জনতার আলো, শিক্ষা ডেস্ক: ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে অথবা অন্য কোনো উপায়ে প্রশ্নফাঁসে জড়িত কাউকে ধরিয়ে দিলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
রোববার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে জাতীয় মনিটরিং এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস যে বা যারা করছে, তাদের ধরিয়ে দিলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।’
১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকলে এই দুই পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ বৈঠক হয়। যে দুটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, সে দুটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করে দেখতে বৈঠকে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে বেলা সোয়া ৩টার দিকে শুরু হওয়া সভায় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সভার শুরুতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন ফেসবুকে আসল বা নকল যাই হোক- প্রশ্নপত্র নিয়ে কোনো পোস্ট দেওয়ায় জড়িতকে ধরিয়ে দিলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
সচিবের বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা।
সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, পুলিশ, র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়।
এছাড়া, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি), ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক এবং আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনীর প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি জানান, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পূর্বের সিদ্ধান্তসমূহ কার্যকর থাকবে। এ ছাড়া প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত বা ধরিয়ে দিতে পারলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। পরীক্ষা মনিটরিং ও প্রশ্ন ফাঁস এবং পরীক্ষা যথাযথ হয়েছে কি না, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের নেতৃত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে সুপারিশ পেশ করবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ভিজিল্যান্স টিম আরো জোরদার করা হবে। পরীক্ষা শুরুর আধা ঘন্টা আগে প্রশ্নের মোড়ক খোলার সময় স্থানীয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা, একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রসচিবের যৌথ স্বাক্ষরে খোলা হবে।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনো মোবাইল বা অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে কোনো শিক্ষার্থী, কর্মকতা বা কর্মচারী প্রবেশ করলে তাকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করা হবে। সকল শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর আধা ঘন্টা আগে অবশ্যই তাদের নিজ নিজ আসনে বসতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা প্রশ্ন ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়াচ্ছে, কার্যক্রম দেখে এ কথা প্রতীয়মান হয়, তাদের লক্ষ্য সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে হেয়প্রতিপন্ন করা। এজন্যই পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে ধরা পড়বে। তাদেরকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
জনতার আলো/রবিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.