জনতার আলো, মোস্তফা কামাল, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : দেশের প্রায় সর্বত্র প্রতিটি বাগানে ও বাড়ির আনাচে-কানাচে চোখে পরছে আম গাছের ডগায় ডগায় আমের মুকুল। টাঙ্গাইলের লালমাটির সখিপুরেও গাছের ডগা ছেয়ে গেছে আমের মুকুলে। সাথে লিচু গাছ গুলোতেও দেখা মিলছে মুকুলের কুঁড়ির। কাঁঠালের এচোড়ও যেন উকি দিয়ে দেখতে চাইছে নতুন পাতার খোলস ভেদ করে। প্রকৃতির এ মনোমুগ্ধকর পরিবর্তনই যেন জানান দিচ্ছে মধুমাস আসতে আর বাকি নাই। আবহাওয়া ভালো থাকায় আম গাছে এবার আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে। বাতাসে ভেসে আসছে প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর মৌ মৌ ঘ্রাণ।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগেই আবহাওয়াগত ও জাতের কারণেই মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে চলতি মাসের শেষের দিকে প্রতিটি গাছেই পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটতে শুরু করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যেসব গাছে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে, বাগান মালিকরা পরিচর্যাও শুরু করেছেন ব্যাপক হারে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন আম চাষি ও বাগান মালিকরা। আম বলতে একসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীকেই বোঝাতো। কিন্তু এখন অবস্থা ভিন্ন। আম লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় প্রতি বছর সারাদেশ ব্যাপী বাড়ছে আমের আবাদ। তবে আমের রাজার দেশ এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জ। দেশ জুড়ে যত আম বাগান তার সিংহভাগ আম বাগান রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
বর্তমানে যে পরিমাণ আমের মুকুল আসছে তার কিছু নষ্ট হয়ে যায়, তার কারণ প্রথমত ঘন কুয়াশা, এরপর শিলাবৃষ্টি বা অতি খরা। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই আম গাছকে টিকে থাকতে হয় ফলের জন্য। গ্রামের প্রচলিত কথায় আছে “কুয়োয়(কুয়াশা) আমের ক্ষয়, তেঁতুলের কিছু নয়” অর্থাৎ ঘন কুয়াশায় মুকুল ঝরে যায়, তেঁতুলের কিছুই হয় না। তাই মুকুল যতই ঝরুক শেষ পর্যন্ত যতটুকু টিকে থাকে তাতেই ১০/১২টি করে আম ধরে। এই আমের ভারই সইতে পারে না অনেক গাছ। আম বাগানে দেখা যায় অপূর্ব দৃশ্য। অনেক উঁচু গাছেরও মাটি থেকে ২/৩ ফুট ওপরেই ঝুলে থাকে থোকা থোকা আম। কখনও শাখায় বাঁশের ঠেকা দিতে হয়। হাতের নাগালের এই আম কেউ যেন ছিঁড়তে না পারে। আমের মুকুলই জানান দেয় ফলন কেমন হবে।
অভিজ্ঞ আম চাষীরা জানান, ঝড় ও শিলা-বৃষ্টি না হলে আশা করা যাচ্ছে এবারও আমের ফলন ভালই হবে, আমের মুকুল ভাল এসেছে বাগানে। আম্রমঞ্জুরি শুভ বার্তা বয়ে আনবে সবারই মনে। খনার বচনে আছে, “আমে ধান, তেঁতুলে বান”।
প্রকৃতির এই আ¤্রমঞ্জুরি বলে দেবে কেমন যাবে এ বছর। উপজেলার কৃষি অফিসার নুরুল ইসলাম জানান, মুকুল আসার সাথে এবং মুকুল ধরার সময় প্রয়োজনীয় পরিচর্চা করা গেলে আমের মুকুল সংরক্ষণ এবং পোকার হাত থেকে আমকে রক্ষা করা সম্ভব। তিনি আরো জানান, আম চাষে আগ্রহী কৃষকদের কে আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ভালো ফলনের জন্য কিভাবে কি করতে হবে তার পরামর্শ দিয়ে থাকি।”
জনতার আলো/বৃহস্পতিবার, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.