জাতীয়

বিপদেই মানবতার দৃষ্টান্ত: একটি সিদ্ধান্তেই মানবতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন অন্তর্বর্তী সরকার

  admin ২৬ অক্টোবর ২০২৫ , ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রান্ত পারভেজ : ​রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল লাইনের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার আবুল কালাম (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মানবিক পদক্ষেপ এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সরকার নিহত পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিকে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দিয়েছে।

​রবিবার (২৬ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মেট্রোরেলের পিলার থেকে ভারী বিয়ারিং প্যাডটি নিচে ফুটপাতের ওপর পড়ে গেলে পথচারী আবুল কালাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং আরও কয়েকজন আহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

​দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সড়ক ও রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান নিহত পরিবারের প্রতি সরকারের এই মানবিক সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের সব দায়-দায়িত্ব মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবে এবং পরিবারে কর্মক্ষম সদস্য থাকলে তাকে মেট্রোরেলে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, আহতদের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হবে। এই ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে, যা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।

​সরকারের এমন দ্রুত ও মানবিক পদক্ষেপ দেশে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার যে মানবতা ও জবাবদিহিতার নীতি গ্রহণ করেছে, এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।

​বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া তো দূরের কথা, উল্টো নিহত বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা প্রায়শই বিচার বা প্রতিকার পেতেন না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সরকারের দলীয় বা প্রশাসনিক বাহিনীর দ্বারা খুন ও গুমের শিকার হলেও বিচারের পথ রুদ্ধ ছিল। ফলে সাধারণ মানুষের প্রতি সরকারের এমন দায়বদ্ধতা ছিল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।

​বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি বিনয়ী ও দায়িত্বশীল আচরণের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। নাগরিক সমাজ এবং সাধারণ মানুষ সরকারের এমন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তারা প্রত্যাশা করছেন, আগামীতে যারা সরকার গঠন করবেন, তারাও একইভাবে সাধারণ মানুষের প্রতি বিনয়ী হবেন এবং মানবিকতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন।

​এই দুর্ঘটনার মাধ্যমে একদিকে যেমন মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি অন্যদিকে সরকারের মানবিক সাড়া ভবিষ্যতের জন্য এক নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিয়েছে। এভাবেই আগামীতে ফিরে আসুক মানবতা, দূর হোক বিচারহীনতা। জনগণের প্রত্যাশা, এই মানবতা ও বিচারহীনতা দূর করার প্রচেষ্টা যেন আগামীতেও অব্যাহত থাকে, আর বাংলাদেশ গড়ে ওঠে শান্তি ও সমৃদ্ধিতে।

আরও খবর:

Sponsered content