জনতার আলো, স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিভাবকদের অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, সন্তান পরীক্ষার ফল খারাপ করলে বকাঝকা করবেন না। বকাঝকা করবেন না, এটা কোনো সমাধান নয়। বরং কী কারণে তার ফল খারাপ হলো তা খুঁজে বের করে সেটার সমাধান করুন।
বৃহস্পতিবার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ২০১৮ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ এবং ফলের পরিসংখ্যান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী কম্পিউটারের বার্টন টিপে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফলাফল উন্মোক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেন, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত অালী। এরপর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নেত্রকোনাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীও তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং জানতে চান তারা লেখাপড়া শিখে কী করবে। শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে অান্তর্জাতিক মানের শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সোনার মানুষ গড়ে তুলতে চাই। যারা সোনার দেশ গড়বেন। শিক্ষা এমনই একটি সম্পদ যে, কেউ তা কেড়ে নিতে পারে না। সম্পদ কেড়ে নিতে পারে। কিন্তু কোনো ছিনতাইকারী শিক্ষাকে কেড়ে নিতে পারে না। শিক্ষা থাকলে যে কেউ নিজের রোজগারের পথ বের করে নিতে পারে।
তিনি বলেন, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছো তাদের অামি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। যারা ভালো করতে পারোনি তারা ভেঙে পড়বে না। অাগামীতে অারও ভালোভাবে পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস শুধু অামাদের দেশে নয়। ডিজিটালের যেমন ভালো দিক অাছে তেমনি খারাপ কিছু দিকও অাছে। তারপরও অামরা নকলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। যে কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষা নকলমুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষায় নকল এড়াতে এবার যে পদ্ধতি নেয়া হয়েছে তা বেশ কার্যকর। এতে করে নকল কমে গেছে।
তিনি বলেন, অামাদের ছেলে-মেয়ারা খুব মেধাবী। তাদের এ মেধাকে কাজে লাগিয়ে অামরা বঙ্গবন্ধুর সোনার মানুষ এবং সোনার দেশ গড়ে তুলবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এ দেশকে শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে আগামীতেও এ উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকে। শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি চলতে পারে না। তাই শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে যে সমস্ত জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেসব জায়গায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। বাজেটেও বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। আমরা সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি মাদরাসা ও কওমি শিক্ষা ব্যবস্থাকেও উন্নত করে দিয়েছি। তাছাড়া কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। সার্বিকভাবে শিক্ষাকে সবদিক থেকে উন্নত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি তখন দুই বেলা করে পরীক্ষা দিতে হতো। সকালে এক পেপার, বিকেলে এক পেপার। আমাদের তো দম ফেলার সময়ই থাকতো না। সাতদিনে পরীক্ষা শেষ। এখন পরীক্ষার সময় আরেকটু কমিয়ে আনার ব্যবস্থা যদি করতে পারেন তাহলে দেখবেন, ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করবে, পরীক্ষাটাও তাড়াতাড়ি শেষ হবে। আর এখানে ওই যে নানা ধরনের অপপ্রচার, তার হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৭ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। একই সঙ্গে এবারই প্রথম পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ৫৫ দিনের মাথায় পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলো। এ বছর এইচএসসিতে ৬৬.৬৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৯ হাজার ২৬২ জন।
জনতার আলো/বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই ২০১৮/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.