জনতার আলো, মনিকগঞ্জ ঘিওর রিপোর্টার: মনিকগঞ্জের ঘিওরে বিদেশে পাঠানোর নামে অর্থ নিয়ে প্রতারণা ও ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগকারী সালমা বেগম (৩৭) বাদী হয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ বিজ্ঞ জজ আদালতে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল মানব পাচার প্রতিরোধ দমন ও আইন- ২০১২- এ মামলা দায়ের করেছেন। (মামলা নং:- ১৫/২০১৮)।
মামলায় উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, ১। স্বপন মাহমুদ (৩২) পিতা: কাদের মোল্লা, পোষ্ট: ঢেউথালি, থানা: সদরপুর, জেলা: ফরিদপুর, ২। মো: মুসা (৩৩) পিতা: আব্দুল মোতালেব খান, ঠিকানা: বাড়ি নং: ২৭, (তৃতীয় তলা), রোড নং:- ১৬, রূপনরগ আবাসিক এলাকা, মিরপুর ঢাকা ১২১৬, ৩। এম এ রশিদ (৩৫) পিতা: মৃত মনির উদ্দিন বেপারী, সাং আকটের চর, পোষ্ট আকটের চর, থানা সদরপুর জেলা: ফরিদপুর, বর্তমান ঠিকানা: প্লট নং:- ০৯, রোড নং:- ০২, সেকশন:- ৭, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬। ৪। আব্দুল কালাম আজাদ (৩৩) পিতা: মো: গোলাম মোস্তফা, প্লট নং:- ০৯, রোড নং:- ০২, সেকশন- ৭, মিরপুর-১১, ঢাকা- ১২১৬. ৫। মো: মামুন (৩২) পিতা: আব্দুল হামিদ, ঠিকানা: প্লট নং:- ০৯, রোড নং:- ০২, সেকশন-০৭, মিরপুর-১১, ঢাকা- ১২১৬।
বাদিনীকে কাতার পাঠানোর কথা বলে, ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণা ও ধর্ষন করার পর চট্টগ্রাম থেকে ট্টলারযোগে পাচারের চেষ্টা করে।
বাদিনীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, আসামীগনের বাড়ি ও বাদিনীর পিতার বাড়ি একই এলাকাতে হওয়ায়, আসামীগন তার পূর্ব পরিচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মামলায় উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী জানা গেছে গত ০৭/০৩/২০১৮ইং উক্ত আসামীগন মানিকগঞ্জের ঘিওরে বাদিনীর বর্তমান ঠিকানায় ঘিওর পূর্বপাড়া এসে, বাদিনী সালমাকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে।
এজন্য তাদেরকে খরচ বাবাদ ১,৫০,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ও ১০ কপি ছবি ও পাসপোর্ট দিতে হবে বলে বাদিনীকে জানায়।
বাদিনী গার্মেন্টস- এ কাজ করে কোনমতো সংসার চালাতেন। একটু সুখের আশায় তিনি আসামীদের প্রলোভনে রাজী হয়ে যান। তিনি আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার- কর্জ করে টাকা সংগ্রহ করেন এবং সরল বিশ্বাসে আসামীদের হাতে তুলে সেই টাকা দেন। আসামীগণ তাকে কেনাকাটা করে তৈরি থাকতে বলে।
এর কয়েকদিন পর আসামীগন একটি মাইক্রোবাস নিয়ে বাদিনীর বাড়িতে আসে এবং কাতার পাঠানো হবে বলে তুলে নিয়ে যায়। ঘিওর থেকে ঢাকা ২/৩ ঘন্টার রাস্তা হলেও দীর্ঘসময় অভিবাহিত হয়।
এসময় তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে বাদিনী জানতে চায়। তাখন আসামীগন তাকে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্র্ট থেকে পাঠানো হবে বলে জানায়।
চট্টগ্রাম গিয়ে আসামীগন বাদিনীকে জানায়, ফ্লাইট একদিন দেরী হবে। এজন্য তারা বাদিনীকে নিয়ে একটি হোটেলে উঠে। এরপর হোটেলে আসামীগন বাদিনীকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষন করে। পরদিন সকালে তারা বাদিনীকে একটি ট্রলারে উঠিয়ে দেয়।
কিছুদূর যাওয়ার পরই আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বাদিনী পানিতে ঝাঁপ দেন। তখন জেলেরা তাকে মাছ ধরার নৌকায় টেনে তুলে চিকিৎসা করান এবং বাদিনীর ঠিকানায় পৌঁছে দেবার ব্যাবস্থা করেন। বাদিনী সালমা সুস্থ হয়ে মানিকগঞ্জ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে স্থানীয়দের দেয়া তথ্য অনুযায়ি জানা গেছে, উক্ত আসামীরা বাদিনীকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ১,৫০,০০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা বাদিনীকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।তারা উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির জন্য, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
বর্তমানে বাদিনী আসামিদের হুমকির মুখে দিন যাপন করিতেছে। আসামীগণ বাদিনীকে মামলা তোলার জন্য জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে।
বাদিনী নিরুপায় হয়ে গত ১৬/০৫/২০১৮ইং তারিখে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন জিডি নং- ৭৯০। এবং ১৮/০৫/২০১৮ইং তারিখে পল্লবী থানায় আর একটি সাধারন ডায়েরী করেন, জিডি নং- ১৪২১।
জনতার আলো/রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.