জনতার আলো, স্পোর্টস রিপোর্টার: অন্য সাধারণ দিনগুলো থেকে সিলেটের আবহাওয়া ছিল ব্যতিক্রম। হালকা বাতাস আর সঙ্গে ছিল কুয়াশা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জ্বলেছে ফ্লাডলাইটও। সূর্যের আলোর দেখা মিলেছে পড়ন্ত বিকেলে এসে। সেই আলোতে রোশনাই ছড়ালেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত-আল আমিন। দুজনের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে বিসিবি সাউথজোনকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। একই দলকে হারিয়ে এর আগে বিসিএলের চারদিনের আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়ালটন সেন্ট্রাল।
৪২ ওভার শেষেই সাউথের সমান স্কোর হয় ওয়ালটন সেন্ট্রালের। ৪৩ ওভার করতে এলেন ফরহাদ রেজা। প্রথম দুই বলে কোন রান নেননি। তৃতীয় বলে শর্ট কাভারে ঠেলে দিয়ে মোসাদ্দেক দিলেন ভোঁ দৌড়। এ পাশে এসেই স্ট্যাম্প তুলে নেন তিনি। এরপর শুরু হয় বিজয়োল্লাস। ডাবলস জয়ের উল্লাস।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) ফাইনালে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ১৬৩ রান করে বিসিবি সাউথ। ৪৫ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় ওয়ালটন সেন্ট্রাল। মোসাদ্দেক ৩৩ ও আল আমিন ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৮৮ রান।
লড়াইটা শুরু হয়েছিল ৭৬ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর। এরপর দেখে শুনে বুঝে খেলছেন দুজনে। সিঙ্গেল-ডাবলসের সঙ্গে ছিল বাউন্ডারির মার। তবে ভাগ্যও সহায় ছিল। সহজ ক্যাচ ফেলেছেন নাসুমরা।
শুধু ব্যাট নয় ওয়ালটন সেন্ট্রালের অধিনায়ক মোসাদ্দেক বল হাতেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্যাটে-বলে নৈপূণ্য দেখিয়ে ওয়ালটন সেন্ট্রালকে চ্যাম্পিয়ন করতে রেখেছেন দারুণ ভূমিকা।
রান তাড়া করতে নেমে মিজানুর রহমান-সৌম্য সরকার দুর্দান্ত শুরু এনে দেন। বলে-রানে ছিল প্রায় সমান। উদ্বোধনী জুটি ৫০ ছড়িয়ে পার করে ফেলে ৬০ রানের ঘরও। তখনই বাগড়া দিলেন নাসুম আহমেদ। ২১ রান করা সৌম্যকে ফেরান সাজঘরে। ভেঙে যায় মিজানুরের সঙ্গে গড়া ৬৫ রানের জুটি।
সৌম্যর আউটের পর স্কোরবোর্ডে ১১ রান যোগ না হতেই ওয়ালটন সেন্ট্রাল আরও তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিজানুর ফেরেন নাসুমের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৩ বলে ৩৯ রান। দুই অঙ্কের ঘর ছোঁয়ার আগেই ফেরেন আবদুল মজিদ (১) ও মোহাম্মদ মিঠুন (৪) । সবশেষ দুই ম্যাচে মিঠুন অসুস্থ থাকায় দলে ছিলেন না। ফাইনালের মঞ্চে ফিরেও রাঙাতে পারেননি।
বিসিবি সাউথের হয়ে সর্বোচ্চ নাসুম একাই নিয়েছেন ৩ উইকেট।
এর আগে পিনাক-বিজয় বিসিবি সাউথের শুরুটা এনে দিয়েছিলেন দারুণ। দুজনের পঞ্চাশ রানের জুটি পার হতেই তাদের থামিয়ে স্বস্তি এনে দেন নাজমুল ইসলাম অপু। ২০ রানে বিজয় ফিরলে ৫১ রানে ভাঙে জুটি। এরপর সৌম্যর বলে ওপেনার পিনাক ঘোষও ফেরেন একটু পরেই। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান।
দুজন ফেরার পর নতুন ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয় অপুর শিকার হয়ে ফেরেন শূন্যরানে। অমিত হাসান-জাকির হাসান খেলার হাল ধরেন। ১৪ রানে সৈকতের বলে বোল্ড হলে এই জুটিও ভেঙে যায় ৩৪ রানে। অমিতও বেশি দূর যেতে পারেননি। ২৯ রান করা অমিতও মোসাদ্দেকের শিকার।
একাই লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন নাহিদুল ইসলাম। কিন্তু তিনি কাউকে সঙ্গী হিসেবে পাননি। এক প্রান্তে নাহিদুল আগলে রাখলেও আরেক প্রান্তে পড়তে থাকে উইকেট। তার ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। শেষ চার ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেননি।
ওয়ালটন সেন্ট্রালের ৫ বোলার, সৈকত, অপু, সৌম্য, হাসান মুরাদ ও মৃত্যুঞ্জয় নেন দুটি করে উইকেট। একমাত্র রবিউল হক ছাড়া সকলে উইকেটের দেখা পান। আবু হায়দার রনির পরিবর্তে একাদাশে জায়গা পেয়েছিলেন রবিউল।
জনতার আলো/ শনিবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২২/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.