগর্ভে পানি কমে যাওয়ার কারণেই এই সংকট দেখা দিয়েছে।
জনতার আলো/ মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.