জনতার আলো, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাইবেরিয়া থেকে রাশিয়ার মস্কোগামী যাত্রীবাহী একটি বিমান ছিনতাই করেছে সশস্ত্র এক যাত্রী। মঙ্গলবার রাশিয়ার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। অ্যারোফ্লোট এয়ারলাইন্সের ওই বিমানে সাত ক্রু-সহ ৭৬ জন আরোহী ছিলেন।
ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মিরর এক প্রতিবেদনে বলছে, অ্যারোফ্লোট এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি সার্বেরিয়া থেকে মস্কোর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছি। যাত্রা শুরুর পর এক যাত্রী পিস্তলের মুখে পাইলটকে জিম্মি করে বিমানটি আফগানিস্তানে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানা।
কিন্তু পাইলট আফগানিস্তানে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই জানিয়ে অস্ত্রধারী ওই যাত্রীকে বুঝানোর চেষ্টা করেন। পরে বিমানটির জ্বালানি নেয়ার জন্য রাশিয়ার খান্তি-মানসিইস্ক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে চান পাইলট; এতে রাজি হন ওই অস্ত্রধারী।
টেলিভিশন চ্যানেল টিভি-৩৬০’র প্রচারিত এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানটি খান্তিতে অবতরণ করছে। পরে সশস্ত্র কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে গিয়ে বিমান থেকে ওই যাত্রীকে আটক করেন। ছিনতাইকারীকে ধোকা দিতে রুশ নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে বিমানটিতে উঠেন।
বিমানে উঠে ওই ছিনতাইকারীর কাছে থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। পরে ছিনতাইকারীকে বিমান থেকে নামিয়ে আনার আগে তার কাছে আর কোনো অস্ত্র আছে কি-না তা জানতে শরীর তল্লাশি করেন। ওই ছিনতাইকারীকে বিমানের পেছনে নিয়ে আসা হলে অন্য আরোহীরা নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও পাইলটের সাহসী সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ম্যাশ অনলাইন নিউজের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানের ভেতরে হঠাৎ এক মুখোশ পরিহিত যাত্রী পকেট থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে পাইলটকে জিম্মি করেন। পরে পাইলট ছিনতাইকারীকে বুঝিয়ে বিমানটি জ্বালানি নেয়ার জন্য রাশিয়ার ওই শহরে নেয়ার কথা জানান।
এতে রাজি হয়ে যায় ছিনতাইকারী। এর মাঝেই পাইলটের এই কথোপকথন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে যায়। তারা বিমানের পাইলটের জিম্মিদশার তথ্য জানালে দ্রুত বিমানবন্দরে পৌঁছান দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। পরে কোনো ধরনের হতাহত ছাড়াই রুশ এই বিমানের জিম্মিদশার অবসান ঘটে।
তবে বিমানের জিম্মিদশার ব্যাপারে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি অ্যারোফ্লোট। রুশ এই বিমানসংস্থার এক প্রতিনিধি বলেছেন, আমরা আপনাকে রুশ জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিচ্ছি।
পরে ওই বিমানের আরোহীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য অপর একটি বিমান মস্কো থেকে পাঠানো হয়। ডেইলি মিরর বলছে, বিমানটি সার্বেরিয়ার সারগাত শহর থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করেছিল। মস্কোর শেরেমেটিয়েভো বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল ৪টা ২০ মিনিটে।
বিমান ছিনতাইয়ের এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে রাশিয়ার জাতীয় তদন্ত কমিটি। সশস্ত্র ওই যাত্রীকে আটক করেছে রুশ নিরাপত্তাবাহিনী। ছিনতাই নাটকের সব দিক বিবেচনা করে তদন্ত এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছে মস্কো।
বিমানের ভেতরে পাইলটকে জিম্মি করার ভিডিও দেখুন এই লিঙ্কে…
জনতার আলো/মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারি ২০১৯/শাহানা
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.