দেশজুড়ে

আকাশছোঁয়া অহংকার! তারকাখ্যাতির মোহে কি শিকড় ভুলেছেন কাঠমিস্ত্রি রিপন?

  admin ১৫ অক্টোবর ২০২৫ , ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রান্ত পারভেজ : কাঠমিস্ত্রি থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয় তারকা, এই উত্থান কাহিনি কিশোরগঞ্জের অজপাড়া গাঁয়ের সহজ সরল রিপন মিয়ার। কিন্তু সেই সরলতার আড়ালে এখন উঁকি দিচ্ছে দাম্ভিকতা আর অহংকারের এক কুৎসিত প্রতিচ্ছবি। যে ভালোবাসার জোরে তিনি সেলিব্রেটি হয়েছেন, সেই ভালোবাসাকেই যেন এখন তিনি তুচ্ছ করে দেখছেন। বিশেষ করে নিজের জন্মদাতা বাবা-মায়ের প্রতি তার অবহেলা এবং এক স্যাটেলাইট টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

​জানা যায়, অতি সাধারণ জীবন থেকে উঠে আসা রিপন মিয়া তার সাবলীল ভিডিও কন্টেন্টের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন। সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তিনি অর্জন করেছেন অর্থ-বিত্ত, ঘুরেছেন বিভিন্ন দেশ। কিন্তু এই খ্যাতির মোহে পড়ে তিনি ভুলে গেছেন তার শেকড় ও যাদেরকে মানুষ হিসেবে সম্মান করা উচিত, সেই বাবা-মাকে।

​একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা যায়, রিপন মিয়া এখন স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে নিয়ে নতুন পরিপাটি বাড়িতে বসবাস করলেও তার বাবা-মা এখনো থাকেন পুরনো ভাঙা ঘরে। ছেলের নতুন জীবনযাত্রায় বাবা-মায়ের প্রতি ন্যূনতম দেখভাল না করার অভিযোগও করেন তারা। সম্প্রতি, এই বিষয়টি নিয়ে একটি সুরামধন্য স্যাটেলাইট টেলিভিশনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক রিপন মিয়ার মুখোমুখি হলে, তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে যান এবং চরম দাম্ভিকতা দেখান। এমনকি স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকার কথা অস্বীকার করে দাবি করেন, তিনি বিয়ে করেননি। যাকে তার স্ত্রী বলা হচ্ছে, তিনি আসলে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী। কিন্তু মা-বাবা বলছেন পারিবারিকভাবেই বিয়ে করানো হয়েছিল এই রিপন মিয়াকে। তাহলে কেনই বা স্ত্রী সন্তানদের কথা মিথ্যা বলছেন তিনি। আসলে এর পেছনের রহস্যই বা কি? এখানেই শেষ নয়, সাংবাদিকের এই জিজ্ঞাসাবাদের পর রিপন মিয়া তার ভেরিফায়েড পেজে সেই সাংবাদিককে নিয়ে মিথ্যা এবং বানোয়াট লেখালেখি করেন। যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। এবং রিপনকে যারা ভালোবেসেছেন, তাদের অনেকেই তার এমন ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছন। আবার কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় রিপনের অন্ধ ভক্তরা সাংবাদিকদের নিয়েও কটুক্তি করছেন।

​রিপন মিয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, হঠাৎ পাওয়া জনপ্রিয়তা আর টাকার নেশায় তিনি এতটাই মত্ত যে এখন আর তিনি মাটির মানুষ নন। সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিতে হলেও তিনি ম্যানেজারকে দেখিয়ে দেন। এমনকি তার সাথে কথা বলতে হলেও নাকি ম্যানেজারের অনুমতি নিতে হবে—এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণই এখন তার নিত্যদিনের সঙ্গী।

​একসময়ের সহজ সরল সেই কাঠমিস্ত্রি রিপন আজ যেন এক অন্য মানুষ। খ্যাতির শিখরে উঠে তিনি ভুলে গেছেন তার অতীত এবং সেই সব মানুষকে, যারা তাকে ভালোবাসা দিয়ে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। তার এমন আচরণ সমাজের জন্য এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখে গেল, জনপ্রিয়তা কি আসলেই মানুষকে এতটা বদলে দিতে পারে যে সে নিজের বাবা-মাকেও ভুলে যায়? আবার সমাজের সম্মানী ব্যক্তিদের কেউ অবহেলা করে? সহজ-সরল রিপন মিয়ার এই ‘সেলিব্রেটি’ হয়ে ওঠার পর মাটি থেকে পা সরে যাওয়ার ঘটনা এখন সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সবাই এখন অপেক্ষা করছে এই দাম্ভিকতার ফলস্বরূপ তার কেরিয়ার কোন দিকে মোড় নেয়।

আরও খবর:

Sponsered content