মো: প্রান্ত পারভেজ তালুকদার: হঠাৎ করেই গতকাল রাত ৯ টার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পাতায় পাতায় দেশের লাখো ইভ্যালি ভক্তরা লাইভে এসে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়ে পোস্ট করছেন। একজন লিখেছেন, (আগামীকাল রাসেল ভাইয়ের মুক্তি নাহলে আমি লাইভে এসে আত্মহত্যা করতে পারি। ইয়া আল্লাহ total 9 lack r nity partysina khoda)। আরেকজন ভক্ত লিখেছেন, (আজ সকালে রাসেল ভাই’র যাবেন না হলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না)। অন্য আরেকজন লিখেছেন, (যদি রাত পোহালে শোনা যেত রাসেল ভাই এর শামীমা ভাবী জেলে নাই..)। অন্য আরেকটি আইডি থেকে লিখেছেন, (ইনশাআল্লাহ আশা করি আগামী কাল রাসেল সাহেব মুক্তি পাবে)। আর একজন লিখেছেন, (কালকে রাসেল ভাই’র জামিন না হলে লাইভে এসে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। বিশাল দেনা নিয়ে ধুকে ধুকে মরার চেয়ে একবারে চলে যাওয়া ভালো)। এরকম ইভ্যালির প্রতি লাখো মানুষের ভালোবাসা আর আত্মহত্যার হুমকিতে ভাসছে ফেসবুক দুনিয়া।
“ইভ্যালির গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কিছু কথা ও দাবি” যা তাদের নিজেদের ভাষায় তুলে ধরা হলো”
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই গ্রাহক ও সেলাররা পথে নেমে এসেছে তাদের মুক্তির দাবিতে। এমনকি শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১) দুপুর তিনটায় শাহবাগ চত্ত্বরে তাদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশেরও করেন গ্রাহক ও বাংলাদেশের ই-কমার্স মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বেকমা) এর পক্ষ থেকে। তারা গত রাতেও ইভ্যালির অফিসের সামনে সংবাদ সম্মেলন সহ ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিলও করেছে।
মার্চেন্ট ও গ্রাহকদের দাবি, আমরা ইভ্যালির গ্রাহক যারা রয়েছি তারা কখনোই ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তার চাইনা। তাদেরকে সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে চাই। কারণ আমরা গরিবের সন্তান যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা ঋণ করে একটু সচ্ছল হওয়ার আশায় ইভ্যালিতে ব্যবসা করার আশায় টাকা দিয়েছিলাম, আজ তারা গ্রেফতার হওয়ায় সেই টাকা না পাওয়ার অনিশ্চয়তায় ভুগছি। টাকাগুলি না পেলে কোথা থেকে সেই ঋণ পরিষদ করবো। আমাদের যে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ রইল না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে একটাই দাবি ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যান কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে তাদের কে ছেড়ে দেয়া হোক। না হলে আমাদের সকলের পাওনা টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হোক। আর টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা না পেলে হয়তো সারা দেশে কয়েক লক্ষ গ্রাহক এই টাকার জন্য পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এমনকি আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে পারে। তাদের কে ছেড়ে না দিলে আমরা গ্রাহক ও মার্চেন্টরা মিলে নিজেদের অর্থায়নে তার জামিনের ব্যবস্থা করব। তাই বলি গ্রাহকদের কথা একটু ভাবুন আর সঠিক সমাধান দিন প্লিজ।
ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যানের গ্রেফতারের কথা শুনে বাসার সামনে, রাতে অফিসের সামনে ও শাহবাগে জড়ো হওয়া গ্রাহক ও মার্চেন্টরা এভাবেই আর্তনাদ করে কথাগুলো বলতেছিল কান্না জড়িত কণ্ঠে।
“ইভ্যালি ভক্ত ও জনতার মতামত”
জনতার মতামতের উপর ভিত্তি করে ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যান কে গ্রাহক ও মার্চেন্ট দের সকল পাওনা টাকা পরিশোধ করার শর্তসাপেক্ষে আজ মুক্তি দেওয়া উচিত ইভ্যালি ভক্তরা। না হলে গত দুই দিন আগে ইভ্যালির অফিসের সামনে মিডিয়া ও সোশ্যাল সাইটে একজন গ্রাহক একটি বক্তব্য দিয়েছেন, ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যান কে ছেড়ে দিয়ে পুনরায় ব্যবসা করার সুযোগ না দিলে গ্রাহক যারা টাকা পাবে তারা হয়তো টাকা না-পাওয়ার হতাশায় গণহারে সুইসাইড করতে বাধ্য হবে। হঠাৎ করে গতকাল রাত ৯ টার পর থেকে সেরকমই আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে লাখো পোস্ট ভাসছে ফেসবুকে। তাই সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মনে করেন, দেশে গণহারে সুইসাইডের মত এরকম একটি বড় ধরনের নেক্কারজনক দুর্ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিটি মহলের ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। না হলে এই ঘটনাকে কেন্দ্রকরে বাংলাদেশের বিগত দিনের সকল অর্জন বহির্বিশ্বের কাছে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
আর ইভ্যালির বিরুদ্ধে অপপ্রচার না ছড়িয়ে এই কোম্পানিটির পক্ষে প্রচার করে তাদেরকে আগামীতে পথ চলতে উৎসাহিত করুন। কারণ ইভ্যালি আসার পর থেকে দেশের অসংখ্য বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশ থেকে অনেকটাই দূর হয়েছে বেকারত্ব নামক অভিশাপ। তাদের পণ্য পেয়ে অসংখ্য ব্যবসায়ীদের মুখেও ফুটেছে সুখের হাসি। আপনাদের এই অপপ্রচার ছড়ানোর কারনে কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়া অসংখ্য যুবকদের চোখে আবারও অন্ধকারের ছাপ পড়তে বসেছে। তাই এই প্রতিষ্ঠানটিকে অপপ্রচার করে অন্ধকারে ঠেলে না দিয়ে সরকারি নজরদারির মধ্যে রেখে ও গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার স্বার্থে দেশের মাটিতে আরো বৃহৎ ভাবে তাদের কার্যক্রম চালাতে সহযোগিতা করুন। এই ইভ্যালি নামের প্রতিষ্ঠানটি দেশের মাটিতে বসে একদিন বিশ্বের নামিদামি ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের হারমানিয়ে নাম্বার ওয়ান প্রতিষ্ঠান হয়ে যেতে আর বেশিদিন সময় লাগবে না। এটাও আমাদের জেনে রাখা দরকার একটি প্রতিষ্ঠান সবসময় একভাবে চলতে পারে না, একটু-আধটু এ দিক সে দিক হতেই পারে তাই বলে যে দেশের মাটি থেকে পালিয়ে যাবে, গ্রাহকের টাকা ফেরত দিবে না বা প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসেছে না জেনে এরকম কথা বলে জনসাধারণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো এটাও তো ঠিক নয়। তাই এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার না ছরিয়ে তাদের ভাল দিকগুলি প্রচার করি আর তাদেরকে দেশের মাটিতে টিকে থেকে আরো বেশি কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে উৎসাহিত করি। লেখক, মো: প্রান্ত পারভেজ তালুকদার রিপোর্টার, কলকাতা টিভি সম্পাদক ও প্রকাশক, ‘জনতার আলো’ ডট কম।
জনতার আলো/ মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.