জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েক মুহুর্তের বৃষ্টিতেই রাজধানীর কোথাও কোথাও জমছে হাটু পানি, আর কোথাও বা কোমর পর্যন্ত। ফলে আকাশে মেঘ করে এলে পানি জমার আতংকও ভর করে রাজধানীবাসীর মনে। এই আতংক জলাবদ্ধতায় চলাফেরার। বর্ষার আগেই এমন জলজটের মুখোমুখি হওয়ায় ভারী বর্ষণের সময় দুর্ভোগের মাত্রা নিয়েও শঙ্কিত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবোদয় হাউজিং এলাকায় পয়ঃনিস্কাশন খালের পানি রাস্তায় পৌঁছায় মাত্র আধ ঘন্টার বৃষ্টিতেই। রবিবার দুপুরের আধ ঘন্টার বৃষ্টিতে এই এলাকার রাস্তায় জমেছে হাটু পানি। নালা-নর্দমার ময়লা পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি একাকার হওয়ায় লোকজনকে পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে। আর জলাবদ্ধতার অজুহাতে বেড়েছে রিক্সা ভাড়া। সাধারণ যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া।
স্থানীয় বাসিন্দা হিমেল বিশ্বাস জানান, বৃষ্টি হলেই এটা এখানকার চিত্র। ১০ মিটিট বৃষ্টি হলেই পানি জমে। রিক্সা চালকেরাও অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে। সিটি কর্পোরেশন কি এর সুরাহা করবে না?
এই এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে খালের জমে থাকা ময়লা। এই কারণে ব্যাহত হচ্ছে পানির অবাধ প্রবাহ।তবে চলতি মাসের শুরুতেই খাল পরিস্কার ও খননের কাজ শুরু করে তারা।
এদিকে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমেছে লালমাটিয়া এলাকার সি ব্লকের অধিকাংশ রাস্তায়। এতে করে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। বৃষ্টি হলেই ব্লক সি হয়ে মিরপুর রোডে যাওয়ার রাস্তাগুলোর অবস্থা পানির দখলে থাকে।
একই চিত্র ধানমন্ডি এলাকায়। এই অভিজাত এলাকার ৮/এ এবং ১০/এ সড়কে জলাবদ্ধতার চিত্র চোখে পড়ার মতো। এখানে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের।
মাস্টার মাইন্ড স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ঢাকাটাইমসকে অভিযোগ করেন, ‘ধানমন্ডির মতো একটি এলাকায় এ ধরনের জটিলতা মানা না। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল থেকে বের হয়ে হাটু পানি ভেঙে বাড়ি ফিরতে হয়। বৃষ্টির পরে দুই তিন ঘন্টা পানি জমে থাকে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
বৃষ্টি হলেই রাজধানীর যে জায়গাগুলো প্লাবিত হয়, তার মধ্যে অন্যতম ধানমন্ডি ২৭ নম্বর। রবিবার দুপুরে দেখা গেছে, রাপা প্লাজার সামনে জমেছে হাটু পানি। যান চলাচলসহ ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষের চলাচল।
পথচারী সোবাহান নামের এক জন জানান, ‘বিপদে পড়ে গেছি। এই রাস্তায় আসাই উচিত হয় নাই। রিক্সায় ছিলাম। এখন রিক্সাওয়ালাও পানি দিয়া যাবে না।’
রাজধানীর গোটা মিরপুর এলাকাজুড়েও একই সমস্যা। পশ্চিম শেওড়াপাড়া এলাকায় কালভার্ট সংলগ্ন বাসাগুলোতেও পানি ঢুকেছে ঘন্টা খানেকের বৃষ্টিতে। একই অবস্থা মিরপুরের সাংবাদিক কলোনী খাল সংলগ্ন এলাকা, কালশী, মিরপুর ১ নম্বর মাজার রোড ও লালকুটি এলাকায়।
মিরপুর মাজার রোড এলাকার বাসিন্দা মো. সুজন দেওয়ান ঢাকাটাইমসকে অভিযোগ বলেন, ‘রাস্তা সেই কবে খুঁইড়া রাখছে, এখনো কোনো সমাধান নাই। অবস্থা যা ছিল তাই আছে। বৃষ্টি হলেই বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’
বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হলেই অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে রিক্সা চালকেরা। কোথাও কোথাও তারা ভাড়া দাবি করছেন স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি। ফলে পানি জমলেই বহুমুখি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রাজধানীর উত্তরাংশের অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দাদের।
এই অবস্থায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের তৎপরতা প্রত্যাশা করছেন বাসিন্দারা। এদিকে দ্রুত এই সংকট নিরসনের আশ্বাস দিলেন ঢাকা উত্তরের প্যানেল মেয়র ডেইজি সারোয়ার।
জনতার আলো/রবিবার, ১৩ মে ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.