হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ১০নং ছাতিয়াইন ইউপির "ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্নীতির মহা উৎসবের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে "।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর জানতে সরজমিনে অনুসন্ধানে গেলে ওই স্কুল এন্ড কলেজের দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসে। জানা যায়, ঐ স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক দীপক কান্তি
রায় সহকারী শিক্ষকসহ আরো অন্যান্য শিক্ষক এবং বেশ কিছু লোক মিলে সচেতন মহলের ব্যক্তিসহ প্রশাসনের চোখে আঙ্গুল দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করে আসছে।অনুসন্ধান কালে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ নিজেকে স্বচ্ছতার দাবিতে প্রধান শিক্ষক
হয়েছেন দাবি করেন। বার বার নিজেকে ধোঁয়া তুলসীপাতা বানানো আপ্রান চেষ্টা করেন৷ কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় স্কুল এন্ড কলেজের উন্নয়ন কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে অনিয়মের মহা তান্ডব। স্কুলের উন্নয়ন মূলক কাজে মালামাল ক্রয় করতে যাতায়াত যেখানে ৫৫ টাকা, সেখানে ৪ জনের যাতায়াত ও খাবরের বিল ভাউচারে দেখানো হয়েছে ২১শ টাকা। একই ভাউচারে মাত্র ৫ দিনের মাথায় ৩ জনের যাতায়াত ও খাবারের বিল দেখানো হয়েছে ১৪শ টাকা। আশ্চর্য্যের বিষয় হলো, যে হোটেলে ১৮ তারিখ খাবার খেয়েছে ঐ হোটেলে আবার ২৩ তারিখেই খেয়েছেন। দুই বারে খাবার ও যাতায়াতের খরচ তুলেছেন হোটেলের এক মেমোতে ৩৫০০ টাকা। যা কোন হোটেল কর্তৃপক্ষ কখনোই করার কথা নয়।
এছাড়া মালামাল ক্রয়ের বিল ভাউচারে আকাশ পাতাল অনিয়ম রয়েছে। এই বিষয় গুলো নিয়ে প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ এর সাথে কথা বললে তিনি অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, যা যা হয়েছে কোথাও কোন অনিয়ম হয়নি। নিজেকে স্বচ্ছ এবং খুবই ভাল মানুষ বলে দাবি করেন। কিন্তুক অনুসন্ধানে আসছে ভিন্ন রুপ। সারা দেহে ব্যথা ওষুধ দেবো কোথা ? স্কুলের উন্নয়ন, মসজিদ নির্মাণ, ছাত্র ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন, কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষকদের কে ২৬শে মার্চে বিদায় দেওয়া, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য, স্কুল ফান্ড থেকে টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ, অন্যকে ধার দেওয়া, মালামাল ক্রয় করার ক্ষেত্রে ব্লাংক বিল ভাউচার আনা, স্কুলের পুকুর, গাছ অকশনে বানিজ্য, নিজ রাজ্যের অপরাধের বিষয়ে কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে ঐ শিক্ষক কে কৌশলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া, শিক্ষকদের চাকুরির সময় শেষ হওয়ার আগেই বিদায় দেওয়া, শতবর্ষ ফান্ড বানিজ্য, ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে নিজের জন্য মোবাইল ক্রয়সহ দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড় জমে তুলেছে।
এছাড়াও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়সহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক বা কোন ব্যক্তি মুখ খুলতে সাহস পায়না হয়রানির শিকার হবে বলে।
প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ঐ স্কুলে যোগদান করেন ২০শে অক্টোবর ২০১০ইং তারিখে। যোগদানের পর থেকে অদ্যবদি তিনি প্রায় এক কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন বলে নিজ কন্ঠে স্বীকার করেন। কিন্তুক প্রতিটি কাজের মধ্যেই রয়েছে দুর্নীতির মহা উৎসব। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে সাথে রয়েছেন সহকারী শিক্ষক দ্বীপক কান্তি রায়।
এই বিষয় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ শামছু মিয়া বলেন, কোন অনিয়মের প্রমান পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফয়সাল জানান, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
এই অনিয়মের ফিরিস্তি ধারাবাহিক ভাবে ১০ পর্বে তুলে ধরা হবে.....