জনতার আলো, এম. আরিফুর সাদনান, বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীতে বাড়ছে কিশোর অপরাধ। অদম্য আশা আর জীবন সম্পর্কে অতিকৌতূহলী কিশোরেরা হিরোইজম বা দাপট দেখাতে গ্যাং কালচার অথবা অতি অল্প সময়ে কল্পলোকের উচ্চভীলাষী জীবন-যাপনের চিন্তায় প্রতিকূল পরিবেশের কারণে আশাভঙ্গ হলে বেদনা ও হতাশায় অন্ধকারে পা বাড়িয়ে দেয় ধীরে ধীরে হয়ে পড়ে অপরাধপ্রবণ।
জড়িয়ে পড়ে নেশা, মারামারি-খুন কিংবা চুরি-ছিনতাই, অপহরনের মত বড় বড় অপরাধমূলক ঘটনায়।
এমনই এক ঘটনা রাজধানীর মরিপুরের পল্লবী এমডসি মডল ইনস্টিটিউিট এর চর্তুথ শ্রেণীর ছাত্র মজিানুর রহমান সায়ান (১১) কে অপহরন করা হয়। গত ২৭ র্মাচ প্রতিদিনের ন্যায় বিকলেে বাসা থেকে বাইসাইকল নিয়ে খেলার মাঠে যায়। সাধারণত প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাসায় ফরিে আসলেও ঐদিন সন্ধ্যা ছয়টায় তার গৃহ শিক্ষক পড়াতে আসলে তাকে না পয়েে খােঁজাখুঁজি শুরু কর।পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সায়ানের পিতা সাইদুর রহমানের মোবাইলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মোবাইল হতে ফোন করে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা নাদিম (১৯)।
রাতের মধ্যেই টাকা প্রদান না করলে ভিকটিমকে হত্যা করা হবে র্মমে অব্যাহতভাবে হুমকি প্রদান করতে থাক।পরবর্তীতে ভিকটিমের চাচা হাববিুর রহমান রুপনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনানুযায়ী মামলা দায়ের করে এজাহারের কপিসহ বিষয়টি র্যাব-৪ কে লিখিতভাবে অবহিত করেন।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৪ এর স্পেশাল কোম্পানী জোর তৎপরতা শুরু করে।এক পর্যায়ে ভিকটিমেরপিতা অপহরণকারী কর্তৃক ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে র্যাব-৪ কে অবহিত না করে নগদ উনিশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ প্রদান করে ভকিটমিকে অপহরণকারীদের নিকট হতে মুক্ত করে।
এরপরও র্যাব-৪ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে অপহরণকারী চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে তৎপরতা অব্যাহত রাখে।র্যাব সদর দপ্তর এর প্রযুক্তিগত ও প্রয়োজনীয় সোর্স নিয়োগ করে গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টায় পল¬বী থেকে নাদিম (১৯), পিতাঃ নূর হোসেন’কে গ্রেফতার করে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে প্রায়দেড় বছর পূর্বে ভিকটিমের চাচার অফিসে অফিস বয় হিসাবে চাকুরী করত। আসামী নাদিম এর স্বীকারোক্তি মোতাবেক তার প্রধান সহযোগী আসামী বাকি তনি সহযোগী আসামী বাকি তিন আসামীআসিফ (১৯), পিতাঃ মোঃ রহমত’কে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বাসা হতে নগদ তের লক্ষ আটত্রিশ হাজার টাকা এবং মুক্তিপণের টাকায় ক্রয় করা দুইটি দামী মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। অপর আসামী নাদিমের বাসা হতে নগদ নব্বই হাজার টাকা, একটি দামী মোবাইল সটে ও অপহরণ র্কাযে ব্যবহৃত একটি বাইসাইকল উদ্ধার করা হয়।
আসামী নাদিম ও আসিফকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দুজন পরষ্পর ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং একই এলাকায় বসবাস ও চলাফেরা করে।তারা উভয়েই ২০১৪ সালে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এবং পরর্বতীতে লেখা-পড়া ছেড়ে দিয়ে বখাটেপনায় লিপ্ত হয়। প্রায় দুই মাস পূর্বে কিভাবে সহজ উপায়ে টাকা উপার্জন করা যায় তার পরকিল্পনা করতে থাকে এবং বিত্তশালী কোন পরিবারের সন্তানকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করবে বলে মনঃস্থির করে।
এরই অংশ হিসবেে পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী নাদিমের পূর্ব পরিচিত মিজানুর রহমান সায়ানকে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।ভিকটিম সায়ানকেঅপহরণ কাজে সহায়তা করার জন্য তার পিতার বর্তমান অফিস সহকারী মোঃ নাঈম হাওলাদারের সাথে আসামী মোঃ নাদিম পরামর্শ করে এবং সহায়তা চায়।
ঘটনার দিনগত ২৭ মার্চ ২০১৮ তারিখ ভিকটিম মোঃ মিজানুর রহমান সায়ান তার বাসা থেকে বের হলে আসামী আসিফ ও নাদমি ভিকটিমকে বুলডগ প্রজাতির কুকুর প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে। ঐদিন ভিকটিমকে তাদের অপর সহযোগী আসামী সজীব খানের বাসায় রাখে এবং ভিকটিমের অভিভাবকের সাথে মুক্তিপণের টাকার পরিমাণনিয়ে মোবাইল ফোনে দর কষাকষি করে।
২৮ মার্চ ২০১৮ তারিখ দুপুর দুইটায় আসামীরা অপহৃত সায়ানের পিতার থেকে নগদ উনিশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণআদায় করে এবং বিকেল সাড়ে চারটায় মিরপুর-১৩ এর পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনের রাস্তায় সায়ানকে ছেড়ে দেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জনতার আলো/মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.