জনতার আলো, মোমিন মেহেদী : কিশোর আন্দোলন অথবা শিক্ষার্থী আন্দোলনের সূত্রতায় অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু ঝাপিয়ে নেমে এসেছে স্বেচ্ছাচারিতা, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। বিশেষ করে বিশেষ অভিযান চালানোর নামে ট্রাফিক পুলিশ এ ধরনের গাড়ি ধরপাকড়ের উদ্যোগ নেয়ার নামে প্রশাসনে ক্রমশ বাড়ছে দুর্নীতির মাত্রা। চলছে অভিযান নামক আইওয়াশ। একদিকে অভিযান, অন্যদিকে সামান্য গতিতে গাড়ি চালালেই ইঞ্জিন থেকে চারদিকে ছড়াচ্ছে নিকষ কালো ধোঁয়া, দিকনিদের্শনা বাতির (ইন্ডিকেটর লাইট) কোনো অস্তিত্ব নেই, বেশ কয়েকটি জানালার কাচ ভাঙা, নেই লুকিং মিরর ভিউ। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরার আজমপুর রুটে চলাচলকারী রাইদা পরিবহনের এমন একটি বাস কদিন আগে বিআরটিএ থেকে ফিটনেস সনদ পেয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা একটি মাইক্রোবাস কোনোভাবেই রাস্তায় চলাচলের উপযোগী না হলেও এটির আনকোরা ফিটনেস সনদ পাচ্ছে। ব্যক্তিগত যান হিসেবে নিবন্ধন পাওয়া এ মাইক্রোবাসটি দীঘির্দন ধরে হাতিরঝিলে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। যদিও নানামুখী ফোনাফোনির পর পুলিশ ওই মাইক্রোবাসটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। শুধু এমন দুএকটি বাস-মাইক্রোবাসই নয়, রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী এ ধরনের বিপুলসংখ্যক লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহনের ফিটনেস সনদ রয়েছে। চলমান ট্রাফিক অভিযানে যার হাতেনাতে প্রমাণ মিলেছে। বিআরটিএর একশ্রেণির দুনীির্তবাজ কমর্কতার্কে ম্যানেজ করে কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তারা ফিটনেস সনদ জোগাড় করার কথাও গাড়ির মালিক-চালকরা ট্রাফিক পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে এরসঙ্গে পুলিশেরও গোপন যোগসাজশের তথ্যও পাওয়া গেছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে।
লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহনের ফিটনেস সনদ পাওয়ার অভিযোগ দীঘির্দনের। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এ ব্যাপারে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। তবে তারা বিভিন্ন সময় এ বিষয়টিতে কড়া নজরদারির অঙ্গীকার করলেও তা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি। যার ফলশ্রুতিতে এ অনিয়ম পযার্য়ক্রমে বেড়েছে। চলমান বিশেষ ট্রাফিক অভিযান শুরুর পর তাতে নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ফিটনেস সনদ পাওয়া যানবাহনও রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী হলে তা তাৎক্ষণিক আটক করা হবে এবং তা ২০ বছরের অধিক পুরনো হলে কিংবা মেরামত অযোগ্য হলে তা ডাম্পিংয়ে পাঠাবে পুলিশ। এক্ষেত্রে ফিটনেস সনদের কোনো মূল্যায়ন করা হবে না। অবশ্য আমার কাছে কেন জানি মনে হচ্ছে যে, এমন উদ্যোগ নেয়া হলে ‘ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়’ হওয়ার দশা হবে। কেননা, নগরীতে চলাচলকারী গণপরিবহনের একটি বড় অংশেরই ফিটনেস সনদ নেই। সামান্য যে সংখ্যক যানবাহনের সনদ আছে তারও অনেকটাই বিআরটিএর দুনীির্তবাজ কমর্কতাের্দর উৎকোচ দিয়ে জোগাড় করা। এ অবস্থায় একযোগে ধরপাকড় শুরু হলে নগরীর পরিবহন সঙ্কট ভয়াবহ রূপ নেবে। স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন সেভ দ্য রোড-এর তথ্যানুযায়ী- সারা দেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ যানবাহন চলাচলযোগ্যতা (ফিটনেস) সনদ ছাড়াই চলছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই ফিটনেস সনদবিহীন যানবাহনের সংখ্যা প্রায় এক লাখ বলে বিআরটিএ হিসাব দিয়েছে। সে হিসাবে শতকরা প্রায় ৩৩ ভাগ যানবাহনেরই ফিটনেস নেই। এ পরিস্থিতিতে পরিবহন মালিকদের কোনো ধরনের সুযোগ না দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হলে এ খাতে মারাত্মক ধস নামবে বলে আগেই ধারণা করেছিলাম। আর প্রমাণ পাচ্ছি এখন। নাগরিক জীবনের দূর্ভোগ গড়ে উঠছে তথাকথিত আইনী মারপ্যাচে পড়ে। অথচ একটি সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিবেদিত ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি নিরন্তর দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত রাখার সূত্রতায় আজন্মকাল লোভ মোহহীন ছিলেন। ১৯৭৫-এর ঘাতকদের কারণে নিবেদিত জাতির পিতাকে আমরা হারিয়েছি। এই হারানোর বেদনতার ক্ষত গত ৪৮ বছরেও কমেনি। বরং ক্রমশ সমস্যাক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশে স্বাধীনতার চেতনায় অগ্রসর মানুষের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত পথ নিরাপদের পরিবর্তে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।
সুন্দর-স্বচ্ছ-নিরাপদ জীবনের জন্য নৈরাজ্য ঠেকাতে দিন দশকের সাঁড়াশি অভিযান ও সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং লেগুনা বন্ধ করার মধ্য দিয়ে মেট্টোপলিটন পুলিশের য চেষ্টা চলছে গত এক সপ্তাহ ধরে; সেই চেষ্টার হাত ধরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে-ওষ্ঠাগত হয়েছে নাগরিক জীবন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, নিন্ম মধ্যবিত্ত জীবনে নেমে এসেছে নির্মম মানবেতর সময়। স্কুলে শিক্ষার্থীদেরকে আনা নেয়া, অফিসে যাওয়া আসা সহ দৈনন্দিন পরিবহন সমস্যায় আক্রান্ত নাগরিক জীবনে নেমে এসেছে ছলচাতুরির বর্তমান। যা একটি স্বাধীন দেশে কখনোই চাওয়া হতে পারে না। বরং সকল সমস্যার পাশাপাশি স্বাধীন-সার্বভৌম মানচিত্রে তৈরি হচ্ছে নিত্য নতুন সমস্যা। শুধু এখানেই শেষ নয়; গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরেনি চলছে ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা অন্ধকার চর্চা চলছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গণপরিবহনে নৈরাজ্য ঠেকাতে দিন দশকের সাঁড়াশি অভিযান ও সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এমনকি গণপরিবহনের বেপরোয়া মালিক-শ্রমিক-নেতা, কাউকেই সরকার সামান্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। অথচ নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে শিক্ষাথীের্দর গড়ে ওঠা কঠোর আন্দোলন সরকার নানা কৌশলে প- করে দিয়েছে।
ফলে গণপরিবহন খাতের অরাজকতাকারীরা ফের আগের মতোই দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। চলছে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ওঠানামা। এর ধারাবাহিকতায় গণপরিবহন যাত্রীদের ভোগান্তি-হয়রানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল দ্রুত দীঘ হচ্ছে। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশাপাশি সবর্স্তরের মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বাড়ছে। যার প্রভাব আগামী দিনের ভোটের রাজনীতিতে পড়বে বলে ধারণা করছি। নিরাপদ পথ-এর দাবিতে জুলাইয়ের শেষভাগের উত্তাল আন্দোলন সরকার নানা কৌশলে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হলেও এ ইস্যুটিই আগামী নিবার্চনে বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে তরুণ ভোটাররা তাদের ব্যালটে প্রশাসনের এ ব্যথর্তার শক্ত জবাব দেবে। যা নিয়ে তারা এরইমধ্যে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। এমনকি কেউ কেউ ছোট-ছোট গ্রুপ করে এর পক্ষে জনমত আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। যা আপাতদৃষ্টিতে সামান্য উদ্যোগ মনে হলেও এর অন্ত নির্হত গুরুত্ব ব্যাপক বলে মনে করেন তারা। রাজনৈতিক পযের্বক্ষক ও সুধীজন প্রতিনিধিদের ভাষ্য, গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নৈরাজ্যে সাধারণ মানুষ কতটা ক্ষুব্ধ তা সড়ক আন্দোলনে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূত অংশগ্রহণ ও জোরালো সমথের্ন স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। মামলা-হামলা ও গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে তাদের তাৎক্ষণিক নিবৃত্ত করা গেলেও এর চাপা ক্ষোভ ফের বিস্ফোরণের অপেক্ষায় রয়েছে। নিবার্চনী উত্তাপের ডামাডোলে সড়ক আন্দোলন নতুন করে চাঙ্গা হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেন অনেকেই। এদিকে সড়ক আন্দোলন প্রতিহত করতে ওই সময় ক্ষমতাসীন দলের মুষ্ঠিমেয় নেতাকমী সরাসরি মাঠে নামলেও খোদ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা এ আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে দাবি করেছে। পরিবহন সেক্টরের চলমান নৈরাজ্য নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
এমতবস্থায় পরিবহন সেক্টরকে স্বচ্ছ ও সমৃদ্ধ করার জন্য নিবেদিত থাকা প্রয়োজন সকল স্তরের ব্যক্তিদের। তা না হলে কিন্তু পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসনের ব্যথর্তার প্রভাব আগামী নিবার্চনে সরাসরি পড়বে বলেও মনে করেন শরিক দলের নেতারা। দীঘির্দন ধরে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য চলে আসছে, নিজেদের খেয়াল খুশিমতো চলছে। মানুষকে মানুষ মনে করছে না। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। তাই সাধারণ ছাত্ররা যে প্রতিবাদ করেছে, তা যৌক্তিক। পরিবহন সেক্টরের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। যে যেভাবে পারছে এ সেক্টরকে নিজেদের স্বাথে ব্যবহার করছে। এ সেক্টর নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এজন্য সরকারকে বলব সজাগ থাকার জন্য। এক্ষেত্রে একন লেখক-সংগঠক হিসেবে বলতে বা স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে, আমাদের সরকারের আমলে কিছু অব্যবস্থাপনার কারণে এ পরিবহন সেক্টরে যারা কাজ করে, যারা শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেয়Ñ তারা কিন্তু দল-মত নিেিবর্শষে একই স্বার্থে কাজ করে। বাম বলেন, ডান বলেন, এ শ্রমিক পরিবহনের নেতৃত্বে যারা আছে তাদের সরকারি দল, বিরোধী দল বলে কিছু নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টরকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছে যেখানে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এখান থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে। সাথে সাথে একথাও মানতে হবে- নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষাথীর্রা যে ৯ দফা দাবি দিয়েছে, সেটাই শেষ নয়। শিক্ষাথীর্রা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এখানে বিআরটিএ কাজ করে না, পুলিশ তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পরিচালনা করে না, মালিক ও পরিবহনের গডফাদাররা বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, চোখ খুলে দিয়েছে। তিনি যদি সেটা সত্যিই অথর্পূণর্ভাবে বলে থাকেন, তাহলে তা কাজের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। শুধু একটা ঝটিকা ট্রাফিক সপ্তাহ করলেই এর সমাধান হবে না। সড়কে অরাজকতার জন্য দায়ী প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সড়কে মৃত্যুর পরিসংখ্যানে আমি, আপনি এমনকি মন্ত্রীরাও একটা সংখ্যা হয়ে যোগ হতে পারেন। অরাজকতা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এর বিরুদ্ধে আবার আন্দোলন হলে তখন কেউই আর সরকারকে বিশ্বাস করবে না। কেননা, সরকারের আশ্বাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষাথীর্রা শ্রেণিকক্ষে ফিরলেও সড়ক-মহাসড়কে কোথাও শৃঙ্খলা ফেরেনি। পুলিশের সামনেই একই পথের ভিন্ন কোম্পানির বাসের মধ্যে যাত্রী তোলা নিয়ে রেষারেষি হচ্ছে। বাসের পাদানিতে অতিরিক্ত যাত্রী ঝুলছে। চালকরা আগের মতোই চলন্ত গাড়িতে মুঠোফোন ব্যবহার করছেন। সড়ক-মহাসড়কে আগের মতো আনফিট যানবাহন চলছে। অথচ বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশ এ ব্যাপারে দায়সারা ভূমিকা পালন করলেও সরকার সড়ক নিরাপত্তার আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। আগামী নিবার্চনে সাধারণ ভোটাররা সরকারের এ ভূমিকার উপযুক্ত জবাব দেবে বলে ক্ষুব্ধ মন্তব্য করেন তারা। এদিকে সড়ক পথের নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ব্যথর্তা, গণপরিবহনের গডফাদারদের হাতে জিম্মিদশা এবং সবোর্পরি এ নিয়ে সরকারের দায়সারা ভূমিকায় সাধারণ জনগণ কতটা ক্ষুব্ধ ও হতাশ সে চিত্র তুলে ধরেছে গোয়েন্দারা।
এর উপর আবার আমি করছি- স্বল্প সময়ের মধ্যে সরকার পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যর্থ হলে আগামী একাদশ জাতীয় নিবার্চনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। আপাতদৃষ্টির ‘ছোট্ট’ এ ইস্যুটি ‘বড় ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ নিয়ে অবশ্য খোদ সরকারের নীতি-নিধার্রকদের অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিবহন খাতের নৈরাজ্য যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তাতে তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তারা এক সময় উল্টো সরকারকেই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে। পরিবহন খাতের নৈরাজ্যকারীদের কোনোভাবেই আর বাড়তে দেয়া উচিত নয়। নিয়ন্ত্রণহীন গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকদের বেপরোয়া ভূমিকায় দেশে সড়ক দুঘর্টনা ও প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। আর এ কারণে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ। তাই আগামী নিবার্চনের আগে তা নিয়ন্ত্রণে সরকার বিশেষ ভূমিকা রাখতে না পারলে ভোটের রাজনীতিতে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এ ইস্যুটি আগামী সংসদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। একথাও সত্য যে, একের পর এক পথ দুঘর্টনার কারণে যত না মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তার চেয়ে বেশি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের মুষ্ঠিমেয় পরিবহন গডফাদারের এ সংশ্লিষ্ট নৈরাজ্যে সম্পৃক্ততার কারণে। যা দলীয় হাইকমান্ডের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়া জরুরি। একই সাথে বলে রাখি- মোটরযান আইনে ফিটনেস পেতে অন্তত ৩০ ধরনের কারিগরি ও বাহ্যিক বিষয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার আইন আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শতর্গুলো হলোÑ নিমার্ণকালীন নকশা অক্ষত থাকা, ব্রেক-গিয়ার ঠিক থাকা, প্রয়োজনীয় বাতি থাকা, কালো ধোঁয়া বের না হওয়া, গাড়ির রং ঠিক থাকা। এর মধ্যে কিছু বিষয় সাধারণ দৃষ্টিতে যাচাই করা গেলেও ইঞ্জিনের মান যাচাইসহ গুরুত্বপূণ দিকগুলো মেকানিক্যাল। অথচ বিআরটিএ পরীক্ষার কাজে কোনো যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে না। পুরোটা চোখে দেখে ফিটনেস দেয়। এই পরিস্থিতির উত্তরণে নতুন করে ভাবতে হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে। তা না হলে সমূহ বিপদ দাঁড়িয়ে যেতে পারে রাজনীতির মাঠে। যা একজন নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক হিসেবে, বাংলাদেশের রাজনীতি সচেতন নাগরিক হিসেবে কোনভাবেই প্রত্যাশা করি না। প্রত্যাশা করি না নতুন কোন আন্দোলন বা মৃত্যুর রাস্তা। তাই চাই সম্ভাবনার রাস্তা তৈরি হোক কালোহীন আলোকিত সময়ের প্রত্যয়ে… মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.