ঢাকা, শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই তৈরী হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই: দেখার কেউ নেই

নাদিম আহমেদ অনিক, স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ, ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম

নওগাঁয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই তৈরী হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই: দেখার কেউ নেই
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভেজাল লাচ্ছা সেমাই তৈরির করছে নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের তেতুলিয়া বাজারে অবস্থিত ' নূর নেহা লাচ্ছা সেমাই ' নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

সংবাদ সংগ্রহে প্রতিষ্ঠানটির কারখানায় সংবাদকর্মীরা প্রবেশ করলে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারের পাশাপাশি মালিক সাংবাদিককে মুঠোফোনে বাঁধা ও নানান হুমকি-ধামকী প্রদান এর পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ শেষে সংবাদকর্মীদের ফেরার পথে ৩-৪টি মোটরসাইকেল যোগে পথরোধ করে প্রতিবেদককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন অজ্ঞাত ৬-৭ ব্যাক্তি।

পরবর্তীতে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে ১।মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক (ফারুক) ও তার ম্যানেজার সহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এই সংবাদটির প্রতিবেদক নাদিম আহমেদ অনিক।

সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানায় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রং ও ঝুঁকিপূর্ণ উপকরণ দিয়ে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। লাচ্ছার জন্য প্রস্তুতকৃত উন্মুক্ত ময়দারর খামিরে মাছিদের আনাগোনা। ক্যামেরায় ধরা পরে কর্মরত কর্মীরা ধুমপানের পাশাপাশি নিম্নমানের পাম তেলে ভেজে প্রস্তুত করছে লাচ্ছা। এদিকে প্যাকেটের মোড়কে ব্যাবহৃত বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নাং (বিডিএস ১৬২০) আবার নওগাঁ সদর উপজেলার মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তি নিজের ' লাকী লাচ্ছা সেমাই' এর বিএসটিআই নাং বলে দাবী করেন।এছাড়াও এই কারখানায় নেই কোন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, যার কারণে কারখানার পরিবেশটাও নোংরা।
আরও চোখে মিলে,  কারখানায় নিম্নমানের পাম অয়েল ও ডালডা দিয়ে তৈরি করছে এসব সেমাই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে তৈরি করা সেমাই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য চিকিৎসকদের। 

স্থানীয়রা বলছেন, ঈদ সামনে রেখে তেতুলিয়া বাজারে ' নুর নেহা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে ' বিস্কুটের কাজ বন্ধ রেখে গড়ে তুলেছেন লাচ্ছা সেমাইয়ের কারখানা। মাঝেমধ্যেই ভ্রাম্যমান আদাল এসে জরিমানা করলেও থেমে নেই তাদের কার্যক্রম।
এদিকে কারখানাটির মালিক মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক (ফারুক) ইসলামী আন্দোলন দলের নেতা হওয়ায় নিজের প্রভাব খাটিয়ে  অধিক মুনাফা পাওয়ার আশায় ভেজাল পন্য তৈরি করেন। 

তেতুলিয়া বাজারের স্থানীয় (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এক দোকানদার বলেন, প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে ও তদারকির অভাবে ভেজাল সেমাই তৈরির করছেন ফারুক’ এই কারখানার  কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া উচিত তা না হলে এই ভেজাল লাচ্চাসেমাই খেয়ে শিশু বৃদ্ধসহ সকলেই অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে কারখানাটির মালিক মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক (ফারুক) এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি নিজেকে ইসলামী আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার কারখানায় মাঝেমধ্যেই ভ্রাম্যমান আদালত আসে তারা এসে ২.৪.৫ হাজার টাকা জরিমানা করে চলে যায় আমার কিছুই করতে পারে না। আমি কিভাবে ব্যবসা করছি এটা আমার বিষয় আপনাদের সমস্যা কি আপনারা থাকেন আমার লোকজন যাচ্ছে আপনার কি করতে আমার কারখানায় আসছেন সেটা আমি দেখছি।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জানান, পচা ডিম, অ্যানিমেল চর্বি এবং কৃত্রিম ঘি ও সুগন্ধি মিশ্রিত সেমাই তৈরি যাতে না হয়, সে জন্য কারখানাগুলোতে নজরদারি রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে এসব ভেজাল কারখানায় নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং আমরা এই বিষয়ে জেনেছি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।