জনতার আলো, মোঃ নাজমুল ইসলাম পিন্টু, জেলা ব্যুরো চীফ, মুন্সিগঞ্জ : সিরাজদিখানে ময়নাতদন্ত ছাড়াই কিশোরী ঐশি পিরিজের লাশ দাফন নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঐশি পিরিজ আত্মহত্যার পরেও কেন ময়নাতদন্ত ছাড়া্ই লাশ দাফন করা হলো এনিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। নিহত ঐশির বাবা চট্রোগ্রামের একজন হোটেল কর্মচারী। স্বজনদের অভিযোগ, লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ কোন এক অজ্ঞাত কারণে ময়না তদন্ত ছাড়াই নিহতের সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে দাফনের অনুমতি দিয়ে চলে যায়।
জানান গেছে, মুন্সিগঞ্জ সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের সদা হাস্যোজ্জল প্রাণবন্ত ওই কিশোরী লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ২০ জুলাই শুক্রবার দুপুরে তার বাবারবাড়িতে নিজ ঘড়ে ওড়না প্যাচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁসি দেওয়ার পরে শনিবার দুপুর পৌনে দুইটার সময় তার লাশ দাফন করা হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই ঐশি পিরিজের পরিবারকে অনেকটা ভুল বুঝিয়ে লাশ দাফন নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ঐশির সাথে বিশেষ করে তার স্বামী প্রায়ই মোবাইল ফোনে ঝড়রা করতো। বাকদক্তা স্বামীর পরকীয়ায় আসক্ত ঐশি তা জেনে যাওয়ার কারণে তাই এর প্রতিবাদ করায় তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক মানসিক নির্যাতন। তাকে নির্যাতনে হত্যায় পরোচনা করা হয়েছে নাকি এসব সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে তার সঠিক কারণ খুঁজে বের করার দাবি উঠেছে। আত্মীয় স্বজন দাবি করেছেন বাবার বাড়ির লোকজন ও শশুর বাড়ির লোকজনের কারো কোন অভিযোগ না থাকায় এটা সত্যিই আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা নিয়ে সবার মনেই সন্দেহ রয়েছে। যদি এটা আত্মহত্যা না হয়ে হত্যা হয় থাকে তাহলে এর পিছনে কে বা কারা দায়ি তা খুঁজে বের করা দরকার। আর যদি আত্মহত্যা হয়ে থাকে তাহলে এর পেছনে যাদের প্ররোচনা রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
নিহত ঐশি পিরিজের মা মঞ্জুরী পিরিজ বলেন, দের বছর আগে কেয়াইন ইউনিয়নের বড়ৈহাজী গ্রামের হেবল বটলেরুর ছেলে সীমান্ত বটলেরু সঙ্গে আমার বড় মেয়ে ঐশি পিরিজের বিয়ের এনগেইজড(বাকদান পাকা কথা ) হয়। তারা দুইজন দুজনকে ভালোবাসার কারনে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ের এনগেইজড করা হয়েছির। গত শুক্রবার সকালে আমি আমার বাবার বাড়ি সাধু আন্তুনির ধর্মীয় অনুষ্ঠানে চলে গেলে ঐশি পরে যাবে বলে বাড়িতে থেকে যায়। বেলা দেরটার সময়েও ঐশি সেখানে অনুষ্ঠানে না গেলে আমি ওখান থেকে বাড়িতে এসে দেখি ঘড়ের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকা ডাকাকি করলেও ঐশি ঘড়ের দরজা না খুললে ঘড়ের দরজা ভেঙ্গে দেখি ঐশি ঘরের ফ্যানের সাথে ঝলে আছে। তখন আমার ডাক চিৎকারে সবাই এসে এঘটনা দেখতে পায়।
নিহতের ছোট বোন ঐদ্রিলা পিরিজ বলেন, ফোনে হয়তো সীমান্তর সাথে কোন বিষয়ে কথা কাটাকাটি হযেছে। আমার বড় বোন ঐশি একটু জেদী ও সরল প্রকৃতির ছিল। প্রতিবেশী জ্যানি জানান ঐশি ও সীমান্তের মধ্যে ভালোবাসায় তৃতীয় কোন মেয়ে চলে আসায় ভেজাল হয়ে গিয়েছিল এজন্য এ আত্মহত্যা। শুলপুর গির্জার সিস্টার আাশা বলেন হয়তো স্বামী-স্ত্রীর সাথে কোন বিষয়ে হয়তো কিছু হয়েছিল এ জন্য রাগে ঐশি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐশিদের গ্রামের এক ছেলে বলেন ঐশির ন্বামী সীমান্ত বটলেরু ঢাকায় অন্য এক মেয়ের সাথে সম্পর্কে জরিয়ে পড়ায় তা ঐশি জেনে গেছে। গত শুক্রবার সকাল ১০ থেকে ১১টায় ঐশি ও সীমান্ত ফোনে ঝগরা করেছে। ঝগরায় এমন কিছু কথা হয়েছে যার ফলে হয়তো ঐশি আত্মহত্যা করেছে। নিহতের স্বামী সীমান্ত বটরেরু বলেন, ঐশির সাথে আমার প্রায় দের বছর আগে বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসতাম। গত শুক্রবার বেলা ১১টার সময়েও ঐশির সাধু আন্তুনির অনুষ্ঠানে যাওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। আমি বঝুতে পারলামনা কেন ঐশি ফাঁসি দিল।
সাংবাদিকরা মোবাইল ফোনে সীমান্তকে থানায় কেন অভিযোগ করলেন না জিজ্ঞেস করলে এ প্রশ্নের জবাবে সীমান্ত কোন কথা বলতে চায়নি।
সিরাজদিখান থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলালউদ্দিন বলেন,সিরাজদিখান থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন না থাকায় দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জনতার আলো/শনিবার, ২১ জুলাই ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.