অপরাধ

দিয়াবাড়িতে ফুডকার্টের আড়ালে মাসে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি! প্রশাসন নিরব, বেপরোয়া চক্রটি

  admin ১১ আগস্ট ২০২৫ , ৪:১৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

মাহমুদুল হাসান : ঢাকার দিয়াবাড়িতে অবৈধ ফুডকার্ট বসিয়ে চাঁদাবাজি করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিক দলের নাম ভাঙিয়ে কতিথ নেতারা মাত্র পাঁচ মাসে আদায় করেছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। চাঁদাবাজির এই চক্রের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের একাধিক অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন ও রাজউক রয়েছে রহস্যজনক নীরবতায়।রাজউকের জমিতে অনুমতি ছাড়াই মেট্রো সেন্টারের পাশে গড়ে উঠেছে এই ‘নতুন ফুডকার্ট বাজার’।

স্থানীয়দের ভাষ্য, পুরাতন ‘বউবাজার’ উচ্ছেদের পর এই নতুন বাজার গড়ে তুলেন চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য রাসেল, দুলাল ও জহির। শুরুর দিকে ৮-১০টি দোকান দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে দোকানের সংখ্যা ৪২টি ছাড়িয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন দোকান ভাড়া: ২০০ টাকা টাকা। লাইট চার্জ: প্রতিদিন ৩০ টাকা একটি দোকানে তিনটি করে লাইট “অর্থাৎ গড়ে প্রতি দোকান থেকে ৯০ টাকা”।পানি ব্যবহারে চাঁদা: প্রতিদিন ৫০ টাকা। মোট প্রতিদিনের চাঁদা: ৩৪০ টাকা। ৪২টি দোকানে দৈনিক আয়: ১৪,২৮০ টাকা।মাসিক মোট চাঁদা: প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা।তাছাড়া, গত জুন মাসে প্রতিটি দোকান থেকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে, মোট ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

বাজারে বিনোদনের জন্য নৌকা, বাচ্চাদের জন্য স্লিপার ও একটা ড্রাগন ট্রেন থেকে মাসে চাঁদা ১ এক লক্ষ টাকার বেশী তোলা হয়। দোকান ভাড়া ভিত্তিক: ২৯,৯৮,৮০০, অগ্রিম: ১০,৫০,০০০,বিনোদন: ৭,০০,০০০ মোট = ৪৭,৪৮,৮০০ চাঁদা তোলা হয়। স্থানীয়দের দাবি, চক্রের মূল হোতা জহির অতীতে আওয়ামী লীগের দোসর রুস্তমের সঙ্গে চাঁদাবাজি করতেন। রুস্তমকে একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তার উত্তরসূরি হিসেবে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন জহির, রাসেল ও দুলাল।

এদিকে, বিএনপির শ্রমিক দলের নাম ভাঙিয়ে এ চক্র চাঁদাবাজি চালিয়ে যাওয়ায় দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিএনপি ইতোমধ্যে হাইব্রিড ও অসাধু নেতাদের বহিষ্কার করলেও এই বাজার-ভিত্তিক চাঁদাবাজি থেমে নেই।বাজারটি মূলত সন্ধ্যার পর জমে ওঠে, আর এই সময়টাতেই কিছু তরুণ-তরুণী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আশপাশের নার্সারির আড়ালে এসব কাজ চলে প্রশাসনের নাকের ডগায়।স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, এতবড় চাঁদাবাজি, অবৈধ বাজার গঠন ও অনৈতিক কার্যকলাপ চললেও রাজউক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন চুপচাপ? রাজউকের নীরবতা ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন্দ্র করে গুঞ্জন উঠেছে, ‘কোনো স্বার্থে কি এই নীরবতা?’বিশ্লেষকরা বলছেন, চাঁদাবাজির এই সংস্কৃতি বিএনপির জন্য ভবিষ্যতে ভয়াবহ হুমকি তৈরি করতে পারে।

দলের জনপ্রিয়তা, শৃঙ্খলা ও আদর্শ রক্ষায় এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ‘স্বৈরাচারের দোসররা’ দলের ভেতরেই বিভাজন ও দুর্নীতির বিষবাষ্প ছড়াবে।দিয়াবাড়ির এই অবৈধ বাজার ও চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, রাজউক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা।

আরও খবর:

Sponsered content