জনতার আলো, স্টাফ রিপোর্টার: ‘বসন্ত বালক মুখ-ভরা হাসিটি/বাতাস বয়ে ওড়ে চুল/শীত চলে যায়/মারে তার গায় মোটা মোটা গোটা ফুল। শীতের বিদায়ের যে চিত্র লিখে গেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চারপাশে তাকালেই তার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বিদায় নিচ্ছে পিঠাপুলির ঋতু শীতকাল। এবার অবশ্য শীত সেভাবে আসেইনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে উষ্ণ শীতকাল গেছে এবার। এমনকি মাঘেও এবার শীত কাঁপায়নি রাজধানীতে। ঋতুর দ্বিতীয় মাসের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দুই-এক দিন ঠান্ডা অনুভূত হয়েছিল মাত্র। তবে সেটাও একেবারেই সাময়িক সময়ের জন্য ছিল। তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই দুপুরের রোদ ঘামাতে শুরু করে নগরবাসীকে। আর মাঘের অর্ধেক যেতে না যেতেই ঝরতে শুরু করেছে গাছের পাতা। কোকিলের ডাকও ভেসে আসছে ‘কু উউ, কু উউ’।
আজ থেকেই রাতের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে এবং সেটা আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি নাগাদ আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রার পারদও চড়তে শুরু করেছে। ঢাকায় তো বটেই দেশের অন্যান্য স্থানেও তা বেড়ে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠে গেছে।
গত দুই দিন রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও সেটি আবার বাড়তে শুরু করেছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘শীত এখনো কিছুটা অনুভূত হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা এখন বাড়তেই থাকবে, তেমন কমার সম্ভাবনা নাই। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পর আরও বাড়বে। এমনিতেই স্বাভাবিকভাবে ফেব্রুয়ারিতে শীত কমতে থাকে। সে দিক থেকে বলা যায় এখন শীতের বিদায়লগ্নই।’
আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সারাদেশে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রংপুর বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। তবে মৌলভীবাজার, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও বরিশাল জেলার ওপর দিয়ে যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ঘণ্টায় পাঁচ থেকে ১০ কিলোমিটার। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭.২ এবং সর্বনিন ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন যশোরে ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জনতার আলো/ শনিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.