জনতার আলো, শিক্ষা ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে (ডিপিই) চলছে ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮’ এর লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি। ১৫ মার্চ থেকে এ পরীক্ষা শুরু করতে চলছে যাবতীয় প্রস্তুতি। তবে প্রথম ধাপে দেশের ছোট জেলায় লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এবার পরীক্ষা পদ্ধতিতে আসছে আমূল পরিবর্তন। প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা কয়েকটি ধাপে আয়োজন করা হবে। যেসব জেলায় লিখিত পরীক্ষা আগে শেষ হবে সেখানে আগেই মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে ডিপিইর মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ১৫ মার্চ শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা পাঁচ থেকে ছয়টি বা তারও বেশি ধাপে আয়োজন করা হতে পারে।’
তিনি বলেন, যেসব জেলায় ৫০ হাজার বা তার বেশি আবেদনকারী সেখানে একাধিক ধাপে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মতামতের উপর এটি নির্ভর করবে। তবে প্রথম ধাপে জয়পুরহাট, নড়াইলসহ এমন ছোট জেলাগুলোতে পরীক্ষা শুরুর কথা ভাবা হচ্ছে।
জানা গেছে, এবার নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে হবে। নির্ধারিত জেলায় পরীক্ষা আয়োজনের আগের রাতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রশ্নপত্রের সব সেট পাঠানো হবে। পরীক্ষার দিন সকাল ৮টায় প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে তা কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে।
ডিপিইর কর্মকর্তারা জানান, গতবারের চেয়ে এবার জমা পড়েছে দ্বিগুণ আবেদন। গত নিয়োগে প্রায় ১২ লাখ আবেদন পড়েছিল। এবারে ১২ হাজার পদের বিপরীতে জমা পড়েছে ২৪ লাখের বেশি আবেদন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে চার লাখ ৫২ হাজার ৭৬০, চট্টগ্রামে তিন লাখ ৮২ হাজার ৩৩৫, রাজশাহীতে তিন লাখ ৬২ হাজার ৯২৫, খুলনায় দুই লাখ ৪৮ হাজার ৭৩০, বরিশালে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৮২৭, সিলেটে এক লাখ ২০ হাজার ৬২৩, রংপুরে দুই লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৮ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুই লাখ ৮২ হাজার ৪৩৭ জন আবেদন করেছেন।
কর্মকর্তারা জানান, পাশাপাশি বসা পরীক্ষার্থীদের কেউ যাতে একই সেটের প্রশ্নপত্র না পায় সেই জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রার্থীদের প্রশ্নের সেট নির্ধারণ করা হবে। পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরের ওপর প্রশ্ন সেট নির্ধারণ করা হবে। এবার পরিদর্শক নিয়োগের ক্ষমতা কেন্দ্র সুপারের কাছে থাকছে না। এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে অন্য প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দেয়া হবে। সেন্ট্রাল থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শকদের শুধু দায়িত্ব বুঝে দেবেন কেন্দ্র সুপার।
মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত ও প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নিয়োগ পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পরীক্ষার দিন প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে বাড়তি নিরাপত্তা রাখা হবে। কেউ কোনো অনৈতিক কাজ করলে বহিষ্কারের পাশাপাশি তার খাতাও বাতিল করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা পদ্ধতি ডিজিটালাইজড করতে বুয়েটের সহায়তায় একটি আধুনিক সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এটির মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর আসন বিন্যাস, পরিদর্শক নির্বাচনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’
ডিপিই কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেয়ার জন্য ২০ সেটের বেশি প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। পরীক্ষার সময়সূচি, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, ফলাফল প্রকাশ কার্যক্রম কোন পদ্ধতিতে হবে তা বুয়েট নির্ধারণ করবে। তবে আগের মতোই লিখিত পরীক্ষা ৮০ নম্বর ও ভাইভায় ২০ নম্বর থাকবে।
প্রার্থীরা dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। এ ছাড়া ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলী এবং পরীক্ষা-সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd এ পাওয়া যাবে।
জনতার আলো/শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.