জনতার আলো, স্টাফ রিপোর্টার: গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের ঘর বানিয়ে দেবে ভারত।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা জানান।
বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পাশে ভারতের যেভাবে দাঁড়ানো প্রয়োজন ছিল সেভাবে দাঁড়ায়নি-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা তো রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করেছি।আমরা ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য এক হাজার মেট্রিকটন ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছি। আরও দেব। এছাড়া রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে গেলে তাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেব।’
গত আগস্ট মাস থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে থাকে। এই কয়েক মাসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করলেও শুরু থেকেই ভারত এ ব্যাপারে আশানুরূপ সাড়া দেয়নি। তবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতও ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য।
সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে। তবে গত মঙ্গলবার থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার কথা থাকলেও কিছু জটিলতার কারণে তা এখনই হচ্ছে না।
ভারতীয় হাইকমিশনারকে অমীমাংসিত তিস্তা পানি চুক্তির ব্যাপারেও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি জানান যেকোনো সময় এই চুক্তি সম্পাদিত হতে পারে।
সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংকালে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে সম্পন্ন হবে তা এদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে মির্জাপুরে দানবীর রণদা সাহা প্রতিষ্ঠিত কুমুদিনী কমপ্লেক্স পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ভারতীয় হাইকমিশনার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি নবনীতা চক্রবর্তী, প্রেস অ্যাটাসিভ রঞ্জন মন্ডল।
সকাল সাড়ে দশটার দিকে ভারতীয় হাইকমিশনার কুমুদিনী কমপ্লেক্স চত্বরে পৌঁছালে সেখানে তাকে স্বাগত জানান কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা, ভাষা সৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দি, কুমুদিনী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল হালিম, পরিচালক ডা. দুলাল চন্দ্র পোদ্দার, সহকারী প্রশাসক সৈয়দ হায়দার আলী প্রমুখ।
পরে তিনি কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ নাসিং স্কুল ও কলেজ পরিদর্শন করেন। এ সময় হাইকমিশনার ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রীদের মনোজ্ঞ শারীরিক কসরত উপভোগ করেন। পরে সেখানে তিনি ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
বক্তৃতায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ আত্মত্যাগ করেছে। তরুণ প্রজন্মকে যা অনুপ্রাণিত করবেন বলে তিনি আশা করেন। এ সময় তিনি কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার মানব কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের ভূয়ষী প্রশংসা করেন।
জনতার আলো/বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.