জনতার আলো, মোঃ জুলহাজুল কবীর নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর প্রতিনিধি: শুধু মাত্র চেইনের রানার লাগানোর কাজ করে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত জীবিকা নির্বাহ করছেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের মোঃ রাহেনুল ইসলাম(৪৮)। সে উপজেলার ৮নং মাহমুদপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিমের পুত্র।
ব্যতিক্রম এই পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে তার ২ সন্তানকে লালিত পালিত করেছেন এবং তাদের বিয়েও দিয়েছেন। রাহেনুল ইসলাম জানান- পৈত্রিক সূত্রেপাওয়া ৩ শতক বসতবাড়ীর জমি ছাড়া তার কোন জমাজমি নাই। বিয়ের পর তিনি কর্ম সংস্থান নিয়ে হতাশায় পড়েন। কৃষি শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। কিন্তু কৃষি শ্রমিকের কাজে তার মন বসেনা। ফলে ঘড়ি মেরামতের কাজ শিখেন এবং বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেওয়ালঘড়ি ও হাত ঘড়ি মেরামতের কাজ শুরু করেন। কিন্তু মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু হলে ঐ কাজ কমে যায়।
ঘড়ি মেরামত করার সময় মাঝে মাঝে চেইনের রানার লাগানোর কাজ করতেন। পরে তা আস্তে আস্তে প্রচার হলে বিভিন্ন গ্রামের লোকজন সুইটার, জ্যাকেট, স্কুল ব্যাগ, ভ্যানেটি ব্যাগ, তৈরী কাপড় ইত্যাদির রানার লাগানোর জন্য তার বাড়ীতে আসতে শুরু করে। প্রতিটি রানারের লাগানো বাবদ তিনি ১০ টাকা মুল্য গ্রহন করেন। কিন্তু বাড়ীতে আসা গ্রাহকদের থেকে আয় দিয়ে তার সংসার চলা কষ্টকর হয়ে পড়ে। পরে নিজেই বাইসাইকেল যোগে গ্রামের পর গ্রামে ঘুরে ঘুরে রানার লাগানোর কাজ শুরু করেন। নিজ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলাতেও কাজ করছেন।
এভাবে তার ১৬টি বছর অতিবাহিত হয়েছে। শীত মৌসুমে শীতের কাপড় বেশি ব্যবহার হওয়ায় ৪/৫শ টাকা ও গ্রীস্মকালে ৩ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা আয় করেন। তিনি জানান- ইচ্ছা শক্তি ও পরিশ্রম করতে জানলে যে কোন পেশা থেকে জীবিকা নির্বাহ করা যায়।
তার এই পেশার কারনে তাকে এখন কয়েকটি উপজেলার লোকজন চিনে ও জানে এবং সম্মান করেন। এখন বয়স হওয়ায় বাইসাইকেল চালানো তার জন্য কষ্টকর। তাই একটি দোকান দিতে চায়।
কিন্তু পুজি না থাকার কারনে দোকান দিতে পারছেনা। সহায়তা পেলে তিনি দোকান দিয়ে দোকানে বসে চেইনের রানার লাগানোর কাজ চালিয়ে যেতে চান।
জনতার আলো/সোমবার, ২৭ আগস্ট ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.