জনতার আলো, বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ছেলের সঙ্গে এসএসসি পাশ করেছেন তাহমিনা বিনতে হক (৩৬) নামে এক মা। তবে ছেলের চেয়ে মা তুলনামূলক ভাবে ভাল রেজাল্ট করেছেন।
তাহমিনা বড়াইগ্রামের খাকসা-খোকসা আইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি জিপিএ ৪.২৩ পেয়েছেন। পাশাপাশি ছেলে তাওহীদুল ইসলাম উপজেলার দ্বারিকুশি-প্রতাপপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৪.০৬ পেয়েছে। মা ছেলের এ ফলাফলে তাদের
বাড়িসহ স্বজনদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। খবর পেয়ে অনেকেই রঞ্জুর স্ত্রী-সন্তানকে একনজর দেখার জন্য তাদের বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছেন।
জানা গেছে, এক ছেলে এক মেয়ে ও স্বামী নিয়ে তাহমিনার ছোট্ট সংসার। বিয়ের আগে বেশিদুর লেখাপড়া করতে না পারায় সাংসারিক কাজের ফাঁকে একমাত্র ছেলে তাওহীদুল ইসলামকে (১৬) লেখাপড়ার সময় দিতে গিয়ে তিনি নতুনভাবে লেখপড়া শুরু করার স্বপ্ন দেখেন।
তাই শেষ পর্যন্ত নিজেও বাবার বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামের কাছাকাছি বড়াইগ্রামের খাকসা-খোকসা আইটি স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হন তিনি। তারা মা-ছেলে প্রতিদিন গড়ে ৪ ঘন্টা পড়াশুনা করেছেন।
জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার আনন্দনগর গ্রামে তাদের বাড়ি। তাহমিনার স্বামী আলমগীর হোসেন রঞ্জু চাঁচকৈড় বাজারের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। সাংসারিক ব্যস্ততার মাঝেও স্ত্রীর এই উদ্যমী ফলাফলে রঞ্জু খুব খুশি।
তবে তাহমিনা বিনতে হক জানান, জীবনের এ বয়সে এসে নতুনভাবে লেখপড়া শুরু করে যে ফলাফল পেয়েছি, তাতে আমি যথেষ্ট খুশী। ছেলের সাথে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবেন বলেও জানান তিনি।
ছেলে তাওহীদুল ইসলাম জানায়, শত ব্যস্ততার মাঝেও মা যেভাবে লেখাপড়া করেছেন, তাতে আমি যথেষ্ঠ উদ্ধুব্ধ হয়েছি। এক সঙ্গে পাশ করার পাশাপাশি মায়ের রেজাল্ট বেশি ভাল হওয়ায় আমি বেশি খুশি হয়েছি।
দ্বারিকুশী প্রতাপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের ছাত্র তাওহীদুলের সঙ্গে তার মাও অন্য একটি প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ ঘটনাটি আমাদেরকেও দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।
জনতার আলো/সোমবার, ০৭ মে ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.