জনতার আলো, নিজস্ব প্রতিবেদক: বোরকা পরায় দেশের বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রীরা নিগ্রহের শিকার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলছাত্রীদের বোরকা পরার অধিকার চেয়ে এক রিট আবেদন করা হয়েছে।
রিট আবেদনে দেশের স্কুলগুলোতে স্কুল ইউনিফর্মের ওপরে বোরকা পরিধানে ছাত্রীদেরকে বাধা না দেয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থার নির্দেশনা এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রীদেরকে বোরকা পরিধানে বাধাদানকারী স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করা হয়। দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম ও মোহাম্মদপুরের তাজ জামে মসজিদের খতিব আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আজিজুল্লাহর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহম্মদ আহাসান ও শেখ ওমর শরীফ এই রিট করেন।
“চট্টগ্রামে বোরকা পরায় স্কুলছাত্রী ও অভিভাবক নাজেহাল” শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। রিটে শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদেরকে বিবাদী করা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিট আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী।
রিট আবেদনে বলা হয়, নারী পুরুষে নির্বিশেষে সকলের পর্দা করা ফরজ। সে হিসেবে নারীরা পর্দা করার জন্য বোরকা পরিধান করে থাকেন। কিন্তু দেশের স্কুলগুলোতে বোরকা পরিধানকারী ছাত্রীরা নিগ্রহের শিকার হওয়ায় রিটকারীরা সংক্ষুব্ধ হয়েছেন।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানার মাইজপাড়া মাহমুদুন্নবী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী বোরকা পরায় তাকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে তাকে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেননি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ কাশেম।
পরদিন সেই ছাত্রীর মা বোরকা পরার অনুমতির জন্য গেলে প্রধান শিক্ষক মারমুখী আচরণ করে তাকেও বের দেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। দেশের বিভিন্ন স্কুলে সংঘটিত একই ধরনের আরও কিছু ঘটনা বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় এসেছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রিট আবেদনে বলা হয়, ইসলামসম্মত পোশাক পরিধান করা সকল মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক ও ফরজ। স্কুল ইউনিফর্মের ওপর নিজের পছন্দমতো দ্বীনি পোশাক পরিধান করার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। কেননা বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে সকল নাগরিককে যেকোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার দেয়া হয়েছে এবং সংবিধানের ২ক অনুচ্ছেদে সম্মানিত দ্বীন ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
সুতরাং স্কুল ইউনিফর্মের পাশাপাশি বোরকা পরিধান করতে না দিয়ে স্কুলছাত্রীদের সাংবিধানিক অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ নাগরিক ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে রিট আবেদনকারীগণ এসব ঘটনায় সংক্ষুব্ধ। তাই তারা রিট করেছেন।
জনতার আলো/শনিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯/শোভন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.