জনতার আলো, মোঃ নাজমুল ইসলাম পিন্টু, জেলা ব্যুরো চীফ, মুন্সিগঞ্জ: অযত্নে, অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের মুখে পতিত হতে চলছে রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি। ইতিহাস ঐতিহ্যের লীলাভূমি
মুন্সীগঞ্জ জেলা। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে সমৃদ্ধ হয়ে আছে ঐতিহ্য ও প্রতেœ এ অঞ্চলটি। বিভিন্ন সময়ে এই মুন্সীগঞ্জ অঞ্চলে বিভিন্ন রাজবংশ রাজত্ব করেছেন। মুন্সীগঞ্জের অনেক ইতিহাস এখনো অনুদ্বারিত বা অবহেলিত। এমনই চাপাপরা ইতিহাস হলো রায়বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি।
মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখের নগর গ্রামে রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ির অবস্থান। নিমতলা থেকে যে রাস্তাটি উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে গেছে। সে রাস্তার উত্তর পাশে ইছামতি নদী ও শেখেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ। এ পাড় থেকে ওপাড়ে যেতে একটি সেতু রয়েছে ইছামতি নদীর ওপর। একটি ইট বিছানো সড়ক দিয়ে রাজা শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি যাওয়ার রাস্তা। শেখেরনগর রায়বাহাদুর ইনস্টিটিউশন থেকে আধা কিলোমিটার পূর্বে এ বাড়িটি। ছায়া সুনিবির গ্রামের নিভৃতে কয়েক একর জমির উপর এ বাড়িটি কালের সাক্ষী হয়ে নিজের অস্তিত্বের ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে।
ব্রিটিশ শাসকরা মুন্সীগঞ্জের ধণাঢ্য ব্যক্তি শ্রীনাথ রায়কে ‘‘রাজা’’ ও ‘‘রায় বাহাদুর’’ উপাধী প্রদান করেছিলেন। তিনি দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। মুন্সীগঞ্জ শহরের লিচু তলায় একটি ক্লাব আছে যেটির নাম রাজা শ্রীনাথ ক্লাব। ক্লাবের পাশের যে টেনিস মাঠ তাও রাজা শ্রীনাথের দেয়া বলে জানা যায়। বাংলা ২১ শ্রাবণ ১৩২২ সালে বঙ্গেশ্বর লর্ডকারমাইকেল রায়বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়িতে এসেছিলেন। তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল একটি দাতব্য চিকিৎসালয় উদ্বোধন করা। আমি যখন এই বাড়িটি দেখতে আসি তখন বাংলা ৪ শ্রাবণ ১৪২৫ সাল ইংরেজি তারিখ হলো ১৯ জুলাই ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বৃহস্পতিবার। দুপুর ১টায়। আমার সাথে এডভেঞ্চার কাজে সহযোগিতা করেছে আব্দুল্লাহপুরের সন্তান সাংবাদিক সজিব আহমেদ ও মেহেদী হাসান সোহান। আমরা লর্ড কারমাইকেল মহোদয়ের আগমনের ১০৩ বছর পর এলাম বাড়িটি দেখতে।
প্রায় দু’শো বছর আগে নির্মিত এ বাড়িটি। বাড়িটির নকশা বর্গাকৃতির। পূর্ব পাশে দ্বিতল দালান ঘরটি ৪০ ২০ ফুটের মতো হবে। উত্তর পাশের একতলা দালানটি ২০ ২০ ফুট হবে হয়তো। পশ্চিম পাশে ২০ ১৫ ফুট এবং দক্ষিণ পাশের একতলা দালানটিতে ২০ ১৫ ফুট আয়তনের হবে হয়তো।
বাড়ির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের দুটি পুকুরে শানবাধানো ঘাট রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় রাজা শ্রীনাথ রায়ের সকল পরিবার সদস্যরা কলকাতা চলে যান। স্কুলের শতবছর পূর্তিতে রাজা শ্রীনাথ রায়ের নাতি, পুতিরা সিরাজদিখান এসেছিলেন বলে জানান স্থানীয় লিটন মিয়া। ইট সুরকি ও চুন দিয়ে নির্মিত রাজা শ্রীনাথ রায়ের বাড়িটি। প্রত্ম অধিদপ্তরে অধিভুক্ত হওয়া দরকার। নইলে ভূমি খেকোদের গ্রামে পতিত হবে।
জনতার আলো/মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই ২০১৮/দানেজ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.