জনতার আলো,স্বাস্থ্য ডেস্ক: ক্যানসারের মূল চিকিৎসা হলো সার্জারি। এসব রোগীর ফলও চমৎকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ৮০ শতাংশ লিভার ও ফুসফুসে ক্যানসার রোগীর বিভিন্ন কারণে সার্জারি করা সম্ভব হয় না। এসব রোগীকে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এর মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ শতাংশ রোগীর ক্যানসার টিউমার সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া যায় এবং ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ রোগীর ক্যানসার টিউমার কিছুটা ছোট হয়।
এ ছাড়া বাকি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ রোগীর ক্যানসার টিউমারে কোনো কাজ করে না। বরং রোগীকে ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহ্য করতে হয়। এসব রোগীর জন্য RFA বা Radio Frequency Ablation হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকরী বিকল্প চিকিৎসা। কারণ জঋঅ ক্যানসার টিউমার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে। অথচ আশপাশের সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি হয় না, সাফল্য ৮০ শতাংশ। RFA
অতি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তরঙ্গ ব্যবহার করে টিউমারের তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি করা হয়। এতে ক্যানসার কোষগুলোর প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে টিউমারও সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু সুস্থ টিস্যুর কোনো ক্ষতি হয় না। যাদের RFA করা হয়
যাদের সার্জারি করা যায় না, তারাই বেশি উপযুক্ত রোগী। যারা সার্জারি করতে ইচ্ছুক নয়, বিকল্প হিসেবে তাদের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি এটি। কারণ আরএফএ’র মাধ্যমে পুরো ক্যানসার টিউমারটি ধ্বংস করা যায়। যাদের কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি দেওয়ার পরও টিউমার রয়ে গেছে বা পুনরায় ক্যানসার দেখা গেছে কিংবা বড় হয়ে গেছে, তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল চিকিৎসা হচ্ছে RFA।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির সমন্বিত প্রয়োগ। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকার স্বনামধন্য ক্যানসার হাসপাতালে ফুসফুস, লিভার, কিডনি, হাড়, স্তন ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে আরএফএ। ফুসফুসে ক্যানসার
যাদের ফুসফুস ক্যানসার টিউমার ৪ সেন্টিমিটারের নিচে, তাদের ৯৭ শতাংশ রোগীর টিউমার জঋঅ দিয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস যায়। এর সঙ্গে রেডিওথেরাপি প্রয়োগ করলে ৯৫ শতাংশ ১ বছরে, ৮৫ শতাংশ ২ বছরে, ৭৫ শতাংশ ৩ বছরে ও ৬২ শতাংশ ৫ বছরের মধ্যে রোগমুক্ত থাকে।
যাদের ফুসফুস ক্যানসার টিউমারটি ৪ সেন্টিমিটারের বেশি, তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ রোগীর টিউমার আরএফএ দিয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা যায় এবং এর সঙ্গে রেডিওথেরাপি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি প্রয়োগ করে ৫৭ শতাংশ রোগী ৩ বছর রোগমুক্ত থাকতে পারে। যাদের ফুসফুস ক্যানসার টিউমার ৫ সেন্টিমিটারের বেশি বুকের সঙ্গে লেগে থাকে, হৃৎপি- বা রক্তনালির সঙ্গে লেগে থাকে অথবা লিম্পফ গ্রন্থি ছড়িয়ে পড়েছে, তাদের টিউমার আরএফএ দিয়ে ধ্বংস করে রেডিওথেরাপি। লিভার বা যকৃৎ ক্যানসার
যাদের লিভার ক্যানসার টিউমার ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটারের নিচে, তাদের জঋঅ এ দিয়ে চিকিৎসা করে সার্জারির মতো ভালো ফল পাওয়া যায়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। যাদের লিভার ক্যানসার টিউমার ৫ থেকে ৮ সেন্টিমিটার, তাদের জঋঅ এ দিয়ে চিকিৎসা করে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ রোগী ১ বছর, ৮০ শতাংশ ২ বছর ও ৬৫ শতাংশ ৩ বছর সুস্থ থাকে। যাদের লিভার ক্যানসার টিউমার ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার, তাদের জঋঅ এ দিয়ে চিকিৎসা করে দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ ১ বছর, ৬৫ শতাংশ ২ বছর ও ৩০ শতাংশ রোগী ৩ বছর সুস্থ থাকে। তাই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
জনতার আলো/বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.