জনতার আলো, মাদারীপুর প্রতিনিধি: চার বছর বন্ধুত্বের সম্পর্ক। একে অপরের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত। দুই জনকে প্রেমিক যুগল হিসেবেই জানত অন্যরা। কিন্তু এর মধ্যে ঝরল রক্ত।
মঙ্গলবার রাতে মেয়েটির বাসায় ঢুকে ব্লেড দিয়ে তার দুই গাল কেটে পালিয়ে যায় ছেলেটি। রাতেই গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার পর বুধবার ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মাদারীপুর শহরেই বাড়ি দুইজনের। দুইজনের বন্ধুত্বের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাদের পরিবারও। কিন্তু চার বছরের সুসম্পর্কের পর কিছুদিন ধরে আবার সম্পর্কে ভাটা পড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ছেলেটি জানতে পারে, তাকে অবহেলা করে মেয়েটি অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছেলেটি মেয়েটির বাড়িতে যায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কাছে থাকা ব্লেড দিয়ে মেয়েটির দুই গাল কেটে ফেলে ছেলেটি।
মেয়েটির চিৎকারে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ মেয়েটিকে দেখতে হাসপাতালে যায়। ওই রাতেই মামলার পর ছেলেটিকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় খোয়াজপুরের টেকেরহাট থেকে ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ছেলেটির দাবি, তার সঙ্গে মেয়েটির প্রেম ছিল। তবে মেয়েটি তা অস্বীকার করছে। একই কথা বলছে তার স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মেয়েটিকে এভাবে রক্তাক্ত করেছে ছেলেটি।
মেয়েটির ভগ্নিপতি বলেন, ‘আমার শ্যালিকাকে অনেক দিন ধরে সে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্তও করত। এ জন্য আমার শ্যালিকা কলেজ ও প্রাইভেট পড়তে যেতে ভয় পেত। কিছুদিন যাবত কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।’
ছেলেটির বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে কাউকে ভালোবাসতে পারে। তার সাথে ওই মেয়ের চার বছর ধরে প্রেমের সর্ম্পক রয়েছে। কিন্তু বাসায় ঢুকে কোনো মেয়েকে জখম করে আসা, এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য এমনটা করা হচ্ছে।’
মাদারীপুর হাসপাতালের চিকিৎসক আসিফ আল-নাঈম বলেন, ‘গাল কাটা অবস্থায় কেয়া নামে একটি মেয়ে চিকিৎসা নিতে আসে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় একটি মেয়েকে কোপানোর খবর পেয়ে মেয়েটিকে দেখতে আমি হাসপাতালে ছুটে যাই। মেয়েটির পরিবার তিনজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেছে, মামলা নিয়েছি। ইতোমধ্যে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি, অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টার পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত চলছে।
জনতার আলো/বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.