নওগাঁর মান্দায় গোপনে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিন বিক্রয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রবিবার (২৬ মে) স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে জিন্নাতুন নেছা নামে একজন মহিলা ইউ’পি সদস্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে,গত বছর মান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের সময় ওই স্থানে থাকা পুরাতন ভবনটি ভাঙ্গার ফলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষের সংকট নিরসনের জন্য বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লকের দক্ষিণ পার্শ্বে ঢেউটিনের বেড়া ও ছাউনী দিয়ে পাঠ দানের জন্য ৩টি শ্রেণি কক্ষ তৈরী করা হয়। আনুমানিক তিন-চার মাস আগে রুম ৩টি ভেঙ্গে সরকারী নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে নিজ স্বেচ্ছাচারিতায় ও অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার একজন ভা ব্যাবসায়ী মামুন ওরফে মামুন টেপা’র নিকট ১৫০ পিস টিন বিক্রয় করা হয়। যা সরকারী নীতি বহিঃর্ভূত।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরুচি রানী হাওলাদার, সহকারী শিক্ষক খায়রুল আলম, দপ্তরী সাইফুল টিন গুলো বিক্রয় করেন। শিক্ষা অফিসারকে না জানিয়ে সরকারী প্রতিষ্ঠানের কোন মালামাল বিক্রয় নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এ ধরনের কাজ করেন। এরপর স্থানীয়রা বিষয়টি জেনে যাওয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেখানোর জন্য গত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিদ্যালয়ের দপ্তরী সাইফুল একটি ভ্যানে করে বেশ কিছু ঢেউটিন বিদ্যালয়ে নিয়ে আসার পর সেগুলো রেখে দ্রুত গেটে তালা মেরে পালিয়ে যায়। এরপর অবাক নামে আরেকজন ইউ’পি সদস্যকে বিষয়টি জানালে তিনিও রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে অত্র এলাকাজুড়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরুচি রানী হাওলাদার বলেন, গোপনে টিন বিক্রয়ের বিষয়ে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। তার দাবি যে,অত্র বিদ্যালয়ের দু’জন সহকারী শিক্ষকের মতবিরোধ এবং একজন দাতা সদস্যকে অপমান-অপদস্থ করার বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি কু-চক্রী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গোপনে টিন বিক্রয়ের এসব প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এছাড়াও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। যা সঠিক নয়।
মান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউসুফ আলী মিঞা (শামীম) বলেন, নিলামের মাধ্যমে পরিত্যাক্ত অস্থায়ী টিনসেড ঘরের টিন বিক্রয়ের জন্য রেজুলেশন করা আছে। অথচ, অত্র বিদ্যালয়ের দু’জন সহকারী শিক্ষকের মতবিরোধের কারণে ব্যাক্তি আক্রোশ থেকে গোপনে টিন বিক্রয়ের এসব প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।
মান্দা উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মামুনুর রশিদ বলেন, সরকারী নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে গোপনে বিদ্যালয়ের টিন বিক্রয় করার বিষয়টি মোটেও কাম্য নয়। যারা এর সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
মান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার শামসুজ্জামান বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে,এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা করা হবে।