জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র রমজান মাসের দশম রোজা পেরিয়েছে। কিছুদিন পরই শুরু হবে ঘরফেরা মানুষের যাত্রা।
ঈদে ঘরমুখো নৌযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বুকিং শুরু হচ্ছে ১৫ রোজা বা ১ জুন থেকে। আর টিকিট পাওয়া যাবে ৫ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা নদীবন্দরের (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের) যুগ্ম পরিচালক আলমগীর হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, নদীপথে যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের ৪১ রুটে শতাধিক বেসরকারি লঞ্চ চলাচল করছে। এসব লঞ্চে প্রায় ১০ হাজার ভিআইপি, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিন আছে। ১৫ রোজার পর থেকেই এসব লঞ্চের অগ্রীম কেবিন বুকিং দেওয়া শুরু হবে।
অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপ সামাল দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত লঞ্চ রাখা হবে। প্রয়োজন হলেই স্পেশাল সার্ভিস চালু করা হবে। তবে ঈদে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।
সদরঘাটের (বন্দর ও পরিবহন) বিভাগের উপপরিচালক মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হবে। যাত্রীরা যাতে ভালোভাবে টার্মিনালে আসতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, তথ্য সার্ভিস, হকার মুক্ত, যানযট মুক্তসহ সেবার মান উন্নয়নে সব ধরনের ইউটিলিটি সার্ভিস সুবিধা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার এবং ঢাকায় আসার ব্যবস্থা করা হবে।
তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার (যাপ) সদস্য সচিব সিদ্দিকুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, এখনো যাত্রীদের মধ্যে লঞ্চের (কেবিন) অগ্রীম টিকিট বিক্রির নির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঠিক হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ দিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারো ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ডকইয়ার্ডে পুরোনো ও ভাঙাচোরা লঞ্চ রং করার কাজ চলছে। যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কোনো কোনো লঞ্চকে আবার সাজানোও হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিতে কোনো কোনো অসাধু লঞ্চ মালিক চলাচলের অনুপযোগী বেশ কিছু লঞ্চ সংস্কার করছেন। কেরানীগঞ্জের তেলঘাট থেকে মীরেরবাগ পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ডকইয়ার্ড রয়েছে। এর অধিকাংশ ডকইয়ার্ডেই চলছে যাত্রীবাহী লঞ্চের মেরামত কাজ। প্রতিটি ডকইয়ার্ডেই বিভিন্ন নৌযান তৈরি, সংস্কার ও রঙের কাজ চলছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ডকইয়ার্ডেই চলছে পুরোনো লঞ্চে রং ও মেরামতের কাজ।
নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, প্রায় সময়ে কিছু নৌ যানের মেরামত করার প্রয়োজন পড়ে। এগুলো মেরামতের জন্য আমরা তাদের বলে থাকি। তবে নৌ পরিবহনমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে করে ঈদ মৌসুমে কোনো ধরনের আনফিট নৌ যান চলাচল বা সার্ভে সনদ নিতে না পারে এ জন্য আমরা জিরো টলারেন্স নীতি পালন করছি। কোনো অবস্থাতেই আনফিট নৌ যান চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
লঞ্চে ভাড়ার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, আসন ব্যবস্থাপনা অনুসারে ছোট-বড় লঞ্চসমূহে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আকারের লঞ্চগুলোতে ডুপ্লেক্স ও ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৩০০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকা হয়ে থাকে। যেখানে দুটো বেড, এসি, রেফ্রিজারেটর, টিভি, ডাইনিং সুবিধা রয়েছে।
দুই বেড সুবিধায় ডাবল কেবিনের ভাড়া ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা, এক বেডের সুবিধায় সিঙ্গেল কেবিন ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, সোফা-কাম-বেডের ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়ে থাকে। এখানেও এসি কিংবা ফ্যান ও টিভির সুবিধা রয়েছে।
এ ছাড়া লঞ্চের ডেকেও (লঞ্চের খোলা স্থান) যাত্রা করা যায়। অনেক বড় লঞ্চে কার্পেট দেওয়া রয়েছে। তবে চাদর বালিশ যাত্রীকে সঙ্গে বহন করতে হয়। এখানে ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
জনতার আলো/সোমবার, ২৮ মে ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.