জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: এক এক করে তিন দিন পার করে চতুর্থ দিনে পা দিয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এরই মধ্যে চলে গেছে একটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এরপরও ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি।
মেলার উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম সব দিকেই রয়েছে অসম্পূর্ণ স্টল। ভিআইপি গেট থেকে সার্ভিস গেট পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় চলছে স্টল প্রস্তুতের কাজ। দর্শনার্থীদের কানে আসছে কাঠ, হাতুড়ি, পেরেকের ঠক ঠক আওয়াজ।
কাজ শেষ না হওয়া এসব স্টলের মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠান যেমন আছে, তেমনি আছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানও। দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সিংহভাগই ছোট প্রতিষ্ঠান। বড় প্রতিষ্ঠান দুই-একটি অসম্পূর্ণ থাকলেও বেশির ভাগই মেলার প্রথম দিন থেকেই বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।
এবার বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের মধ্যে রয়েছে- ভারত, পাকিস্তান, চীন, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, মরিশাস, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, রাশিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, সোয়াজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং হংকং।
এবারের মেলায় সবমিলিয়ে ৫৫০টি স্টল থাকার কথা রয়েছে। এর মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা স্টল ২০টি, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৮টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৮, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ২৯টি, প্রিমিয়ার স্টল ৬৭টি, রেস্টুরেন্ট তিনটি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ৯টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৬টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ৯টি, বিদেশি প্রিমিয়ার স্টল ১৩টি, সাধারণ স্টল ২০১টি এবং ফুড স্টল ২২টি।
মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, মেলায় মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক ও পর্যাপ্ত এটিএম বুথ রয়েছে। আছে রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এছাড়াও তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার সামগ্রী কিনতে পারবেন ক্রেতারা।
ভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করে পশ্চিম দিকে একটু অগ্রসর হলেই চোখে পড়বে থাইল্যান্ড, চীন ও ভারতীয় পণ্যের একটি প্যাভিলিয়ন। সেখানে তিন দেশের পণ্য পাওয়া গেলেও এখনও স্টল গোছানোর কাজ শেষ হয়নি।
সেখানে কথায় হয় মো. সাইদুর নামের একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা একটু দেরিতে কাজ শুরু করেছি। সাধারণত মেলার প্রথম দিকে বিক্রি খুব একটা হয় না। তবে আমাদের সব কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই সব স্টলের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
সেখান থেকে একটু দক্ষিণ দিকে এগিয়ে দেখা যায়, সারি সারি বেশ কয়েকটি স্টলের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন এসব স্টলে দেশি পণ্য প্রদর্শন করা হবে। স্টল প্রস্তুতের কাজে ব্যস্ত খাইরুল বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।
মেলায় সব থেকে বেশি অপ্রস্তুত স্টল দেখা গেছে সার্ভিস গেটের পাশে বা পশ্চিম দিকে। ওই অংশে বেশিরভাগ স্টলেরই কাজ শেষ হয়নি। একটি স্টলের মেরামত কাজে ব্যস্ত ফারুক হোসেন বলেন, আমরা কাজ শুরু করেছি মেলা শুরু হওয়ার পরে। আমাদের যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।
শুধু ছোট স্টল না বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ও কিছু স্টলের কাজ এখনও শেষ হয়নি। মেলার প্রায় মাঝ বরাবর দেখা যায় দৃষ্টিনন্দন ভাবে চলছে একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নের নির্মাণ কাজ। তবে ওই প্যাভিলিয়নটি কোন প্রতিষ্ঠানের তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজে ব্যস্ত একজন বলেন এটি সম্ভবত মার্ক বাংলাদেশের। নিজের নাম না জানিয়ে তিনি বলেন, এ সপ্তাহের মধ্যেই প্যাভিলিয়নের সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। কাজ শেষ হলে প্যাভিলিয়নটি যে কোনো দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়বে।
জনতার আলো/শনিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৯/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.