জনতার আলো, মো. লিপসন আহমেদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জে ভোটার তালিকায় ২ লাখ ১৫ হাজার ৬৪৮ জন নুতন ভোটার যোগ হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই তরুণ। এসব ভোটাররা চান কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হোক। একমাত্র বোরো ফসল অধ্যুষিত অ ল হিসেবে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার মানুষের প্রধান পেশা হলো কৃষিকাজ ও মাছ ধরা। বছরের ৬ থেকে ৮ মাস জলবেষ্টিত থাকায় জনপেদর মানুষেরা বছরের দীর্ঘ সময় বেকার থাকেন। বৈশাখে বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার পর তারা বেকারত্বের অভিশাপে ভোগেন।
জেলার ৫টি আসনের ১১টি উপজেলার মধ্যে শিল্পনগরী ছাতক ছাড়া জগন্নাথপুর, দিরাই, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও সদর উপজেলায় প্রবাসী লোকজন রয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিদেশে গেছেন। তাহিরপুর, সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় চলতি, যাদুকাটা নদীতে বালি পাথর উত্তোলন করে কয়েকে হাজার শ্রমিক জীবীকা নির্বাহ করলেও এখাতে নতুন কর্মসস্থানের কোনও সুযোগ নেই।
সুনামগঞ্জের পাঁচটি আসনে মোট ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮ লাখ ২৩ হাজার ২৬২ জন ও মহিলা ভোটার ৮ লাখ ২৪ হাজার ৩০৪ জন। ১১টি উপজেলার ৫টি আসনে মোট কেন্দ্র ৬৬৮টি। ভোট কক্ষ ৩ হাজার ২৯১টি স্থাপন করা হবে।
সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ইসলামগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ছাত্র আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া অনিশ্চিত। কিন্তু, কারিগরি শিক্ষা থাকলে চাকরি অনেকটাই নিশ্চিত। তাই হাওর এলাকায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।’
জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের আক্তার হোসেন বলেন, ‘হাওর এলাকায় গড়ে তিন থেকে চার মাস কাজ থাকে। বাকি সময় বেকার থাকতে হয়। তাই বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।’ ধর্মপাশা উপজেলার দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের দক্ষিণউড়া গ্রামের সুষেন সরকার বলেন, ‘বৈশাখ মাসে বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার পর হাওরে পানি এসে যায়। এসময় হাওরে স্বল্প মেয়াদে মাছ চাষের ব্যবস্থা করতে পারলে এত মানুষ বেকার থাকতো না।’
তাহিরপুর জয়নাল আবেদীন কলেজের ছাত্রী ঝুমা সরকার বলেন, ‘হাওর এলাকার নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। তারা লেখাপড়া শেষ করে কোনও কাজ পায় না। তাদের জন্য বিশেষ প্রকল্প নেওয়া উচিত।’
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘হাওর এলাকায় কৃষি, মৎস্য ও পর্যটন খাতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। কিন্তু, দীর্ঘ দিনেও এসব খাতের উন্নয়ন না হওয়ায় বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনও সুযোগ তৈরি হয়নি। ফলে বাড়েনি হাওর এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান। আগামী নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মধ্যে কর্মসস্থান সৃষ্টির বিষয়টি বিশেষভাবে প্রাধান্য পাবে।
জনতার আলো/রবিবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৮/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.