কিন্তু বাস্তবে নিয়মিত রক্তদানকারী গড়ে বছরে দুই বার রক্তদান করেন। রক্তদানের পরিমাণ ছুটির মৌসুমে বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে প্রতি হাজারে মাত্র ৫ জন লোক স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।
তথ্য : ২ রক্তদানে শরীরে অজানা রোগ নির্ণিত হতে পারে
প্রতিটি রক্তদান ১৩ টি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়, এর মধ্যে ১১টি পরীক্ষা করা হয় HIV, হেপাটাইটিস B এবং C, এবং সিফিলিসের মত সংক্রামক রোগের জন্য। প্রতিবার রক্ত দানের সময় এর কোনটিতে যদি পজেটিভ পাওয়া যায়, তাহলে আপনার শরীরে থাকা রোগ সম্পর্কে আপনাকে অবহিত করা হবে। নিয়মিত পরীক্ষা না হলে হয়ত আপনার শরীরে থাকা রোগ সম্পর্কে জানতে জানতে অনেক দেরিও হয়ে যেতে পারে।
তথ্য : ৩ আপনার রক্ত সেল পরিপূর্ণ হতে এক মাস সময় লাগতে পারে যদি রক্তের প্লাজমা পূর্ণ হতে এক বা দুই দিন সময় নেয়, কিন্তু লাল রক্তকোষ সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ হতে চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে।
রক্ত দেওয়াতে আপনি যে আয়রণ হারাচ্ছেন তা পূর্ণ হতে আরও বেশি সময় লাগে। আয়রণের পরিমাণ আগের পর্যায়ে পৌছাতে আট সপ্তাহও লাগতে পারে। এ কারণে রক্তদানের ৫৬ দিন অতিবাহিত না হলে পুনরায় রক্ত না দিতে বিশেষজ্ঞগণ পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তথ্য #৪ রক্তদানের আগে ভাল খাবার খান ব্যাপারটি নির্বুদ্ধিতা বা সংশ্লিষ্ট নয় এমন মনে হতে পারে। কিন্তু এটা নিশ্চিত করা জরুরী, রক্ত দিতে যাওয়ার আগে এমন কিছু না খাওয়া যা খুব বেশি চর্বিযুক্ত। যার কারণে রক্ত পরীক্ষা ব্যাহত হতে পারে। এর বদলে শরীরে যেন আয়রণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এমন আয়রণ সমৃদ্ধ খাবার খান।
রক্তদানের আগের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অ্যালকোহল পান করলে রক্ত দেওয়া যাবে না।
রক্তদানের পরে গ্লুকোজ সমৃদ্ধ খাবার খান। এতে আপনার মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরা এবং দুর্বলতা কাটাবে। তাই রক্তদানের পর হাসপাতাল থেকে দেওয়া খাবার খান।
তথ্য #৫ রক্তদানের দুই দিন আগে থেকে অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ নেওয়া বন্ধ রাখুন
যদি সম্পূর্ণ রক্তের উদ্দেশ্যে রক্তদান করেন তাহলে এ নিয়ে আপনাকে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। তবে যদি শুধু প্লাটিলেট সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রক্তদান করেন তাহলে রক্ত থেকে প্লাটিলেট আলাদা করাতে ব্যবহৃত ক্যামিকেল সঠিকভাবে কাজ না ও করতে পারে।
এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাবার অন্তত ৭ দিন পর, সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তারপর রক্ত দান করা যাবে।
তথ্য #৬ প্রতি দুই সেকেন্ডে পৃথিবীতে কারও না কারও রক্তের প্রয়োজন হয় ২০১১ সালের এক হিসেবে শুধু বাংলাদেশেই বছরে ৫ লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। আর এই চাহিদা মেটাতে ২৫ শতাংশ আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো থেকে, ২০-২৫ আসে পেশাদার রক্তদানকারীদের কাছ থেকে। বাকি ৫০ শতাংশ এককালীন কোন রোগীর জন্য তার আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
তথ্য #৭ রক্তদানে হৃৎপিণ্ড ভাল থাকে নিয়মিত রক্তদানে হৃদরোগ ও হার্ট-অ্যাটাকের ঝুঁকি ৮৮ শতাংশ হ্রাস করে। কারণ রক্তদানে শরীর প্রতিবারই নতুন, শক্তিশালী লাল রক্ত কোষ তৈরী করছে এবং সান্দ্রতা হ্রাস করে।
রক্তদান রক্তে কলেস্টোরেলের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে।
তথ্য #৮ রক্তদানে ক্যালরি খরচ হয়
রক্তদানে প্রতিবার মাত্র ১০-১২ মিনিটি সময় প্রয়োজন হয়। রক্তদানের এই ১০-১২ মিনিটে সিটে শুয়ে শুয়ে আপনার শরীর থেকে খরচ হবে ৬৫০ ক্যালরি। যা খরচ করতে আপনাকে ৩০ মিনিটি ব্যায়ামাগারে পরিশ্রম করতে হবে।
তথ্য #৯ ট্রমা রোগী ছাড়াও অনেক রোগে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয় শুধু ট্রমা রোগী, সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগীকেই রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয় তা নয়। আসলে বেশির ভাগ দান করা রক্তই দেওয়া হয় ক্যান্সার রোগীকে, অ্যানিমিয়া চিকিৎসায় এবং সার্জারি করা রোগীকে।
তথ্য #১০ ইউনিভার্সাল টাইপ বা গ্রুপের রক্তই সবচেয়ে দুষ্প্রাপ্য
বাংলাদেশে দুষ্প্রাপ্য রক্তের গ্রুপগুলো হলো O-Negetive, A-Negetive, B-Negetive, AB-Negetive
তথ্য #১১ রক্তের কালোবাজারি হতে সাবধান হোন রক্তের পরিমাণ বাড়াতে অনেক কালোবাজারি বা পাচারকারী রক্তের সাথে স্যালাইন ওয়াটার এমন কি সাধারণ পানিও ব্যবহার করে। রক্তের দামের চেয়ে রক্তের থেকে আলাদা করা প্লাজমার দাম বেশি। বেশি লাভের জন্য অনেক হাসপাতাল রক্ত থেকে প্লাজমা আলাদা করে বেশি দামে বিক্রি করে। আর প্লাজমা ছাড়া রক্ত ব্লাড-ব্যাংকে রেখে দেয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.